বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ফাইনাল জয়
একে শুধুমাত্র জয় বললে ভুলই বলা হবে। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের নারীদের দাপুটে জয় এটাতে বেশ মানানসই। ক্রিকেটে বাংলাদেশ ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর পুরুষ এবং নারীদের ক্রিকেট মিলিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো ফাইনাল জেতার ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। এর আগেও কয়েকবার ইতিহাস গড়ার সামনে গিয়েছিল বাংলাদেশের সাকিব-তামিম-মাশরাফিরা। কিন্তু প্রত্যেকবারই একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু এবার আর সেই পথে হাটলেন না বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমবারের মতো ফাইনাল জিতে ছেলেদের আগে তারাই ইতিহাসে নাম লেখালেন।
শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। ক্রিজে জাহানারা আলম। লেগ সাইডে ঠেলে দিয়েই দুই রানের জন্য ছুটলেন তিনি। ডাইভ দিয়ে সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করে ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটি লেখালেন জাহানারা। তার হাত ধরেই রচিত হলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন ইতিহাস। কিন্তু এই ম্যাচের আগে ফাইনালের সঙ্গে বাংলাদেশের কেমন যেন দা-কুমড়া সম্পর্ক।
২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ে-শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশকে নিয়ে মিরপুরে হয় ত্রিদেশীয় সিরিজ। যেখানে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। এক সময়ে ফাইনাল জয়ের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ দল মুত্তিয়াহ মুরালিধরনের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে করুণাদায়ক এক পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।
তিন বছর পর ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে হওয়া সেই ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই রানের পরাজয় এখনও বুকে কষ্টের তীর হিসেবে বেঁধে বাংলাদেশের সমর্থক তথা খেলোয়াড়দের কাছে। ২০১৬ সালে আরো একবার মিরপুরে এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। এবার প্রতিপক্ষ ভারত হলেও টুর্নামেন্ট ফরম্যাট ছিল টি-টোয়েন্টিতে। সেখানেও ভারতের কাছে হেরে আরো একবার ফাইনালে হারার কষ্টে হতাশ হয়ে পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। সেই ম্যাচেও পরাজয়ের স্বাদ বরণ করে নিতে হয় তামিমদের। সম্প্রতি মার্চে হওয়া নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে টপকে ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেখানেও হার। দীনেশ কার্তিকের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে আরো একবার ফাইনাল হারের কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। ছেলেদের এতবার ব্যর্থ হওয়ার মাঝেও প্রথমবার ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করলো বাংলাদেশের মেয়েরা। অভিনন্দন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।
আরআর/এমএস