ছয় মাসই পানিতে ডুবে থাকে নওগাঁ স্টেডিয়াম
দেশব্যাপি বইছে ক্রিকেট জ্বর। ফুটবলকেও এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সৌম্য-মুস্তাফিজের মতো ক্রিকেটার বা ফুটবলার বের করে আনার কর্যক্রম ও বিভিন্ন সময় পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে এসব থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে নওগাঁ জেলার উদীয়মানরা। কেননা এ জেলার স্টেডিয়ামটি বছরের ছয় মাসই থাকে পানির নিচে। ফলে নিয়মিত খেলা, অনুশিলন ও প্রশিক্ষণ পান না খেলোযাড়রা। এ নিয় চাপা ক্ষোভও রয়েছে উদীয়মানদের মাঝে।
সরেজামিনে দেখা গেছে, সবুজ ঘাসে ছেয়ে আছে গোটা মাঠ। ঘাসের মধ্যে থৈ থৈ করছে হাটু পানি। দেখলে বিশ্বাসই হবে না যে এটাই নওগাঁ জেলা স্টেডিয়াম। দুজন মহিলা হাঁটুপানিতে নেমে ঘাস কাটছিলেন। তারা জানান, মাঠ পরিষ্কারের জন্য নয়, গরু ও ছাগলকে খাওয়ানোর জন্য ঘাস কাটছেন তারা।
সূত্র জানায়, ১৯৫৯ সালের ১ জুন ষ্টেডিয়ামটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে তিন হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৩০০ ফিট দৈর্ঘ্যের গ্যালারী নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ষ্টেডিয়ামে পাঁচ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার গ্যালারী রয়েছে।
স্টেডিয়ামের অফিস সহকারী শামসুর রহমান জানান, এ মাঠ থেকে খেলা শিখে জাতীয় পর্যায়ে খেলেছেন ফুটবলার এনামুল হক, মোছাদ্দেক হেসেন, উত্তম চত্রবর্তী, মনোয়ার হোসেন, ক্রিকেটার রুবায়েত হক সুনান এবং হকিতেত আলমগীর আলম যিনি বর্তমানে বিকেএসপির প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। তবে সে দিন যেন হারিয়ে গেছে। মাঠে পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সব ধরনের খেলা বন্ধ থাকে। ষ্টেডিয়াম মাঠের পূর্ব দিকে রয়েছে একটি পুকুর। দীর্ঘদিন ধরে ষ্টেডিয়াম বৃদ্ধির জন্য পুকুরটি ভরাট কাজ শুরু হলেও ১৬ বছরেও তা শেষ হয় নি। এখন সেটি কচুরিপানায় বাগানে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ মাঠে বাংলাদেশ ফেডারেশন, স্থানীয় লীগের, স্কুল-কলেজ পর্যায়ের জেলা ও বিভাগীয় লীগের খেলা হয়। সব কটি খেলা মাত্র চার-পাঁচ মাসের মধ্যে শেষ করতে হয়। এ ছাড়াও বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন মেলাও হয়ে থাকে এই মাঠে।
উদীয়মান ক্রিকেটার সোহাগ হোসেন এবং আহসান হাবীব জানান, বর্ষায় সময় ক্রিকেট খেলোয়াড়দের বসে থাকতে হয়। মাঠের এ অবস্থার জন্য ভাল কোন খেলোয়াড় তৈরী হচ্ছে না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় জেলা ক্রিড়া সংস্থাকে দায়ী করেন তারা।
স্টেডিয়ামে ফুটবল প্রশিক্ষক বেলাল হোসেন জানান, মাঠে পানি জমে থাকায় প্রশিক্ষণের জন্য খুবই অনুপযোগী। বছরে মাত্র তিনমাস এ মাঠে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বাকি সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে নতুন নতুন খেলোয়াড় তৈরি সম্ভব নয়।
নওগাঁ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা নেই। আয়ের উৎস না থাকায় মাঠ সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। মাঠটি ভরাট করার জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। মাঠের পানি নামলে এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানান তিনি।
এএইচ/পিআর