ব্যাটসম্যানদের দিকে তাকিয়ে বরিশাল বুলস
দুই বছর বিরতির পর আবার শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় আসর। ছয় দলের এই হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে শামিল বরিশাল। তবে পাল্টেছে নাম। পাল্টেছে মালিকানা। এক্সিওম টেকনোলজিসের মালিকানাধীন বরিশালের নাম হয়েছে বরিশাল বুলস।
ব্যাট হাতে খুন করা ক্রিকেটারদের মাঝে সবার আগে নাম আসবে ক্রিস গেইলের। তার নাম শুনলেই কেপে ওঠে বোলারদের বুক। ছন্দে থাকলে চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছড়িয়ে শুরুতেই চেপে ধরেন প্রতিপক্ষকে। টার্গেট যত বরই হোক, ব্যাটের আঘাতে বলের সুতো খুলে সব টার্গেটকে মামুলি করে দেন এই ভয়ঙ্কর সুন্দর ব্যাটসম্যান। ক্যারাবিয়ান এই দানব ব্যাটসম্যানের হাতে বেদম পিটুনি খেয়ে অনেক বোলারেরই ক্যারিয়ার খুন হয়েছে। এই খুনি ক্রিকেটার গেইল এবার খেলছেন বরিশালের হয়ে, একাই যে ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিতে জানেন।
তার উপর সঙ্গে পাচ্ছেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দেশের সব থেকে ভয়ঙ্কর ক্রিকেটারদের একজন সাব্বির রহমান। নামটা শুনলেই সারা বাংলাদেশের মানুষ এক নির্ভীক ক্রিকেটারের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ম্যাক্সওয়েলের মতো স্লগ ওভার গুলোতে প্রচণ্ড ঝড় তুলতে পারে এই ব্যাটসম্যান। প্লেয়ার বাই চয়েস লটারিতে এই ডানহাতিকে দলে ভিড়িয়েছে বরিশাল বুলস।
টপ অর্ডারে আছেন রনি আর উদীয়মান ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান আরভিন লুইস। খুনে ব্যাটিংয়ে অভ্যস্ত দুজনই। মিডল অর্ডারে জিম্বাবুয়ের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর আছেন। বিশ্বকাপের পর জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়া এই ব্যাটসম্যান নিয়মিত খেলছেন ইংল্যান্ডের ক্যাউন্টিতে।
দলে আছেন লোয়ার-মিডল অর্ডারে দারুণ কার্যকর এক ক্রিকেটার নাদিফ চৌধুরী। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত পারফরমারও তিনি। দলের প্রয়োজনে শেষ দিকে চার-ছক্কার ফুলঝুড়িতে দলকে এনে দিতে পারেন বড় স্কোর। ঘরের ছেলে শাহরিয়ার নাফীসকেও দলে টেনেছে বুলস। গেইলের সঙ্গে ইনিংসের সূচনায় দেখা যেতে পারে তাকেই। বিপিএলের আগের দুটো আসরে খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার।
মিডল অর্ডারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অসাধারণ এক ব্যাটসম্যান। এমনিতে প্রচারের আলোয় আসেন কম। দলে তার ভূমিকা অনেকটা সাইলেন্ট কিলারের মত। নিজের দায়িত্ব পালন করে যান ঠিকেই, তবে অন্যদের তারকাদ্যুতির কাছে বরাবরেই ম্লান পার্শ্বনায়ক হয়ে যাওয়া রিয়াদ। টিম বাংলাদেশে রিয়াদ তাই আনসাং হিরো। আইকনদের লটারিতে এই ডানহাতিকেই পেয়েছে বুলস। দলের নেতৃত্বভারও হয়তো উঠবে তারই হাতে।
মাহমুদউল্লার অফস্পিনটাও বেশ কার্যকর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে। তবে তাইজুল ইসলামের সঙ্গে শিবিরে অফস্পিনার সোহাগ গাজী, লংকান লেগস্পিনার সেকুজে প্রসন্ন আর পাকিস্তানের বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ ওয়াসিম থাকায় সেটার হয়তো খুব প্রয়োজন হবে না। বুঝাই যাচ্ছে এদের সমন্বয়ে স্পিন আক্রমণটা বেশ বৈচিত্র্যময় বুলসের। ইনিংসের শেষের দিকে ব্যাট হাতেও ঝড় তুলতে জানেন তারা।
গতিঝড় তুলতে বুলস শিবিরে ভিড়িয়েছে পাকিস্তানের মোহাম্মদ সামিকে। তার সঙ্গে আছেন আল আমিন হোসেন এবং সাজেদুল ইসলাম। সিমিং অলরাউন্ডার কেভন কুপার তো আছেনই। বিপিএলের আগের দুই আসরেই নিয়মিত খেলার অভিজ্ঞতা আছে ক্যারিবীয় এই ক্রিকেটারের। ব্যাট হাতে বেশ কার্যকর তিনি আর বোলিংয়ে রান দেয়ার ক্ষেত্রে দারুণ হিসেবি। ধুমধারাক্কা ব্যাটিংয়ের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন বোলার সবারই আরাধ্য।
বরিশাল বুলস দল
দেশি : মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (আইকন), সাবি্বর রহমান, আল আমিন হোসেন, সোহাগ গাজী, তাইজুল ইসলাম, শাহরিয়ার নাফীস, মেহেদি মারুফ, নাদিফ চৌধুরী, রনি তালুকদার, মোহাম্মদ শরিফউল্লাহ, সাজেদুল ইসলাম।
বিদেশি : ক্রিস গেইল, কেভন কুপার, আরভিন লুইস, ব্রেন্ডন টেলর, সেকুজে প্রসন্ন, মোহাম্মদ সামি, ইমাদ ওয়াসিম।
আরটি/এমআর/পিআর