লঙ্কানদের ২৮০ রানের মধ্যে বেঁধে রাখতে চান মাশরাফি
বৃষ্টিতে দ্বিতীয় ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় লাভ-ক্ষতি যাই হোক না কেন, একটি সংশয় কিন্তু জন্ম নিয়েছে। ঐ ম্যাচের এক অংশে ব্যাটিং করা শ্রীলঙ্কা ৩১১ রানের বড় সড় স্কোর গড়ে খানিক চিন্তায় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ ভক্তদের। প্রথম ম্যাচের অমন আলো ঝলমলে টিম পারফরমেন্সে দারুণ উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন টাইগার সমর্থকরা।
তারপর দ্বিতীয় ম্যাচে একটি বল মাঠে না গড়িয়ে পণ্ড হলে হয়তো ভক্ত ও সমর্থকরা আরও একটু চাঙ্গা থাকতেন। তখন বাংলাদেশও ৩২৪ রানের বড় সড় স্কোর গড়ে ৯০ রানের বড় জয়ের সুখ স্মৃতিটাই টগবগ করে ফুটতো। তা নিয়েই হতো যত কথা। মাশরাফির দলও আকাশছোঁয়া মনোবলে মাঠে নামতে পাড়তো।
কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচটি বৃষ্টিতে পণ্ড হলেও কিছু মেঘ কিন্তু জমেই আছে। সেটা সমর্থকদের মনে। ঐ ম্যাচে উপল থারাঙ্গার দল ৩১১ রানের বড় সড় স্কোর গড়ে বসায় কারো কারো মনে সংশয় সন্দেহের কালো মেঘ জমেছে। একটা অন্যরকম চিন্তারও উন্মেষ ঘটেছে। যত অনভিজ্ঞ ও অপরিপক্ক দল বলা হোক না কেন, থারাঙ্গা, কুশল মেন্ডিস চান্দিমাল, গুনারত্নে ও থিসারা পেরেরারা একদম দুর্বল ও কমজোরি নন। তাদেরও সামর্থ্য আছে ভালো কিছু করার। ৩০০ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবার।
কুশল মেন্ডিসের সেঞ্চুরি আর অধিনায়ক উপল থারাঙ্গার আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং এবং শেষ দিকে গুনারত্নের ঝড়ো উইলোবাজি খানিক চিন্তার কারণ। তাই তো শেষ ম্যাচের আগে কারো কারো মনে প্রশ্ন, কি জানি শেষ ম্যাচেও না আবার অমন বড় সড় টার্গেট তাড়া করতে হয়। ভক্ত সমর্থকরা খানিক চিন্তিত।
তবে ভক্তদের জন্য আশাবাদী হবার মত খবর আছে। অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজার মাথায় ঠিক আছে, লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের আর কিছুতেই ৩০০ করতে দেয়া চলবে না। তিনি ঐ বিষয়টিকেই খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন। সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচে তার লক্ষ্য-পরিকল্পনার একটা বড় জায়গা জুড়ে আছে, কোন ভাবেই লঙ্কানদের ৩০০ করতে না দেয়া।
কালকের (শনিবার) ম্যাচের ২৪ ঘন্টা আগে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে প্রেস কনফারেন্স হলে জনাকীর্ণ সংবাদ সন্মেলনে ঠিক ঐ বিষয়টিই চিহ্নিত করেছেন টাইগার অধিনায়ক। বার তিনেক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য অবশ্যই জয়।
জিততে পারলে খুবই ভালো লাগবে। কিন্তু তার জন্য আমাদের খুব ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। আপনি যদি শেষ ম্যাচ দেখেন, ওরা কিন্তু তিনশ ছাড়ানো স্কোর গড়েছিল। অবশ্যই উইকেটও খুব ভালো ছিল। আমাদের হয়তো ওখান থেকে আর ও ২০/২৫ রান কমানোর চেষ্টা করতে হবে। যেখানে তিনশ রান হয় সেখানে আমাদের চেষ্টা করতে হবে যেন ২৮০ রানের ভেতর রাখা যায়।
শ্রীলঙ্কাকে ২৭০-২৮০`র ঘরে রাখতে পারলে আমাদের জন্য কাজটা সহজ হবে। বারবার বলছি, পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে। লঙ্কানদের ২৮০`র মধ্যে আটকে রাখা আমাদের গেম প্ল্যানের অন্যতম বড় অংশ। সে কাজটা করতে না পারলে খুব কঠিন হবে।’
মাশরাফি আরও যোগ করেন, ইতিহাস বলে, এই মাঠে গড় সংগ্রহ ২৭০/২৮০ রান। তার মানে এখানে তিনশ রানের ওপরে স্কোর হতে পারে। আমি মনে করি, তার জন্য ছেলেদের মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে। কিন্তু আমরা যদি লঙ্কানদের ৩০০ থেকে অন্তত ২০-২৫ রান পেছনে আটকে রাখতে পারি, তাতে ব্যাটসম্যানদের রান তাড়া করা সহজ হবে।’
টাইগার অধিনায়ক আবারো বেশ আত্মবিশ্বাসের সুরেই বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি ৩১১ রান তাড়া করে জেতা সম্ভব ছিল। কারণ উইকেট ছিল খুবই ব্যাটিং সহায়। এ পিচে ৩১২ রান করা খুব কঠিন ছিল না।’ কিন্তু পরোক্ষণে এটাও বলেছেন, তারপরও ৩০০ রান সব সময়ই একটা চাপ। সেই চাপমুক্ত থেকে পাল্টা ব্যাটিংয়ে নামার দাওয়াই হলো লঙ্কানদের ২৭০ থেকে ২৮০`র ভেতর আটকে রাখা।’
আর সেই কাজটি করতে হলে অধিনায়ক মাশরাফিকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি কি তা পারবেন?
এআরবি/এমআর/পিআর