কলম্বো শহরের প্রাণকেন্দ্রে অনিন্দ্যসুন্দর ভেন্যু!
বাংলাদেশে বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় কোনো ভিনদেশি টেস্ট দলের ওয়ার্ম আপ ম্যাচ মানেই ফতুল্লার খান সাহেব ওসামান আলী স্টেডিয়াম, না হয় বিকেএসপি মাঠ। দুটাই ফার্স্ট ক্লাস ভেন্যু। ঢাকা লিগ, জাতীয় লিগ ও বিসিএল, সব আসরেরই খেলাই হয়।
কিন্তু এর বাইরে রাজধানী ঢাকায় আরও কিছু ক্রিকেট মাঠ আছে, যেগুলোকে অনায়াসে প্রথম শ্রেণির ভেন্যু করা যায়। ধানমন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর সিটি ক্লাব কিংবা জগন্নাথ হল মাঠ হতে পারে প্রথম শ্রেণির ভেন্যু। যেখানে অনায়াসে বিদেশি দল আসলে গা গরমের ম্যাচও আয়োজন করা যায়।
তা যে সম্ভব, তার আদর্শ উদাহরণ হতে পারে আজ টাইগারদের প্রস্তুতি ম্যাচের ভেন্যু কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব। লঙ্কান মিডিয়া ম্যানেজার দিনেশ জানান, এ মাঠে ক্লাব ক্রিকেট ও ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট হয় নিয়মিত। আকার আয়তনে একদম ধানমন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সিটি ক্লাব ও জগন্নাথ হল মাঠের চেয়ে বড় হবে না। অথচ একদম পরিপাটি সাজানো গোছানো। সুন্দর সবুজ আউটফিল্ড। চমৎকার উইকেট। একদম ব্যাটিংবান্ধব। বল ব্যাটে আসে । নিচু হয় না। আবার বিপজ্জনকভাবে লাফিয়েও ওঠে না। স্বাচ্ছন্দ্যে খেলার শতভাগ উপযোগী পরিবেশ।
শহরের প্রাণকেন্দ্রে কি সুন্দর মাঠ! সব রকমের আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা, ড্রেসিং রুম, প্যাভিলিয়ন সবই আছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই বাহুল্য কিংবা অতিমাত্রায় আধুনিকতার ছোঁয়া নেই। একটা চিরায়ত ধারা অনুসরণের চেষ্টা আছে। বাংলাদেশের সাংবাদিকদের বসতে দেয়া হলো কলম্বো জিমখানা ক্লাব প্যাভিলিয়নে। একদম ব্রিটিশ স্থাপত্বে গড়া। কোনো আধুনিকতার ছোঁয়া নেই। সিঁড়ি থেকে শুরু করে সব কিছু আগের আমলের। ছাদ পাকা নয়। টালি। সুন্দর গোছানো। কোথাও দামি ফোমের কিংবা চামড়ার সোফার দেখা মিলবে না। সব কাঠের চেয়ার। কোনো শীতাতপ ব্যবস্থা নেই। মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে।
কিন্তু একদম ইংলিশ ক্লাবগুলোর মতো। ওই প্যাভিলিয়নের কাউন্টারেই সব ধরনের খাবারের ব্যবস্থা আছে। অর্ডার দেয়া মাত্র মিলছে সব। চিরায়ত লঙ্কান খাবার, স্যান্ডউইচ, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চা-কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস থেকে শুরু করে বিয়ার হার্ড ডিঙ্কসও আছে। এ ভবনটি অবশ্য কলম্বো জিমখানা ক্লাবের ছিল। এখন যা কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব নামেই পরিচিত। এর বাইরে কোথাও কোনো গ্যালারি নেই। মাঠের প্রায় চারদিকেই গাছ। সেই গাছের নিচে বসে খেলা দেখা যায়। এ প্রচণ্ড গরমেও অন্তত শ পাঁচেক ক্রিকেট অনুরাগীর দেখা মিলল।
এদিকে প্রস্তুতি এ ম্যাচ দেখতে শ্রীলঙ্কান ম্যানেজার অশাঙ্ক গুরুসিংহে, প্রধান নির্বাচক সনাৎ জয়সুরিয়া আর কালুভিথারানা মাঠে উপস্থিত হন। তারাও বাংলাদেশের সাংবাদিকদের পাশে বসেই খেলা দেখেন। এর আগে লঙ্কান বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডের অন্যতম সদস্য এবং সাবেক শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক রোশান মহানামাও খেলা দেখতে এসে সকালে বাংলাদেশের কোচ হাথুরুসিং আর ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবীরার সঙ্গে অনেকক্ষণ আড্ড দেন।
এআরবি/এমআর/এমএস