তামিম-মাহমুদউল্লাহ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই ভালো খেলেছে : পাপন
প্রতিপক্ষ যেই হোক আর শক্তি-সামর্থ্য যত কমই থাকুক না কেন, ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডে প্র্যাকটিস ম্যাচগুলোতে রানের নহর বইয়ে দিয়েছেন মুশফিক, সৌম্য, ইমরুল, তামিম, সাব্বির ও মিরাজরা। শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আইরিশ উলভসের বিপক্ষে ৫০ ওভারে প্রায় ৪০০ রান (৩৯৪) করে ফেলেছিল টিম বাংলাদেশ।
এর আগে নরফোক একাদশকে ও সাসেক্সের বিপক্ষে পরপর দুই খেলাতেও ওভার পিছু প্রায় সাত রান করে তুলেছেন টাইগাররা। কিন্তু ডাবলিনের দ্য ভিলেজ স্টেডিয়ামে তিন জাতি ক্রিকেটের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে
সেই দলের টপ অর্ডারের সে কি হতশ্রী অবস্থা!
বোর্ডে ৭০ রান জমা পড়তেই চার ফ্রন্টলাইনার সৌম্য, সাব্বির, মুশফিক ও সাকিব ফেরেন সাজঘরে। ভাগ্য ভালো তামিম ও মাহমুদউল্লাহ সময়মতো শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন, না হয় কি যে হতো? যদিও বৃষ্টিতে ম্যাচ ধুয়ে মুছে গেছে, তারপরও প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা ভক্তদের মুখে মুখে।
কি ব্যাপার কি এমন হলো যে, শুরুর পরপরই ভাঙন? শুক্রবারের খেলায় ৭০ রানে চার উইকেট হারানোর কারণ খুঁজতে গেলে প্রথমেই চোখের সামনে ভেসে উঠবে কিছু আলগা শটের ছবি। সাকিব ও মুশফিক অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের বল অহেতুক তাড়া করে আউট হয়েছেন।
তার সঙ্গে সঙ্গেই চোখের সামনে ভেসে উঠছে পিচের ছবি। প্রথাগত পিচ বলতে যা বোঝায়, ডাবলিনে কালকের উইকেটের চেহারা তেমন ছিল না। পিচ তো নয় যেন সবুজ ঘাসের কার্পেট! এক ইঞ্চি জায়গাও খালি ছিল না, যেখানে সবুজ ঘাসের ছড়াছড়ি ছিল না। পিচজুড়ে সবুজ ঘাস।
এমন ঘাসের উইকেট মানেই পেসারদের বলে বাড়তি সুইং। একটু ভালো জায়গায় বল ফেলতে পারলেই ব্যাটসম্যানের ফ্রি-স্ট্রোক খেলা কঠিন। একটু ভুল করলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ। অথবা ব্যাটের বাইরের কোনায় লাগা।
বাংলাদেশ এমন ঘাসের পিচে শেষ খেলেছে কবে?
স্মৃতি হাতরে খুঁজতে গেলে চলে আসবে এই তো মাত্র কয়েক মাস আগে নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটনের কথা। ব্ল্যাক ক্যাপসদের সাথে প্রথম টেস্টের আগের দিন পড়ন্ত বিকেলেও বোঝা যায়নি কোন পিচে খেলা হবে? কারণ আশপাশের সব উইকেটের মতো ম্যাচ উইকেটও ছিল ঘন সবুজ ঘাসে ঢাকা।
অবশ্য শেষ পর্যন্ত আর সেই সবুজ গালিচায় খেলা হয়নি। খেলা শুরুর দিন সকালে অনেক ঘাস ছেটে ফেলে দেয়া হয়।
তারপরও ঘাসের অস্তিত্ব ছিল। তবে আগের দিনের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু কাল আয়ারল্যান্ডে যে পিচে খেলা হয়েছে, তা ছিল ঘন ঘাসে ঢাকা। অনেকেরই মতো ওই ঘাসের উইকেটে শুরুতে একটু রয়ে-সয়ে খেলার চেষ্টা না করে শর্ট খেলতে যাওয়াই হয়েছে কাল। তাই চটপট চার উইকেট খুইয়ে চাপে পড়া।
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও তাই মনে করেন। তার ধারণা, উইকেট সহজ ছিল না। প্রচুর ঘাস ছিল।
তাই সমস্যা হয়েছে। আজ ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার মহাদেবপুরে এক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে পুরস্কার বিতরণ করতে গিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে আলাপে বিসিবি বিগ বস জানিয়ে দিলেন, ডাবলিনে শুক্রবার প্রথম ম্যাচ যে পিচে হয়েছে, তাতে ঘাস ছিল প্রচুর। যে কারণে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না।
তাই যদি হবে, তাহলে তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ স্বাচ্ছন্দে ভালো খেললেন কি করে? এ প্রশ্নর জবাবে নাজমুল হাসান পাপনের ব্যাখ্যা, ‘পিচে যে এতবড় ঘাস থাকবে, ক্রিকেটাররা তা স্বপ্নেও ভাবেনি। আমি ক্রিকেটারদের সাথে কথা বলে জেনেছি, ওদের ধারণা ছিল পিচে ঘাস থাকলেও খেলার দিন সকালে সে সব ঘাস কাটবে। কিন্তু কাটেনি। তাতেই ঘটেছে বিপত্তি।’
বিসিবি প্রধানের কথায় পরিষ্কার ইঙ্গিত, তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ধৈর্য ধরে খেলেই সফল হয়েছে। তাইতো তার মুখে এমন কথা, ‘তামিম ও রিয়াদের (মাহমুদউল্লাহ) খেলা দেখে বোঝা গেছে এক্সপেরিয়েন্স কতটা ম্যাটার করে। ওরা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই ভালো খেলেছে। শুধু অভিজ্ঞতার জোরেই ওই দুজন অত সুন্দর করে খেলতে পেরেছে। আসলে ওই কন্ডিশনে ভালো খেলা অত সহজ ছিল না।’
এআরবি/এনইউ/জেআইএম