টেস্ট নয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে ফিরতে পারেন সাকিব!
সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে বিসিবি ও লঙ্কান বোর্ডের কথায় পরিষ্কার হয়েছে ২৪ অক্টোবর শুরু দুই দেশের মধ্যকার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তিন ম্যাচের সিরিজ। এই খবর চাউর হওয়ার পর ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকরা নড়েচড়ে বসেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী অক্টোবরেই মাঠে ফিরছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
এর বাইরেও আরেকটি বিষয় নিয়ে আগ্রহী বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকরা। তা হলো আগামী ২৯ অক্টোবর আইসিসির এক বছরের নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হচ্ছেন দেশের ক্রিকেটের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হওয়ার পর কবে থেকে মাঠে ফিরতে পারবেন সাকিব? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন সবাই।
শ্রীলঙ্কায় ২৪ অক্টোবর প্রথম টেস্ট শুরু হয়ে পুরো পাঁচদিন খেলা হলে তা শেষ হবে ২৮ অক্টোবর। দ্বিতীয় টেস্টের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তারপরও ভাবা হচ্ছে, সেটা ২ বা ৩ নভেম্বর শুরু হয়ে যাবে। তাই সাকিব ভক্ত থেকে শুরু করে বাংলাদেশের প্রতিটি সমর্থক তাকিয়ে আছেন, তাহলে তো সাকিব অনায়াসে শাস্তিমুক্ত হয়ে দ্বিতীয় টেস্টই খেলতে পারবেন।
এ বিষয়ে ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। তা ফলাও করে মিডিয়ায় প্রচারও হয়েছে। সব জেনে সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষমান। সবার একটাই কৌতূহলি প্রশ্ন, তাহলে নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেই মাঠে ফিরবেন সাকিব?
বলার অপেক্ষা রাখে না, সাকিবের মত অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে পেতে মুখিয়ে আছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টও। আর তাই শ্রীলঙ্কা সফরের নানা দিক নিয়ে আজ (বুধবার) দুপুরে ক্রিকেট অপারেশন্স, এইচপির সঙ্গে জাতীয় দলের নির্বাচক ও বিসিবি সিইও’র যৌথ সভায় সাকিব ইস্যুতে কথাবার্তা হয়েছে ব্যাপক।
সভা শেষে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান আকরাম খান বলেন, ‘আমরা শ্রীলঙ্কা সফরের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছি। খুব প্রাসঙ্গিকভাবে সাকিব ইস্যুতেও কথা হয়েছে। আমরা খুঁটিয়ে দেখছি সাকিব কবে নাগাদ মাঠে নামতে পারবে।’
আকরাম আরও জানান, ‘আমরা মানে বিসিবি চাইলেই হুট করে ২৯ অক্টোবর সাকিবকে মাঠে নামাতে পারবে না। কারণ আইসিসির বেঁধে দেয়া শর্ত হলো, ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাকিব নিষিদ্ধ। জাতীয় দলের কোন কার্যক্রম, অনুশীলন, টিম মিটিং বা কিছুতেই সে অংশ নিতে পারবে না। ২৯ অক্টোবরের আগপর্যন্ত তাকে সব কিছুর বাইরে থাকতে হবে। আমরা আইসিসি সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করব।’
‘আইসিসির সত্যিকার নিয়ম কী? সাকিব ইস্যুতে আইসিসির শেষ অবস্থান ও বক্তব্য পরিষ্কার জেনে নিয়ে নিজেরা কথা বলব। বোর্ড সভাপতি পাপন ভাই (নাজমুল হাসান পাপন), হেড কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো এবং কোচিং স্টাফদের সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলব। সব কথাবার্তার পর আসলে বলা যাবে সাকিব কবে নাগাদ খেলতে মাঠে নামতে পারবে।’
‘এখন তার ফিটনেস লেভেল দেখতে হবে। সেটা ট্রেইনার ও ফিজিও খুঁটিয়ে দেখবেন। জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলনের ব্যাপার আছে। সেটাও ন্যাশনাল টিমের কোচিং স্টাফরা ভাল বুঝবেন। তাদের মতামতই সেখানে অগ্রাধিকার পাবে। এসব জেনে বুঝে আমরা ঠিক করব সাকিবকে কবে মাঠে নামানো যায়।’
আকরামের শেষ কথা, ‘মানে এটা ঠিক ২৯ অক্টোবর সাকিব নিষেধাজ্ঞা মুক্ত হয়ে যাবে। আইসিসির নিয়মে বলা আছে, এর একদিন আগেও সাকিব জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন বা দলের সঙ্গে মিলিত হতে পারবে না। সেক্ষেত্রে তার দ্বিতীয় টেস্ট খেলা কঠিনই মনে হচ্ছে। তারপরও আমরা সবার সাথে কথা বলে নেই। তারপর সবার মত নিয়ে এবং আইসিসির শেষ অবস্থান জেনে নিয়েই বলা যাবে সাকিব আসলে কবে মাঠে নামতে পারবে?’
তার মানে কী দাঁড়ালো? আইসিসির আগের বেঁধে দেয়া নিয়মে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় দলের সঙ্গী হতে না পারলে, সাকিবের পক্ষে একার ও ব্যক্তিগত অনুশীলন করে দ্বিতীয় টেস্ট খেলার সম্ভাবনা খুব কম। যদিও তার মানের পারফরমারের দলের সঙ্গে থেকে অনুশীলন করা বা না করা খুব একটা পার্থক্য হয় না। সাকিব দলের সঙ্গে না থেকে একা অনুশীলন করেও মাঠে নেমে অনেক কিছু করে ফেলতে পারেন। সে সামর্থ আছে তার। অতীত ইতিহাসও তাই বলে।
তারপরও কোচিং স্টাফ ও টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তিন টেস্টের সিরিজ হলে হয়তো শাস্তিমুক্ত সাকিব তাতে অংশ নিতে পারেন। না হয় টেস্ট সিরিজ শেষে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের সম্ভাবনা রয়েছে, তাতেই মাঠে নামতে পারবেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয়?
এআরবি/এসএএস/পিআর