যে ১০ শর্তে মিললো খেলাধুলার অনুমতি
অবশেষে ক্রীড়াবিদদের মুখে হাসি। দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস ধরে ঘরবন্দী হয়ে থাকা ক্রীড়াবিদদের মাঠে ফেরার অনুমতি দিয়েছে সরকার। এখন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে পারবে ফেডারেশনগুলো।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় খেলা শুরুর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতির অপেক্ষায় ছিলো। সেই অনুমতি পাওয়ার পর সোমবার মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরি সভা করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
সভাশেষে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। আমাদের দেশেও করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। আমরা খেলাধুলা শুরু করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছিলাম। স্বাস্থ্য অধিদফতর ১০টি শর্তে সীমিত আকারে খেলাধুলা আয়োজন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর বিষয়ে মতামত প্রদান করেছে।’
খেলা শুরু করতে সরকারের যে ১০ শর্ত
১। খেলাধুলা শুরুর জন্য মাঠ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর পূর্বে, মাস্ক, গ্লাভস, জীবাণুনাশক এবং নন-কন্ট্যাক্ট ইনফ্রারেড থার্মোমিটার সংরক্ষণ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কাজের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
২। সীমিত আকারে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও খেলাধুলার আয়োজন করা যেতে পারে।
৩। খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট সকলের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ক্যাম্প শুরুর পূর্বে প্রয়োজনে সবার কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা যেতে পারে।
৪। খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণকালীন ক্যাম্পে অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্য সম্মত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। সামাজিক দুরত্ব বজার রেখে খাবার গ্রহণের পর থালা-বাসন পরিস্কার ও জীনাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।
সম্ভব হলে ডিসপোজেবল প্লেট ব্যবহার করতে হবে। ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে হবে। খেলোয়াড়দের ঘুম, বিশ্রাম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে হবে।
৫। খেলা ও প্রশিক্ষণের সময় ব্যক্তিগত পানির বোতল ও তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। ব্যক্তিগত সরঞ্জাম এবং জামাকাপড় নিজস্ব ব্যাগে রাখতে হবে। টিস্যু, রুমাল বা অন্যান্য ব্যবহৃত উপকরণ তাৎক্ষণিকভাবে মুখবন্ধ ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে।
৬। মাঠে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় দর্শকদের সারিবদ্ধভাবে পরস্পর হতে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মাঠে প্রবেশের পর নির্দিষ্ট দূরত্ব (১মিটার) বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি দুইজন দর্শকদের মাঝে এক সিট খালি রাখতে হবে।
৭। খেলার মাঠের প্রবেশ পথে খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং বহিরাগত দর্শনার্থীদের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে যাদের শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশি হবে, তাদের মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
৮। খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক এবং ম্যানেজমেন্ট কমিটির মধ্যে কোভিড-১৯ এর সন্দেহভাজন কোনো রোগী থাকলে তাৎক্ষিণকভাবে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। খেলার মাঠের আবর্জনা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে এবং আবর্জনা সংরক্ষণকারী পাত্র প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
১০। স্টেডিয়ামে আগত সকলকে স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করার জন্য সহজে দৃশ্যমান হয় এমন স্থানে বিলবোর্ড, রেডিও, ভিডিও ও পোস্টারের মাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রচার করার ব্যবস্থা করতে হবে।
আরআই/আইএইচএস/এমএস