ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

জার্মানি না চিলি : কে হবে চ্যাম্পিয়ন?

প্রকাশিত: ০৯:৫৪ এএম, ০২ জুলাই ২০১৭

ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনাল হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপ আর লাতিন আমেরিকান ফুটবলে চিরন্তন ঐতিহ্যের লড়াই হিসেবে। একদিকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি আর অন্যদিকে নতুন শক্তি হিসেবে উঠে আসা চিলি। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১২টায় সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে কনফেডারেশন্স কাপের শিরোপা লড়াইয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হচ্ছে লাতিন চ্যাম্পিয়নরা।

ফাইনালে চিলির অভিজ্ঞতা বনাম জার্মানির তারুণ্য। রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালের এটাই ক্যাচলাইন। বিশ্বকাপজয়ী জার্মানির কোচ জোয়কিম লো এই টুর্নামেন্টে অনামীদের এনে ফাইনালে ওঠায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেক তারকা। অন্য দিকে চিলির কোচ আন্তনিও পিজ্জির ভরসা তার দলের ধারাবাহিকতা। পরপর দু’বার কোপা আমেরিকা জয়ীরা ইউরো চ্যাম্পিয়নদের হারানোয় নিজেদের ‘অলিখিত বিশ্বজয়ী ’ বলছেন ভিদালরা।

জার্মানি বিশ্বকাপ জিতেছে চারটি, ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে তিনটি; অথচ একটাই অধরা জার্মানদের, ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ। এই টুর্নামেন্টটির শিরোপা এখনও ঘরে তুলতে পারেনি জার্মানরা। অপরদিকে চিলি এই প্রথমবারেরমত খেলতে এসেছে কনফেডারেশন্স কাপ। প্রথমবারই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে হারিয়ে উঠে এসেঠে ফাইনালে।

অ্যালেক্সিস সানচেজ আর ক্লদিও ব্র্যাভোরা তো রীতিমত চমক দিয়েছে ফুটবল বিশ্বকে। গত তিন বছর ধরেই দুর্ধর্ষ ফর্মে এই দলটি। পরপর দু’বছর কোপা আমেরিকার ফাইনালে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চিলি। এবার লক্ষ্য কনফেডারেশন্স কাপ জিতে হ্যাটট্রিক করা। পারবে তো সানচেজ-ভিদাল আর ক্লদিও ব্র্যাভোরা?

চমক দেখাতে দেখাতে ফাইনালে উঠে এসেছে চিলি। আর মাত্র একটি ধাপ। এই ধাপটি পার হতে পারলেই বৈশ্বিক একটি টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তুলে নেবে সানচেজ-ভিদালরা। তবে চিলির স্বপ্নভঙ্গ করতে সম্পূর্ণ তৈরি জার্মানি। ফাইনালের চব্বিশ ঘণ্টা আগে জার্মান কোচ জোয়াকিম লো বলে দিয়েছেন, ‘ফুটবলাররা ট্রফির জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে রয়েছে। ওরা দারুণ চনমনে।’

এক যুগ আগে ঘরের মাঠে কনফেডারেশন্স কাপের সেমিফাইনাল খেলেছিল জার্মানি। সেবার ব্রাজিলের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল জার্মানির। তখন জার্মানির কোচ ছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যান। জোয়াকিম লো ছিলেন তার সহকারী। একযুগ পর আবার জার্মানি কনফেডারেশন্স কাপের ফাইনালে। ট্রফির জয়ের মাঝে আবারও লাতিন আমেরিকার আরেকটি দেশ। চিলি।

শুধু তাই নয়। চিলির প্রধান দুই ভরসা আরতুরো ভিদাল এবং চার্লস আরাঙ্গুইজ খেলেন আবার বুন্দেসলিগায়। ম্যানচেস্টার সিটিতে খেলেন টাইব্রেকারে পর্তুগাল বধের নায়ক ক্লদিও ব্র্যাভো। আর্সেনালে খেলেন আলেক্সিস সানচেজ।

তবে সব কিছুচাপিয়ে দেশবাসীকে স্রেফ আনন্দ দেয়ার লক্ষ্যেই চ্যাম্পিয়ন হতে চায় চিলি। দেশটির গোলরক্ষক এবং অধিনায়ক ব্র্যাভো বলেছেন, ‘আমাদের দেশে প্রচুর সমস্যা। চ্যাম্পিয়ন হয়ে তাই দেশবাসীকে আনন্দ দেওয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এই মুহূর্তে।’

সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘আমি চার সন্তানের বাবা। যদি রাশিয়া থেকে খালি হাতে দেশে ফিরি, তা হলে কনিষ্ঠ সন্তান আমার ওপর প্রচণ্ড রেগে যাবে। তাই গত দুই বছর ধরে আমরা যে ধারাবাহিকতা দেখিয়ে আসছি, আশা করছি এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।’

আর ভিদাল তো রীতিমত হুঙ্কার দিয়ে রাখলেন। বায়ার্ন মিউনিখ তারকা বলেছেন, ‘আমরা যে যোগ্য, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছি। পরপর দুই বার হারিয়েছি আর্জেন্টিনাকে। কয়েক দিন আগেই হারিয়েছি ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালকে। এবার জার্মানির বিরুদ্ধে জিতলে আমরাই হব অনানুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বসেরা। কারণ, জার্মানি গত বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন। কোনোভাবেই এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাই না।’

চিলির সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাতে এগিয়ে অবশ্য জার্মানিই। ৮ বারের মধ্যে ৫ বারই জিতেছে তারা। হেরেছে মাত্র দু’বার। তবে চলতি কনফেডারেশন্স কাপের গ্রুপ লিগে এই চিলের বিরুদ্ধে কোনও মতে হার বাঁচিয়েছিল চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচ হয়েছিল ১-১ ড্র। তাই শিরোপা জিততে ফুটবলাররা ক্ষুধার্ত বলে দাবি করলেও লো নিজে যে চিলিকে নিয়ে চিন্তিত, সেটা গোপন করেননি।

জার্মান কোচ বলেছেন, ‘চিলি এই টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দল। আমাদের আগেই মনে হয়েছিল, ওরা ফাইনালে উঠবে। সেটাই হয়েছে।’ কেন চিলিকে নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন লো। বলেন, ‘ওদের নিজস্ব ঘরানার খেলার ধরণ রয়েছে। বহু বছর ধরেই সেই কৌশলে খেলে চলেছে। তা ছাড়া চিলের ফুটবলাররা দারুণ নমনীয় মাঠের মধ্যে। যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নিতে পারে।’

তা হলে চিলিকে হারানোর কৌশল কি জার্মানির? লো বলছেন, ‘এখন মৌসুমের শেষ। সারা বছর ধরে ওরা খেলেছে। আমাদের স্ট্র্যাটেজি হচ্ছে, ওরা ক্লান্ত হয়ে পড়লেই আক্রমণের ঝড় তোলা।’ তবে জার্মান কোচের পরিকল্পনা সফল হবে কি না তা নিয়ে সংশয় তৈরি করে দিয়েছেন আরতুরো ভিদাল। তিনি বলেন, ‘আমরা কখনোই ক্লান্ত হই না!’

আইএইচএস/জেআইএম

আরও পড়ুন