ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

‘আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান’ একেই বলে!

প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ১৫ জুন ২০১৭

ভারতের কাছে হেরে যাওয়ার পর পাকিস্তানকে তো সবাই বাতিলের খাতাতেই ফেলে দিয়েছিল; কিন্তু একজন ফেলতে পারেননি। শহীদ আফ্রিদি। তিনি বলে দিলেন, ‘এখনই যেন পাকিস্তানকে বাতিলের খাতায় না ফেলা হয়। এখনও অনেক সময় বাকি আছে।’

নিজেদের আনপ্রেডিক্টেবল ট্যাগটা বেশ ভালোই উপভোগ করেন- জানিয়েছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে মোহাম্মদ হাফিজ বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলেছিলেন কথাটা। তখনও কী কেউ জানতো, সত্যি সত্যিই আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান নিজেদের সামর্থ্যের বাইরে কিছু করে বসবে?

কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেনে অবিশ্বাস্যভাবে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দিল পাকিস্তান। টুর্নামেন্টের টপ মোস্ট ফেবারিট ইংল্যান্ড। যে কোনো বিবেচনায় তাদেরকে ফাইনালের বাইরে রাখা যাচ্ছিল না। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের তিনটিতেই দুর্দান্ত জয়। বলতে গেলে উড়তে উড়তেই সেমিতে উঠে আসলো স্বাগতিক ইংলিশরা।

Braver

সেই ইংল্যান্ডকে বলতে গেলে উড়িয়ে দিল পাকিস্তান। ২১১ রানে বেধে রেখে ব্যাট করতে নামার পর ৭৭ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নিলো সরফরাজ আহমেদের দল। কী অসাধারণ পারফরম্যান্স! পাকিস্তানের নাম যে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’- সত্যিই স্বার্থক। একেই বলে আনপ্রেডিক্টেবল!

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার পর নিজ দেশের ক্রিকেটারদের অভিনন্দন জানিয়ে টুইট করেন ইমরান খান। তিনি লিখেছেন, ‘আজকের অনবদ্য পারফরম্যান্সের জন্য পাকিস্তানকে অনেক অভিনন্দন।’

দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইন টুইট করে লিখেন, ‘দুরন্ত খেলল আজ পাকিস্তান। নকআউট ফরম্যাটে র্যাংকিংটা যে বড় ব্যাপার নয়, ফের বোঝা গেল। ফাইনালটা দারুণ জমবে মনে হচ্ছে।’

শহিদ আফ্রিদির টুইট, ‘টিম পাকিস্তানের জন্য আজ আমরা গর্বিত। প্রথম ম্যাচে হারের পরে কী অসাধারণ ভাবেই না ঘুরে দাঁড়াল টুর্নামেন্টে। সমালোচকরা চমকে গিয়েছে। দারুণ আনন্দ হচ্ছে।’

বুধবার কার্ডিফে পাকিস্তান যে দাপট দেখাল, কে বলবে ছবিটা দু’বছর আগে এমন ছিল না। যে দিন এক চুলের জন্য সুযোগটা ফস্কে যেতে যেতে বেঁচে গিয়েছিল পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির যোগ্যতা অর্জনের ঠিক চার দিন পরে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ৯ নম্বরে নেমে গিয়েছিল পাকিস্তান।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার প্রথম এবং একমাত্র শর্তই হল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে র্যাংকিংয়ে সেরা আট দলের মধ্যে থাকতে হবে। পাকিস্তান যদি ৯ নম্বরে চার দিন আগে নেমে যেত, তাহলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলাই হোত না তাদের।

দুই বছর আগের সেই দিনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের ছবিটা কিছুতেই মেলানো যাচ্ছিল না। হাসান আলি, ফাখর জামানরা যেভাবে খেললেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, তাতে মনে হওয়ার কারণও দেখা যাচ্ছিল না।

আফ্রিদির মত টুইট করেছিলেন পাকিস্তানের আরেক পেসার মোহাম্মদ ইরফান। তিনি সেই টু্ইটই আবার মনে করিয়ে দিলেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ম্যাচের আগেও তিনি একই টুইট করেছিলেন। এ দিনও লিখলেন, ‘আবার বলছি। পাকিস্তানকে কোনও ভাবেই হাল্কা ভাবে নেওয়ার ভুলটা যেন কখনও কেউ না করে।’

ইংল্যান্ডকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে হারানোর পর টুইটারে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ লিখেছেন, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৭।’

লঙ্কান কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা লিখেছেন, ‘কার্ডিফের উইকেটের তো কোনো দোষ নেই। পাকিস্তানের ক্রিকেটাররাই এই উইকেটে ধাতস্থ হতে পেরেছে এবং দারুণ খেলেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের এটা দারুণ এক জয়।’ অন্য আরেক টুইটে সাঙ্গাকারা বলেন, ‘পাকিস্তানের অসাধারণ এক জয়। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারের পর দারুণ প্রত্যাবর্তন। এবং এখন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালেই জায়গা করে নিলো তারা।’

পাকিস্তানিদের উচ্ছ্বাসের আলাদা একটা কারণও রয়েছে। তাদের বোলিংয়ের অন্যতম সেরা তারকা মোহাম্মদ আমির চোটের জন্য খেলতে পারেননি। তাও পাক বোলাররা আমিরের অভাবটা বুঝতে দিলেন না। বিশেষ করে হাসান আলি। ৩৫ রানে তিন উইকেট নিয়ে তিনিই এ দিনের ম্যাচের সেরা।

অধিনায়ক সরফরাজও প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন হাসানকে, ‘দারুণ খেলেছে হাসান। আশা করছি ফাইনালেও ও এই পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে পারবে।’

চমকে গিয়েছে খোদ ইংল্যান্ডই। অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান তো বললেন, ‘আমরা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। পাকিস্তান আমাদের উড়িয়ে দিয়েছে। কোনও লড়াই হয়নি। উইকেটটায় আগে খেলা হয়েছিল। তবে এই পর্যায়ের ক্রিকেটে সব রকমের উইকেটে খেলার জন্য তৈরি থাকতে হয়।’

আইএইচএস/জেআইএম

আরও পড়ুন