রাশিয়া বিশ্বকাপের ভবিষ্যদ্বাণী করবে বিড়াল
রূপকথার বিড়াল। নামই দেয়া হয়েছে গ্রিক পূরানের বিখ্যাত চরিত্র অ্যাকিলিসের নামে, ‘অ্যাকিলিস দ্য ক্যাট’। সাদা রংয়ের বিড়ালটা আবার বধির। কিছুই শুনতে পায় না। বসবাস রাশিয়ার বিখ্যাত জাদুঘর সেন্ট পিটার্সবার্গের হার্মিটেজ মিউজিয়ামে। রূপকথার এই বিড়ালকে নিয়েই এবার কাড়াকাড়ি পড়ে যাবে রাশিয়া বিশ্বকাপে। কারণ, এই গণক বিড়ালকেই রাশিয়ানরা ধরে এনেছে বিশ্বকাপে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য। অ্যাকিলিস বিড়ালই বলে দেবে, কে হবে চ্যাম্পিয়ন। নির্দিষ্ট দিনের ম্যাচে জিতবে কে?
গত বছর রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত ফিফা কনফেডারেশন্স কাপেও ভবিতব্য নির্ধারণ করেছিল সেন্ট পিটার্সবার্গের এই বধির বিড়ালটি। তাকেই অফিসিয়াল ভবিতব্য নির্ধারক করেছিল আয়োজক রাশিয়া। সেখানে চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই নিখুঁত ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল বিড়ালটি। নীল চোখের এই বিড়ালটি খাদ্য ভর্তি দুটি বলের মধ্য থেকে একটিকে বেছে নেয়। যে বল দুটিতে থাকে প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি দেশের নাম ও পতাকা।
হার্মিটেজ বিড়ালের প্রেস সেক্রেটারি মারিয়া খালতুনেন রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তিকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেছে এবং কাগজপত্রেও স্বাক্ষর হয়েছে। অ্যাকিলিসকে পছন্দ করার প্রধান কারণ হচ্ছে তার বাছাই এবং বিশ্লেষণ করার ক্ষমতার জন্য।’
মজার বিষয় হচ্ছে এই বিড়ালকেও দেয়া হবে একটি ফান আইডি, পাসপোর্ট। যাতে করে যে কোনো স্টেডিয়ামে অবাধ বিচরণ থাকবে তার। অবাধে প্রবেশ করতে পারবে বিড়ালটি। শুধু তাই নয়, বিড়ালটিকে নেয়া হবে শিশু হাসপাতালে এবং বৃদ্ধাশ্রমেও।
খালতুনেন বলেন, ‘গত বছর কনফেডারেশন কাপের সময় থেকে বেশ উপভোগ করছে অ্যাকিলিস। কনফেডারেশন কাপের সময় পরিবারের সঙ্গে থেকে এক কেজি ওজনও বাড়িয়েছে বিড়ালটি। যখন সে ফিরেছিল, তখন দেখা গেছে পটের মত একটা ভুড়িও হয়েছে। বর্তমানে অ্যাকিলিসের ওজন ৪.৭ কেজি।’
২০১০ বিশ্বকাপের সময় থেকেই বিভিন্ন প্রাণীকে দিয়ে ভবিতব্য নির্ধারণ করার রেওয়াজ চালু হয়। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সময় জার্মানির হাইসেনবার্গে অক্টোপাস পল একেবারে নিখুঁত ভবিষ্যদ্বাণী করে বিখ্যাত হয়ে ওঠে। সেমিফাইনাল, ফাইনালসহ প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই অক্টোপাস পলের ভবিষ্যদ্বাণী পুরোপুরি ফলে যায়।
২০১৪ বিশ্বকাপে অফিসিয়ালি কোনো ভবিতব্য নির্দেশক নির্ধারণ করা হয়নি। তবে কখনও উট, কখনও হাতি কিংবা কখনও পানির কচ্ছপ দিয়েও ভবিষ্যদ্বানেী তৈরি করতে দেখা গেছে মানুষকে। এবার রাশিয়া বিশ্বকাপ আয়োজক কর্তৃপক্ষ অফিসিয়ালি বধির এই বিড়ালটিকে নির্ধারণ করলো ভবিষ্যদ্বানী করার জন্য।
সেন্ট পিটার্সবার্গের বিখ্যাত হার্মিটেজ মিউজিয়ামের সঙ্গে বিড়ালের সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ১৭৪৫ সালে এলিজাবেথ ওয়ান প্রথম হল্যান্ড থেকে বিড়াল আমদানি করেন হার্মিটেজে। লক্ষ্য ইদুর নিধন। এরপর থেকেই হার্মিটেজের উইন্টার প্যালেস বিল্ডিংয়ের বেজমেন্টে বিড়ালের বাসস্থানের জন্য নির্ধারিত স্থান হয়ে যায়। যেখানে আবার রয়েছে হার্মিটেজ মিউজিয়ামের সংগ্রহশালার বিশাল অংশ। মিউজিয়ামের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিল রেখেই সবচেয়ে সুন্দর বিড়ালটির নাম রাখা হয় অ্যাকিলিস হিসেবে। সেই মিউজিয়ামে রয়েছে অন্তত ৫০টি বিড়াল।
আইএইচএস/এমএস