বন্যহাতির আক্রমণের শঙ্কায় লঙ্কান ক্রিকেটাররা
হাম্বানতোতা স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হয়েছিল ২০০৯ সালে, তৎকালীন শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্ট মহিন্দর রাজাপক্ষে। নিজের নির্বাচনী এলাকা বলে এখানে ৩৫ হাজার দর্শকধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্টেডিয়াম নির্মান করা ছিল যেন তার প্রতিশ্রুতি। তবে স্টেডিয়ামটি এমন এক স্থানে নির্মাণ করলেন, যার পাশেই বন্যহাতির অভয়ারণ্য। অন্তত ২৫টিরও বেশি হাতি এখানে অবাধে বিচরণ করে।
জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে হাতিরা চষে বেড়ায় স্টেডিয়ামের ভেতরের অংশেও। এ কারণে হাম্বানতোতা স্টেডিয়ামে সব সময় হাতির ভয় থেকেই যায়। এবার তো রীতিমত হাতির আক্রমণ থেকে বাঁচতে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি বডিগার্ডের ব্যবস্থা করতে হয়েছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটি অনুষ্ঠিত হয়েছে গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। সেখানে একটি করে জিতে সমতায় রয়েছে দু’দল। সিরিজের বাকি তিন ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হবে হাম্বানতোতায়।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, আগেরদিন সন্ধ্যায়ও বেষ্টনী ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েছিল হাম্বানতোতার অনাকাঙ্ক্ষিত এই ক্রিকেট দর্শক। তবে তারা মাঠে ঢুকলে তো আর এমনি এমনি যায় না। মাঠ, উইকেট- অনেক কিছুই মাড়িয়ে দিয়ে যায়।
এ কারণে লঙ্কান ক্রিকেটারদের রক্ষার্থে বিশেষ ধরনের বডিগার্ড (গেম ওয়ার্ডেন) নিয়োগ দিতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। যাদের সংখ্যা হবে অন্তত ১০ জন। তাদের কাজ হবে, ম্যাচ চলাকালীন ক্রিকেট সমর্থকদের যেন কোনোভাবে ডিস্টার্ব করতে না পারে বন্যহাতির দল। একই সঙ্গে ম্যাচও পণ্ড করে না দিতে পারে যেন।
হাম্বানতোতা স্টেডিয়ামটি কলম্বো থেকে অন্তত ২৪০ কিলোমিটার (১৫০ মাইল) দক্ষিণে একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায়। এখানে যাওয়াটাও বেশ দুরূহ ব্যাপার। বন্যহাতির জঙ্গল পেরিয়ে পৌঁছাতে হয় হাম্বানতোতায়। এখানে ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করাও বেশ ব্যয় সাপেক্ষ। এ কারণে এখানে ম্যাচও অনুষ্ঠিত হয় কম। সর্বশেষ ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২ বছর আগে।
এক কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘হাতি ঠেকাতে বনরক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে এসএলসি। বেষ্টনী ভেঙে রাতে হাতির দল মাঠে ঢুকে পড়ার ঘটনা আছে। স্টেডিয়াম থেকে একশ মিটার দূরেই জঙ্গল। সমর্থকরা যাতে এদিক-ওদিক না গিয়ে হাতিদের খেপিয়ে না তোলে, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা ১০ বনরক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি।’
হাম্বানতোতায় বিপদ আছে আরও একটি। হাতির আশ্রয়স্থল যে বনে, সেখানে রয়েছে অসংখ্য ভিমরুলের বাসা। মাঝে মধ্যে তো এই ভিমরুলের দল এসে আক্রমণ করে বসে মাঠে থাকা ক্রিকেটার কিংবা দর্শকদের। হাতির দল না হয় ঠেকানো গেল; কিন্তু ভিমরুলের দল কীভাবে ঠেকাবে এসএলসি?
আইএইচএস/আরআইপি