মাশরাফির হাঁটুর সেই ব্যান্ডেজ
একজন ক্রীড়াবিদের হাঁটুতে দুবারের বেশি তিনবারও যদি অস্ত্রোপচার করা হয়, তাহলে তার নাকি আর খেলার মতো সামর্থ্যই থাকে না। চীরদিনের জন্য চলে যেতে হয় মাঠের বাইরে; কিন্তু মাশরাফি বিন মর্তুজার কথা কী বলবেন? ছোট-বড় মিলিয়ে তার হাঁটুতে অন্তত ১১ বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবুও দিব্যি খেলে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের রঙিন জার্সির অধিনায়ক।
অদম্য মানসিক শক্তি নিয়ে এখনও মাঠের সবচেয়ে লড়াকু ক্রিকেটার মাশরাফি। বাংলাদেশকে আজকের এ পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান এই মাশরাফির। ২০১৪ সালে যখন বাংলাদেশ দল একের পর এক পরাজয়ের বৃত্তে বন্দি, তখন রঙিন জার্সির দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় তার কাঁধে।
২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দায়িত্ব নেয়ার পর মাশরাফি যেন আমূল বদলে দিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ দিয়ে শুরু। এরপর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয় এসেছে কেবল মাশরাফির তুখোড় নেতৃত্ব দিয়েই।
অথচ এ মাশরাফিকে এখনও মাঠে নামার আগে আধঘণ্টার বেশি সময় নিয়ে হাঁটুতে ব্যান্ডেজ বাঁধেন তিনি। নিজ হাতে সিরিঞ্জ দিয়ে টেনে বের করেন হাঁটুতে জমে থাকা পানি। ওই সময়টাতে তার কষ্টের কথা যেভাবে বর্ণনা করা হয়, তা দেখলে যে কারও চোখের পানি চলে আসার কথা। তবুও দেশের টানে খেলে যাচ্ছেন মাশরাফি। শুধু খেলে যাওয়াই নয়, প্রতিটি ম্যাচেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। শুরুতেই এনে দিচ্ছেন ব্রেক থ্রু। তার অসাধারণ নেতৃত্বে আসছে জয়।
মাশরাফির হাঁটুর করুণ গল্প অনেক শোনা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বর্ণনা করেছেন; কিন্তু ভক্ত-সমর্থকরা কখনও নিজেদের চোখে দেখেননি তাদের প্রিয় ক্রিকেটারের হাঁটুর কী অবস্থা। অবশেষে সেটাও দেখার সৌভাগ্য হলো মাশরাফি ভক্তদের।
ডাম্বুলার রণগিরি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ম্যাচ চলাকালে প্রথম স্পেলে যখন মাশরাফি বোলিং করছিলেন, তখন একপর্যায়ে দেখা গেল তার হাঁটুতে বাঁধা বন্ধনী ঢিলা হয়ে গেছে। ওই সময় ফিজিওর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ম্যাশ। তিনি তখন ট্রাউজারের প্রান্ত উপরের দিকে তুলে পুরো হাঁটু বের করে রাখেন। ওই সময়ই দেখা গেল, বন্ধনীর নিচে ব্যান্ডেজে বাঁধা হাঁটু।
ফিজিও মাঠে নেমে অবশেষে নতুন বন্ধনী দিয়ে মাশরাফির হাঁটু বেঁধে দেন এবং আবার বোলিং শুরু করেন টিম বাংলাদেশের অধিনায়ক।
আইএইচএস/