শাহাদাত দম্পতিকে গ্রেফতারে সারাদেশে অভিযান
গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার শাহাদাত হোসেন রাজীব ও তার স্ত্রী নিত্য শাহাদাতকে গ্রেফতারে সারাদেশে অভিযান চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে দীর্ঘ ৪০ ঘণ্টার অভিযানেও তাদের সন্ধান পায়নি তারা।
এর আগে রোববার রাতে রাজধানীর কালশী থেকে শাহাদাতের গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপি’কে (১১) উদ্ধার করে পুলিশ। হ্যাপি পুলিশের কাছে দেয়া জবানবন্দিতে শাহাদাত ও তার স্ত্রীর নির্যাতনের কথা জানায়। এদিন রাতেই মিরপুর মডেল থানায় শাহাদাত দম্পতির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক খন্দকার মোজাম্মেল হক।
মামলা দায়েরের পর থেকেই পলাতক রয়েছেন শাহাদাত দম্পতি। তাদের গ্রেফতারের অভিযান সম্পর্কে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) কাইয়ুমুজ্জামান খান জাগো নিউজকে জানান, আসামিদের ধরতে পুলিশের বেশ কয়েকটি টিম কাজ করছে। তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছি তবে তাদের পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান, রোববার মামলার পর থেকেই শাহাদাত ও তার স্ত্রীর মোবাইল ফোন নম্বরগুলো বন্ধ পাওয়া গেছে। তাদের বাড়িতেও ঝুলছে তালা।
তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ভুইয়া মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, তার অবস্থান সম্পর্কে পুলিশ এখনো নিশ্চিত হয়নি। গ্রেফতারের বিষয়ে কোন আপডেট নেই। তবে অভিযান চলছে।
এদিকে নির্যাতনের শিকার হ্যাপিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার শরীরের অধিকাংশ স্থানে গুরুতর জখম রয়েছে ও ফোলা। দু’চোখ ফুলে গেছে ও আঘাতের চিহ্ন আছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে খুনতির ছ্যাকার দাগ রয়েছে।
পূর্ণ সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত হ্যাপি ওসিসি’তেই থাকবে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছে ঢামেক কর্তৃপক্ষ।
এদিকে হ্যাপিকে উদ্ধারের পর শাহাদাতের বিরুদ্ধে মামলা না দেয়ার আবদার করেছে তার পরিবার। রোববার রাতে মামলার বাদী মোজাম্মেল হকের সঙ্গে সমঝোতার জন্য শাহাদাতের দু’জন আন্টি এবং দুই ভাই চেষ্টা করেন। তবে মোজাম্মেল হক তাদের সঙ্গে কোন সমঝোতা না করে শাহাদাত দম্পতির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
মোজাম্মেল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘শাহাদাতের পরিবারের ৪ জন আমার সঙ্গে ফোনে বলে সমঝোতার চেষ্টা করে। পরে মিরপুরের সাংবাদিক আবাসিক এলাকার একটি সমিতিতে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে। তবে মানবতার খাতিরে আমি সমঝোতায় যাইনি। মামলা করেছি। খেলোয়াড় রাজীব নয়, ব্যক্তি রাজীবের বিরুদ্ধেই আমি মামলাটি করি।’
এসময় শাহাদাতকে গ্রেফতার করে তার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচারের দাবি জানান তিনি।
এআর/এসএইচএস/আরআইপি