বিশ্বকাপের দেশে জাগো নিউজ
ভোর সাড়ে ৪টায় বিশ্বকাপের দেশ রাশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা থেকে আকাশে উড়লো বিমান। আমরা তিন বাংলাদেশি সাংবাদিক, রাশিয়া থেকে সরাসরি বিশ্বকাপ ফুটবল কাভারের জন্য আসন নিয়ে বসেছিলাম ওই বিমানে। মাঝে প্রায় দেড় ঘণ্টার যাত্রাবিরতি শারজাহ বিমানবন্দরে। সেখান থেকে সোজা মস্কোর দোমোদেদোভো বিমানবন্দরে। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় এসে নামলাম পৃথিবীর অন্যতম সেরা বিমানবন্দরটিতে। মূল শহর থেকে সড়ক পথে অন্তত পৌনে এক ঘণ্টার দূরত্ব।
বিমানবন্দর থেকে নেমেই নিজের মধ্যে সঞ্চারিত হলো অন্যরকম এক অনুভূতি। দারুণ এক শিহরণ বয়ে গেল শরীরজুড়ে। বিশ্বকাপ তো এর আগেও কাভার করেছি। ২০১৪ সালে এশিয়া মহাদেশ ছাড়িয়ে ভারত মহাসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে সুদূর ব্রাজিল থেকেও বিশ্বকাপ কাভার করে এসেছি। অলিম্পিক গেমস, কমনওয়েলথ গেমস এমনকি এশিয়ান গেমস কাভার করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে।
কিন্তু এভারের অনুভূতিটা একটু ভিন্ন। এর মূল কারণ, এই প্রথম কোনো অনলাইন থেকে বিশ্বকাপ কাভার করতে এলাম। ফিফার পক্ষ থেকে যে ক’টি অফিসিয়াল অ্যাক্রিডিটেশন দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে তার মধ্যে অন্যতম অ্যাক্রিডিটেড এবং বাংলাদেশের একমাত্র অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কম। জনপ্রিয় এই অনলাইনের সঙ্গী আমি নিজেও। ভিশন ইলেক্ট্রনিক্সের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা যেন আমার জন্য অন্য আসরগুলোর চেয়ে একটু ব্যতিক্রম এবং গৌরবের। জাগো নিউজকে বিশ্বকাপের দেশে নিয়ে আসতে পেরেছি, এটাই যেন আমার কাছে অন্যরকম ভালোলাগার।
বিমানবন্দরে নেমেই মনে হলো এই তো বিশ্বকাপের শহর! যদিও বাংলাদেশের মত এতটা হাঁকডাক নেই। বড় বড় বিলবোর্ডের বালাই নেই। কিছু ব্যানার-ফেস্টুন রয়েছে। তাও খুবই পরিমিত। তবে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে আসা দর্শক, সমর্থক এবং সাংবাদিকদের জন্য নানা দিকনির্দেশনা দেয়া রয়েছে বিমানবন্দরেই। রুশ ভাষার পাশাপাশি ওসব দিকনির্দেশনা রয়েছে ইংরেজি ভাষায়ও।
বিমানবন্দরে রয়েছে হেল্প ডেস্ক, আলাদা আলাদ বুথ। বিশ্বকাপের খেলা দেখতে আসা টিকিটধারী দর্শকদের প্রত্যেককেই দেয়া হবে একটি করে ফ্যান আইডি। সেই ফ্যান আইডি দিয়ে টিকিট সংগ্রহের জন্য রাখা হয়েছে আলাদা বুথ। তাদের জন্য রয়েছে আলাম গেটও। আবার বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে হেল্প ডেস্ক এবং আলাদা বুথ।
তবে এখনও জমে ওঠেনি বিশ্বকাপের বিমানবন্দর। কারণ, বিশ্বকাপের বাকি এখনও এক সপ্তাহ। বিদেশি দর্শকদের আসা কদাচিত। দর্শকদের বুথে ভিড় বলতে গেলে এখনও নেই। ইমিগ্রেশনেও বিশ্বকাপের দর্শক এবং সাংবাদিকদের জন্য রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। সেখানে দেখা গেলো অল্প কিছু বিদেশি দর্শক। বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে সম্ভবত আমরা বাংলাদেশি তিনজন সাংবাদিকই প্রথম। অন্তত পরিস্থিতি এবং হেল্প ডেস্কে বসা তরুণীদের চোখ-মুখ দেখে সেটাই বোঝা গেছে। তবে বিদেশি সাংবাদিক! আলাদা গুরুত্ব দিতে দেখা গেলো ডেস্কে বসা ভলান্টিয়ারদের।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ কেন যেন খোদ রাশিয়াতেই এখনও জমে ওঠেনি। যেমন উন্মাদনা বাংলাদেশে দেখে এসেছি, তেমন উন্মাদনার কোনো কিছুই নেই রাশিয়ার অন্যতম সেরা এই বিমানবন্দরে।
আরআই/আইএইচএস/পিআর