বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে প্রথম জয় আবাহনীর
একটি লাল কার্ডই যেন তাতিয়ে দিয়েছিল প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেডকে। এএফসি কাপের বর্তমান রানারআপ এবং গ্রুপের টপ ফেবারিট বেঙ্গালুরু এফসির বিপক্ষে ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে যেন জ্বলসে উঠলো বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা। ৮০ মিনিটে ডিফেন্ডার নাসির চৌধুরীকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেয়ার পরই আবাহনী ম্যাচ থেকে বের করে দিলো বেঙ্গালুরু এফসিকে। ভারতের ক্লাবটিকে ২-০ গোলে হারিয়ে এএফসি কাপে প্রথম জয় পেয়েছে আবাহনী।
বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে আবাহনী হারাো অতিথি দলটিকে। টানা তিন ম্যাচ হারের পর আবাহনী দেখলো জয়ের মুখ। আর তিন ম্যাচ জয়ের পর প্রথম হারের তেঁতো স্বাদ নিলো বেঙ্গালুরু।
ঘরের মাঠে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের কাছে হার দিয়ে এএফসি কাপ শুরু করা আবাহনী পরের দুই ম্যাচ হারে ভারতের মোহনবাগান ও বেঙ্গালুরুর কাছে।
হারের হ্যাটট্রিকের পর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়নরা দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিল গ্রুপের সেরা ক্লাবটিকে হারিয়ে। তাও আবার ১০ জনের দল নিয়ে। ৮০ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পয়ে আবাহনীর অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী মাঠ ছাড়লে স্বাগতিকদের কোচ দ্রাগো মামিচের কপালে বড় হয় দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ১০ জনের আবাহনীর বিপক্ষে ঝটিকা কয়েকটি আক্রমণও করেছিল অতিথি দলটি; কিন্তু দুই তরুণ ফরোয়ার্ড বদলি সা‘দ উদ্দিন ও রুবেল মিয়ার দর্শনীয় দুই গোল বেঙ্গালুরুর কপালে এঁকে দেয় পরাজয়ের চিহ্ন।
ক্রোয়াট কোচ দ্রাগো মামিচ নিজেও হয়তো ভাবেননি লালকার্ডে দলটি ছোট হওয়ার পর এতটা তেতে উঠবে। পুরো ম্যাচেই ছিল আবাহনীর প্রাধান্য। প্রথমার্ধেও পেয়েছিল গোটা দুয়েক ভালো সুযোগ; কিন্তু ফিনিশিংটা হচ্ছিল না। আবাহনী এগিয়ে যায় ৮৭ মিনিটে। প্রতি আক্রমণ থেকে বল পান ইংলিশ ফরোয়ার্ড জোনাথন। ডান দিক দিয়ে বেঙ্গালুরুর সীমানায় ঢুকে গোলমুখে মাপা ক্রস দেন জোনাথন। বদলি সা’দ উদ্দিন চলন্ত বলে পা লাগিয়ে কাঁপিয়ে দেন বেঙ্গালুরুর জাল। অতিথি দলটির গোলরক্ষক আমরিন্দরের সে শট ফেরানোর কোনো উপায়ই ছিল না।
নির্ধারিত সময় শেষে গ্যালারির দর্শকরা যখন শেষ বাঁশির অপেক্ষায় তখন মরণ কামড় দিয়েছিল বেঙ্গালুরু এফসি। অন্তত একটি পয়েন্ট নিয়ে ঘরে ফিরতে মরিয়া দলটির গোলরক্ষক আমরিন্দরও তখন আবাহনীর সীমানায়। আবাহনী রক্ষণ দেয়ালে সে আক্রমণ বাধা পেলে বল পেয়ে যান নাইজেরিয়ান এমেকা ডার্লিংটন। তিনি বেঙ্গালুরুর গোলরক্ষককে কাটিয়ে বলটি ঠেলে দেন রুবেল মিয়ার কাছে। রুবেল কয়েক গজ এগিয়ে দুরপাল্লার শটে বল পাঠিয়ে দেন বেঙ্গালুরুর জালে।
বেঙ্গালুরুর মাঠ থেকে আবাহনী হেরে এসেছিল ২-০ গোলে। ঘরের মাঠে সেই হারের মধুর প্রতিশোধই নিলো দ্রাগো মামিচের শিষ্যরা। আবাহনীর বাকি দুই ম্যাচের একটি ঘরের মাঠ মোহনবাগানের বিপক্ষে। অন্য ম্যাচটি মাজিয়ার সঙ্গে মালদ্বীপে। বাকি দুই ম্যাচ জিতলে সেরা রানার্সআপ হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার কিঞ্চিত সম্ভাবনা জাগবে আবাহনীর সামনে।
আরআই/আইএইচএস/এমএস