আজই বেতন বাড়ার সুসংবাদ পাবেন মাশরাফিরা
ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট মানে প্রিমিয়ার লিগ খেলে গড় পড়তা লাখ পঞ্চাশের মত মেলে। বিপিএলেও প্রায় এমন অর্থই পান। এর বাইরে মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মুশফিকুর রহীমদের মাসিক বেতন কত? টেস্ট অধিনায়ক ও সীমিত ওভারেরর অধিনায়ক এমনিতে এ+ ক্যাটাগরিতে বেতন পান। যে ক্যাটাগরিতে তাদের মাসিক বেতন আড়াই লাখ টাকা।
খালি চোখে মনে হবে অনেক। তবে ক্রিকেট দুনিয়ার অন্য আট-দশটি দেশের ক্রিকেটারের তুলনায় তা কম। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের তুলনায়তো অবশ্যই কম। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য তিন টেস্ট খেলিয়ে দেশের মধ্যে ভারতের বেতনভুক্ত ক্রিকেটারদের সঙ্গে তুলনার প্রশ্নই আসে না। অর্থনৈতিকভাবে অনেক সমৃদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেটারদের বেতন অনেক বেশি। সে তুলনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বেতন অনেক কম। এমনকি তলানিতে থাকা জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটারদের চেয়েও মাসিক বেতন কম বাংলাদেশের মাশরাফি, মুশফিক, তামিম ও সাকিবদের।
মুখ ফুটে কিছু না বললেও এ নিয়ে বোর্ডের বেতনভুক্ত ক্রিকেটারদের আক্ষেপ আছে। তবে এবার হয়তো সে আক্ষেপ কাটবে। অবশেষে ক্রিকেটারদের বেতনের কমতি পোষাতেই মাসিক বেতন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। আর সব কিছু ঠিক মত চললে হয়তো আজ (শনিবার) বিকেলের মধ্যেই বেতন বাড়ার সুখবর পেতে পারেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা।
শনিবার বোর্ড পরিচালক পর্ষদের সভার অন্যতম আলোচ্যসূচি এটা। জাতীয় দল পরিচর্যা-পরিচালনা এবং তত্বাবধান যে কমিটির ওপর ন্যাস্ত, সেই ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান আকরাম খান আগেই জানিয়ে রেখেছেন ক্রিকেটারদের বেতন বাড়ছে নিশ্চিত। তবে কি হারে এবং কত টাকা করে বাড়বে? তা বোর্ড পরিচালক পর্ষদের সভায় ঠিক হবে। আজ শনিবারই সে সভা।
জানা গেছে ক্রিকেটারদের বেতন বাড়াতে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপনসহ অন্যান্য শীর্ষ কর্তা ও পরিচালকরাও নীতিগতভাবে রাজি। বোর্ডের অভ্যন্তরে গড় পড়তা ৩০% বেতন বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা চলছে। আর বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছেন প্রতি ক্যাটাগরিতে ৩০% বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব আছে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি থেকে।
সে ক্ষেত্রে এ+ ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের মাসিক বেতন বেড়ে সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকার ভেতরে হবার সম্ভাবনা প্রবল। তার মানে এ ক্যাটাগরির বেতন দাঁড়াবে আড়াই থেকে তিন লাখ। বি ক্যাটাগরির হবে দুই লাখের বেশি। সি ক্যাটাগরির ক্রিকেটাররাও তখন দেড় লাখের ওপরে পাবেন। আর ডি ক্যাটাগরির ক্রিকেটারদের বেতনও হবে সর্বনিম্ন এক লাখ করে।
মাসিক বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রিকেটারদের টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই উ্ইনিং বোনাসও নতুন ভাবে ঠিক করা হবে। তবে উইনিং বোনাস একরকম নয়। সেটা ঠিক করা হয় টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি র্যা ঙ্কিংয়ের ওপর ভিত্তি করে। শীর্ষ তিন দলের কারো সঙ্গে জিতলে যে পরিমাণ অর্থ মেলে, জিম্বাবুয়েকে হারালে তার চেয়ে অনেক কম দেয়া হয়। তারপরও সামগ্রিকভাবে ২০ থেকে ২৫% উইনিং বোনাস বৃদ্ধির কথা শোনা যাচ্ছে।
এদিকে মাসিক বেতন, উইনিং বোনাসের অর্থ নির্ধারণের পাশাপাশি আজকের বোর্ড সভায় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারের সংখ্যা ও তাদের ক্যাটাগরি নির্ধারণও করা হবে। জানা গেছে আগের বছরের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্তত তিনজন এবার বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির বাইরে পড়ে যাচ্ছেন। তারা হলেন নাসির হোসেন, আরাফাত সানি ও আল-আমিন হোসেন। এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ ও শুভাশীষ রায় চৌধুরী এবার নতুন করে বোর্ডের চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছেন এবার মানে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে বোর্ডের চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা হবে ১৮।
এআরবি/এমআর/এমএস