ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

৬ মাস কথা বন্ধ ছিল কুম্বলে-কোহলির

প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ২২ জুন ২০১৭

অধিনায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে পদত্যাগ করেছেন কোচ অনিল কুম্বলে। এটা পুরাতন খবর। তবে এই পদত্যাগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একের পর এক নতুন খবর বেরিয়ে আসছে। শোনা যাচ্ছে নানান মুখরোচক খবর। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) এক কর্মকর্তা এমনও তথ্য জানিয়েছেন, ৬ মাস নাকি কোচ-অধিনায়ক একে অপরের সঙ্গে কথাই বলেননি!

গত ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের ভারত সফরের সময়ই বিরোধটা প্রকাশ্যে দেখা দেয় কোহলি এবং কুম্বলের মধ্যে। এরপর থেকেই দু`জনার মধ্যে কথা বন্ধ। যার চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ঘটে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে, পাকিস্তানের কাছে ফাইনাল হারের পর। তবে তার আগে গুঞ্জন শোনা গেলেও বিরাট কোহলি বারবারই বলে গেলেন, আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই।

কোচ এবং অধিনায়কের মধ্যে বিরোধের এই খবর জানতেন বোর্ড কর্মকর্তারা। তারা বহু চেষ্টা করেন দু`জনের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত বিরোধের অবসান ঘটে অনিল কুম্বলের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে। তবে যাওয়ার আগে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে গেলেন, কোহলি চায় না বলে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

বিসিসিআইর বিভিন্ন তরফে শোনা যাচ্ছে, কোহলি এবং কুম্বলের মধ্যে বিরোধের খবর জানার পরই নতুন কোচ চেয়ে বিজ্ঞাপন দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। তবে এরই মধ্যে বোর্ড কর্তারা চেষ্টা করেন, দু`জনের বিরোধ মীমাংসার। এমনকি কুম্বলেকে পুনরায় কোচ করার কথা বলে বোর্ড সমাধানের চেষ্টা চালিয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনো লাভই হলো না।

আবার কেউ কেউ বলছেন, দেশের মাঠে নিউজিল্যান্ড সিরিজে প্রথম বিরোধ দেখা দেয় দু`জনের মধ্যে। এরপর ভারতে আসে ইংল্যান্ড। বোদ্ধাদের মতে, এই সিরিজেই কোহলির অধিনায়কত্বের সঙ্গে বারবার ভিন্ন মত পেশ করতে শুরু করেন কুম্বলে। জানা গেছে, কোহলির বোলার পরিবর্তন নিয়ে কয়েকটি ক্ষেত্রে উষ্মা প্রকাশ করেন কুম্বলে। সেটা নিয়ে কোহলি যে খুব খুশি হয়েছিল তা নয়।

পুনের ঘূর্ণি পিচ যখন ব্যুমেরাং হয়ে দেখা দিল, সেটা নিয়েও অধিনায়কের সঙ্গে বিরোধ বাধে কোহলির। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট ছিল পুণেতে। সেখানে ঘূর্ণি উইকেট বানানোর সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া বিশাল ব্যবধানে জিতে সিরিজে ১-০ এগিয়ে যায়।

কিন্তু ওই ম্যাচেই উইকেটের মত বড় ফাটল দেখা দিল ভারতীয় ড্রেসিংরুমেও। কোচ সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে বিবৃতি দিলেন, তিনি পিচ বিকৃত করার বিষয়ে জানেন না। প্রশ্ন উঠল, তাহলে এমন ঘূর্ণি কে অর্ডার দিল? অধিনায়ক? কোচ যদি ‘না’ বলে থাকেন, তা হলে তো ইঙ্গিত তাঁর দিকেই যায়।

ওদিকে, দল জানে এটা মিলিত সিদ্ধান্ত ছিল। জানাজানি হয়ে গেল, মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের একাধিকবার ফোন করে ঘূর্ণি পিচ বানানোর কথা বলেছিলেন কুম্বলেই। দলের মধ্যে বলাবলি শুরু হয়ে যায়, কোচ দু’রকম কথা বলছেন না তো?

রবি শাস্ত্রী ডিরেক্টর থাকার সময় সাংবাদিকদের সামনে এসে খোলাখুলি স্বীকার করতেন, নিজেদের দেশে অ্যাডভ্যান্টেজ নেওয়ার জন্য স্পিনিং পিচ বানাচ্ছি। বেশ করছি। বাইরে গেলে ওদের সুবিধে অনুযায়ী উইকেট বানায়। শাস্ত্রীর মতো কুম্বলে জনসমক্ষে অতটা দায় নিতে রাজি হননি। তাতে দলের মধ্যে জনপ্রিয়তা বাড়েনি কোচের। বিরোধ দেখা দেয় কোহলির সঙ্গে।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড যখন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছিল, দু`পক্ষের মধ্যে বিরোধ মীমাংসার, তখন বিরাট কোহলি বোর্ড এবং ক্রিকেট অ্যাডভাইজরি কমিটির (সিএসি) কাছে অভিযোগ করেন, কোচ বারবার তার ব্যাক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন। ব্যাক্তি স্বাধীনতা বলতে কোহলি বোঝাতে চেয়েছেন অধিনায়ক হিসেবে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

প্রথম একাদশ বাছাই করা নিয়ে বিরোধ তো লেগেই ছিল। এমনকি বোলার পরিবর্তন বা ব্যাটিং অর্ডারে বদল আনার ব্যাপারেও নাকি পরামর্শের চেয়ে বেশি করে ‘অর্ডার’ দিতেন কুম্বলে। এ সব কথা সৌরভ-শচীনদের কমিটির কাছেও খুলে বলেছেন কোহালি।

যদিও কুম্বলে নিজে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওভালে ফাইনাল হারার পরের দিনই কোচ এবং অধিনায়ককে নিয়ে বৈঠক করেছিল শচীন-সৌরভদের অ্যাডভাইজরি কমিটি। সেখানে কিংবদন্তিদের সামনেই সরাসরি কুম্বলেকে নিয়ে তাঁর আপত্তি এবং ক্ষোভ উগরে দেন কোহালি। তখনই পরিষ্কার হয়ে যায়, এই সম্পর্ক আর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না।

চাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালের পরও দু`জনের মধ্যে বিশাল বিরোধ দেখা দেয়। সূত্র জানায়, পাকিস্তানের কাছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে কুৎসিত হারের পরে ড্রেসিংরুমে বক্তব্য রাখেন কুম্বলে। ভবিষ্যতের জন্য উৎসাহ দিলেও হার নিয়ে তীব্র কিছু মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, জশপ্রিত বুমরার ‘নো বল’ নিয়ে সব চেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন কোচ। অধিনায়ক বক্তব্য রাখতে গিয়ে ক্রিকেটারদের পাশে দাঁড়ান। হারের ব্যাখ্যা নিয়েও দু’জনে ছিলেন দুই মেরুতে। এর পর বিকর্ষণ ঘটে চূড়ান্ত বিচ্ছেদ ছিল সময়ের অপেক্ষা!

আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন