বাংলাদেশের জয়ে বাধা পেরেরা-লাকমাল
ভাগ্যটা শ্রীলঙ্কার ভালোই বলতে হবে। যে ক’বার রিভিউ নিয়ে কিংবা আউটের সম্ভাবনার বলে বেঁচে গেছে, তাতে অন্তত দু’বার অলআউট হতে পারতো লঙ্কানরা। বাংলাদেশের বোলারদের দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং, মোস্তাফিজের আউট সুইং-ইন সুইং, স্পিনারদের দারুণ ঘূর্ণির পরও অলআউট হলো না স্বাগতিকরা। এখনও তাদের হাতে রয়ে গেছে ২টি উইকেট। ১৩৯ রানের লিড নিয়ে দিন শেষ করেছে শ্রীলংকা। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৮ রান।
করুনারত্নে আর কুশল মেন্ডিস মিলে ৮৬ রানের জুটি গড়ার সময় মনে হচ্ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে বুঝি বড় কোনো স্কোর গড়ে ফেলবে শ্রীলঙ্কা। তাহলে বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য হয়তো বড় লক্ষ্য স্থির হবে কিংবা ম্যাচ চলে যাবে নিষ্প্রাণ ড্রয়ের দিকে।
কিন্তু ভাগ্য অতি ভালো লঙ্কানদের। বার বার রিভিউতেও বেঁচে যাওয়ার ফলে অলআউট হলো না স্বাগতিকরা। কিংবা রিভিউ বাকি না থাকায় নিশ্চিত আউট হওয়ার বলেও বেঁচে গেছে লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। নবম উইকেট জুটিতে ৮.৪ ওভার ব্যাট করে ৩০ রানের জুটি গড়ে লঙ্কানদের ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছেন দিলরুয়ান পেরেরা এবং সুরঙ্গা লাকমাল।
কুশল মেন্ডিসকে মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে মোস্তাফিজ যে আঘাত হেনেছিলেন, সেটা অব্যাহত রেখেছিলেন তিনি নিজে এবং সাকিব আল হাসান। ফলে, নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা।
কিন্তু দিনের শেষ ভাগে এসে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে অটল পাহাড়ের মত দাঁড়িয়ে যান দিলরুয়ান পেরেরা। টেলএন্ডে ব্যাট করতে এসে তিনি যেন রীতিমত আদর্শ টেস্ট ব্যাটসম্যান। ১২৬ বল খেলে মাত্র ২৬ রান করে এখনও অপরাজিত রয়েছেন তিনি। সুরঙ্গা লাকমাল উইকেটে রয়েছেন ১৬ রান নিয়ে।
তৃতীয় দিন বিকেলেও লঙ্কানদের ইনিংসে আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। চতুর্থ দিন সকালের শুরুতেই উপুল থারাঙ্গাকে ফিরিয়ে লঙ্কান দুর্গে প্রথম আঘাতটা হেনেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর নিজেদের দুর্গ রক্ষায় ভালোই পাহারাদার হিসেবে দাঁড়িয়ে যান দিমুথ করুনারত্নে আর কুশল মেন্ডিস। এ দু’জনের ৮৬ রানের জুটি দারুণ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের সামনে।
তবে, শ্রীলংকার ১৪৩ রানের মাথায় মোস্তাফিজের একটি বল শট খেলতে গিয়েছিলেন কুশল মেন্ডিস। বল ব্যাটের কানা ছুঁয়ে চলে যায় মুশফিকের হাতে। এরপর খুব জোরালো আবেদন না হলেও স্রেফ সন্দেহ বশতঃ রিভিউ চান মুশফিক। তাতেই আউট হয়ে গেলেন মেন্ডিস।
ছন্দটা তখনই যেন ফিরে পেলেন মোস্তাফিজ। একে একে ফিরিয়ে দিলেন দিনেশ চান্দিমাল এবং ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে। মোস্তাফিজের সঙ্গে জ্বলে ওঠেন সাকিব আল হাসানও। অ্যাশেলা গুনারত্নে, নিরোশান ডিকভেলা কিংবা সেঞ্চুরিয়ান দিমুথ করুনারত্নেকে ফিরিয়ে দেন তিনি। বাংলাদেশের সামনে জয়ের হাতছানি দিতে শুরু করে তখন থেকেই।
কিন্তু শেষ দিকে বাংলাদেশের সামনে পথটা লম্বা করে দিলেন দিলরুয়ান পেরেরা আর সুরঙ্গা লাকমাল। এ দু’জনের ৩০ রানের জুটি এবং বার কয়েক রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়ার ঘটনায় চতুর্থ দিন শেষেও ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা। শততম টেস্টে জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকলেও বাংলাদেশের সামনে বড় বাধা এখন পেরেরা এবং লাকমাল।
আইএইচএস/জেআইএম