আবারো হোয়াইটওয়াশ
প্রাণ আপ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস ও মাহমুদউল্লাহর করা তিনটি অর্ধশত ও মুস্তাফিজের বোলিং তোপে জিম্বাবুয়েকে ৬১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগেই প্রথম দুই ওয়ানডেতে জয় তুলে সিরিজ জিতে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশ করলো টাইগাররা। টানা পঞ্চম সিরিজ জয়ে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় হোয়াইটসওয়াশ এবং জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় হোয়াইটসওয়াশ।
বুধবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রাণ আপ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ২৭৬ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জবাবে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২১৫ রানেই শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।
বাংলাদেশের দেয়া ২৭৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই চাপে পরে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই চামু চিবাভাকে হারায় জিম্বাবুয়ে। মুস্তাফিজুরের বলে বোল্ড হয়ে ফেরে গেছেন সফরকারি দলের এই ওপেনার। সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে মুস্তাফিজের দারুণ এক কাটারে নাসিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার রেগিস চাকাভা। এর পর ক্রেইগ আরভিনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান নাসির হোসেন।
৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরাকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন শেন উইলিয়ামস। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটসম্যান দলের পক্ষে ৮০ রান যোগ করেন। বাংলাদেশের জন্য ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই জুটি ভাঙ্গেন সাব্বির হোসেন। চিগুম্বুরাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন সাব্বির। ৪৭ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৪৫ রান করেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক।
চিগুম্বুরার বিদায়ের পর ওয়ালারকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শেন উইলিয়ামস। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৫৯ রান যোগ করেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে ওয়ালারকে নাসিরের ক্যাচে পরিনত করে বাংলাদেশকে খেলায় ফিরিয়ে আনেন আল-আমিন। ৪০ বলে ৩২ রান করে আউট হন ওয়ালার।
পরের ওভারেই শেন উইলিয়ামসকে সাজঘরমুখি করেন অধিনায়ক মাশরাফি। সাব্বির রহমানের ক্যাচে পরিনত হয়ে সাজঘরে ফেরেন টাইগারদের জন্য হুমকি হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে। আউট হবার আগে ৮৪ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৬৩ রান করেন উইলিয়ামস।এরপর মুসাফিজের বোলিং তোপে পরে জিম্বাবুয়ের আর কোন ব্যাটসম্যান উইকেটে থিতু না পারলে ৪৩ ওভার ৩ বল খেলে ২১৫ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে ৩৪ রানে ৫ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার মুস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের দাপটে জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে ১৪৭ রান সংগ্রহ করে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে ৩০তম ওভারে সিকান্দার রাজার বল এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন ইমরুল। আউট হবার তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক। ৯৫ বলে ৬টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ রান করেন এ ওপেনার।
ইমরুলের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্ট্যাম্পিং হয়েছেন এই ওপেনার। ক্রেমারের বল ব্যাটে লেগে উইকেটরক্ষক চিবাভার হাতে যায়। আর বল পেয়ে উইকেট ভাঙতে কোনো ভুল করেননি উইকেটরক্ষক চাকাভা। আউট হবার আগে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ৩২তম অর্ধশতক। ৭টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ রান করতে বল মোকাবেলা করেন ৯৮টি।
দেশ সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমও ফিরে গেছেন একই রকমভাবে। ম্যালকম ওয়ালারের বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন দেশ সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। আর বল ধরে স্ট্যাম্প ভাঙতে এবারও কোনো ভুল হয়নি উইকেটরক্ষক চামু চাকাভার। আউট হবার আগে ২৫ বলে ৩৮ রান করেন বাংলাদেশের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। মুশফিকের বিদায়ের পর ক্রেমারের বলে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরে যান নবীন তারকা লিটন দাস(১৭)। এরপর দ্রুতই সাজঘরে ফিরে যান নাসির হোসেন (০) ও সাব্বির রহমান (১)।
৪৫তম ওভারের শেষ বলে দ্রুত রান নিতে গিয়ে উইকেটে ফিরে আসার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে তার আগেই জিম্বুইয়ান ফিল্ডার সরাসরি থ্রোতে উইকেট ভাঙ্গার চেষ্টা করেন। কিন্তু তার আগেই উইকেটরক্ষক চাকাভা স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিলে সে যাত্রা রক্ষা পান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪০ বল মোকাবেলা করে ৫টি চার এবং ১টি ছক্কায় ৫২ রানে করেন রিয়াদ। এছাড়া অধিনায়ক মাশরাফি ৩টি চারে ১১ বলে ১৬ রান করে পানিয়াঙ্গারার বলে বোল্ড হন। জিম্বাবুয়ের পক্ষে জংউই এবং ক্রেমার ২টি অরে উইকেট পান যথাক্রমে ৫০ এবং ৫৩ রানে।
আরটি/এমআর