হেরেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল
কোনো কোনো সময় জয়টা হয়ে ওঠে হতাশারও কারণ। জয় পেয়েও যদি ছিটকে যেতে হয়, কাংখিত সাফল্য না পাওয়া যায়, তাহলে সেটা হতাশারই হওয়ার কথা। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদেরও হয়েছে তাই। নিজেদের মাঠে জিতেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হলো অ্যাটলেটিকোকে। হেরেও ফাইনালে উঠে গেলো রিয়াল মাদ্রিদ। চার বছরে এ নিয়ে তৃতীয়বার ফাইনাল খেলছে রিয়াল।
আগের ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেই সর্বনাশটা হয়েছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। যে কারণে ফিরতি লেগে তাদের প্রয়োজন অন্তত ৪ গোলের ব্যবধানে জয়। আর ভিসেন্তে কালদেরনে একটি গোলও যদি হজম করে বসে, তাহলে ব্যাপারটা হয়ে যাবে আরও কঠিন। তখন ব্যবধান রাখতে হতো ৫ গোলের।
এমনই যখন পরিস্থিতি, তখন ভিসেন্তে কালদেরনে জয় পেয়েছে ঠিকই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তবুও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জুভেন্তাসের মোকাবেলা করবে রিয়াল মাদ্রিদই। কারণ, নিজেদের মাঠে অ্যাটলেটিকো জিতেছে ২-১ গোলের ব্যবধানে। পয়েন্ট সমান হলেও গোল গড়ে তারা পিছিয়ে থাকলো ৪-২।
প্রথম ১৬ মিনিটের মধ্যেই রিয়ালের জাল দু’বার কাঁপিয়ে দিয়েছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। তখন মনে হচ্ছিল, বুঝি বার্সেলোনার মত অবিস্মরনীয় একটি কামব্যাকের ইতিহাস লিখা হতে চললো ভিসেন্তে কালদেরনে; কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার খানিক আগে, ৪২ মিনিটে ইসকো গোল করে অ্যাটলেটিকো সমর্থকদের সেই আশা গুঁড়িয়ে দিলেন।
১২তম মিনিটেই অ্যাটলেটিকোকে এগিয়ে দেন সাউল নিগুয়েজ। কোকের কর্ণার কিক থেকে ভেসে আসা বলটিতে অনেক লাফিয়ে উঠে অসাধারণ হেড করেন সাউল। সেটিই জড়িয়ে যায় রিয়ালের জালে। তার আগেই অবশ্য গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। কাশেমিরো দারুণ এক শট নিয়েছিলেন। তবে গোলরক্ষক জ্যান ও’ব্ল্যাকের দৃঢ়তা এ যাত্রায় বেঁচে গিয়েছিল অ্যাটলেটিকো।
চার মিনিট পর আবারও গোল। এবারও এগিয়ে গেলো অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। যদিও এই গোলের দায়-দায়িত্ব ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের। বক্সের মধ্যে তিনি ফাউল করে বসেন ফার্নান্দো তোরেসকে। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়ে দেন। স্পট কিক নিতে আসেন গ্রিজম্যান। কেইলর নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে ঠিকই তিনি রিয়ালের জালে বল জড়িয়ে দেন। দু’দলের গোলের ব্যবধান থাকলো আর মাত্র ১টি।
২-০ গোলে এগিয়ে থাকায় যেন পুরো ভিসেন্তে কালদেরনে বিস্ফোরণ। সমর্থকদের মুহূর্মুহু চিৎকার, স্লোগান আরও উজ্জীবিত করে তুলেছিল অ্যাটলেটিকো খেলোয়াড়দের। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চাপ সামলে নিজেদের গুচিয়ে নিতে হয় কেমনে সেটা জানতো রিয়াল। সে কাজটাই তারা করে দেখিয়েছে।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগেই বাম পাশ থেকে করিম বেনজেমার অসাধারণ একটি পাসে বল পেয়ে সেটিকে অ্যাটলেটিকোর জালে জড়িয়ে দেন ইসকো। এই গোলে দারুণ অবদান বেনজেমার। অ্যাটলেটিকোর তিনজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে তিনি বল দেন টনি ক্রুসকে। তার শট প্রথমে ঠেকিয়ে দেন ও’ব্ল্যাক। ফিরতি বলটিই জালে জড়িয়ে দেন ইসকো।
এই এক গোলেই স্বপ্ন শেষ অ্যাটলেটিকোর। কারণ, হিসাব অনুযায়ী এই একটি গোলই দুই গোলের সমান। কারণ, দু’দলের গোল সমান হলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবিধাটা নিয়ে নেবে রিয়াল। তখন, অ্যাটলেটিকোকে আরও এক গোল বেশি করাছাড়া উপায় নেই! শেষ পর্যন্ত তারা সেটা পারেওনি। ম্যাচ শেষে ২-১ গোলে বিজয়ী দলের নাম অ্যাটলেটিকো। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ।
আইএইচএস/