সিংহলিজ আর মুসলিমদের মধ্যে পার্থক্য দেখেন না সাঙ্গা
জাতিগত দাঙ্গায় অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কায়। বৌদ্ধ আর মুসলমানদের মধ্যে দাঙ্গায় দেশটিতে ১০ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। দেশের এই অবস্থায় ভীষণ উদ্বিগ্ন কুমার সাঙ্গাকারা। লঙ্কান ক্রিকেটের এই কিংবদন্তী সবাইকে এই হানাহানি বিদ্বেষ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সিংহলিজ-তামিল কিংবা মুসলিম ভাইদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা উচিত নয়, তারা সবাই শ্রীলঙ্কান।
দাঙ্গার সূচনা পর্যটন নগরী ক্যান্ডিতে। একজন সিংহলিজ ট্রাকচালকের মৃত্যু ও তাঁর শেষকৃত্যের পর ক্ষিপ্ত বৌদ্ধরা মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকটি দোকানপাট ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। অবস্থা যাতে আরও খারাপ দিকে মোড় না নেয়, সেজন্য পুরো দেশেই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
জাতিগত এই সহিংসতায় ভীষণ উদ্বিগ্ন সাঙ্গাকারা। আশির দশকে সংখ্যাগুরু সিংহলিজদের সঙ্গে তামিলদের সমস্যায় গৃহযুদ্ধ চলেছে ২৬ বছর। সেই ধাক্কা কাটিয়ে যখন সমৃদ্ধির পথে এগোচ্ছে দেশটি, তখন আবারও এই সমস্যা।
সবাইকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়ে সাঙ্গাকারা এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা কি অতীত থেকে কোনো শিক্ষাই নিইনি? আমরা সবাই কি মানসিকভাবে এতটাই দৈন্য যে আমরা বুঝতে পারছি না বিবেকহীন ও নির্বোধ কার্যকলাপ আমাদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত করছে! আমরা কি মৌলিক মানবিক গুণাবলি হারিয়ে ফেলছি?’
সিংহলিজ, তামিল আর মুসলিম আলাদা নয়। তারা সবাই শ্রীলঙ্কার নাগরিক, বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘যখন আমরা সাথের শ্রীলঙ্কানের চোখের দিকে তাকাই, আমরা কিন্তু সিংহলিজ, তামিল কিংবা মুসলিম ইত্যাদি দেখি না। আমরা একে অপরের মধ্যে নিজেদেরই দেখি। আমরা তাদের চোখে একই ধরনের প্রত্যাশা ও স্বপ্ন, দেশের জন্য একইরকম ভালোবাসা দেখি। আমাদের দৃষ্টিতে ঘৃণা, অজ্ঞতা কিংবা কোনো ধরনের ভয় যেন না থাকে। বর্ণবাদকে না বলুন।’
একই রকম আহ্বান আরেক লঙ্কান কিংবদন্তী মাহেলা জয়াবর্ধনের। তিনি সাম্প্রতিক সহিংসতার নিন্দা এবং উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি সাম্প্রতিক সময়ের এই সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সবারই উচিত জাতি, ধর্ম বা বিশ্বাসের দিকে না তাকিয়ে নৈতিকতার দিকে তাকানো। আমি গৃহযুদ্ধের মধ্যে বড় হয়েছি, যা ২৫টি বছর ধরে চলেছে। পরের প্রজন্মকেও এমন কিছুর ভেতর ফেলে দিতে চাই না।’
এমএমআর/পিআর