মাহমুদউল্লাহর জায়গায় ব্যাট করছেন সাব্বির
কলম্বোয় শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি বাংলাদেশ। তবে এমন মাইলফলকের ম্যাচের আগে চারটি পরিবর্তন এনে একাদশ সাজিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আবার ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস। সুতরাং বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং লাইনআপেও এসেছে রদবদল। তবে টেস্ট ক্রিকেটে সাব্বির রহমান চারে খেলবেন এটা অনেকটা বিস্ময়করই। কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটেও প্রথম শ্রেণির ম্যাচে চারে ব্যাটিং করা অভিজ্ঞতা নেই তার।
চারটি পরিবর্তনের অধিকাংশই ছিল ব্যাটিং লাইনআপে। মুমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ ও লিটন দাসের জায়গায় ইমরুল কায়েস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং সাব্বির রহমান। অপর পরিবর্তনটি বোলিংয়ে, পেসার তাসকিনের জায়গায় স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
এমনিতে কিপিং করলে ছয় নম্বরে ব্যাট করেন মুশফিক। কিপিং ছেড়ে দিয়ে তিনি চলে আসেন ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে। গল টেস্ট থেকেই এ পরিবর্তন কার্যকর হয়; কিন্তু কলম্বো টেস্টে যেহেতু উইকেটরক্ষক লিটন নেই এবং প্রথম ইনিংসে প্রায় ১১৪ ওভার কিপিং করেছেন মুশফিক, এ কারণে তিনি চার নম্বরে ব্যাট করতে নামবেন কি না তা ছিল বড় একটি প্রশ্ন।
আবার দলে নেই নিয়মিত তিনে খেলা মুমিনুল হক। তার জায়গায় তিন নম্বরে ইমরুল কাযেস ব্যাট করবেন এটা অনেকটাই জানা ছিলো। হলোও তাই। মাহমুদউল্লাহ যখন দলে ছিলেন, তখন তিনিই ছিলেন চার নম্বরে নিয়মিত ব্যাটসম্যান। মুশফিক চারে উঠে আসার কারণে তার ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনা হয়। এবার যখন মাহমুদউল্লাহও নেই, মুশফিকও কিপিং করেছেন, তখন সবারই আগ্রহের বিষয় ছিল- চার নম্বরে ব্যাট করতে নামবেন কে?
ভাবা হয়েছিলো তার জায়গা পূরণে এক ধাপ উপরে উঠে আসতে পারেন সাকিব। কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করা অভিষিক্ত মোসাদ্দেক সৈকতকেও দেখা যেতে পারে এ পজিশনে; কিন্তু কলম্বোয় আজ সবাইকে অবাক করে দিয়ে সাব্বিরকেই নামানো হলো চার নম্বরে।
টেস্টে অভিষেক হওয়ার পর যে পাঁচটি ম্যাচ খেলেছেন, সবগুলোতেই নিয়মিত সাত নম্বরে ব্যাট করেছেন সাব্বির। গল টেস্টে মুশফিক উইকেটকিপিং ছেড়ে দেয়ার কারণে লিটন কুমারকে জায়গা দিতে গিয়ে সাব্বিরকেই সাইডলাইনে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে সাব্বির আবার করে দলে জায়গা করে নিতে পারেন, সেটাই ছিল তার সামনে বড় প্রশ্ন; কিন্তু পরের টেস্টেই এমন সুযোগ চলে আসবে তার সামনে, তা কেই বা জানতো! শুধু তাই নয়, এক লাফে ব্যাটিং অর্ডারেও উঠে এলেন সাত থেকে চার নম্বরে।
সাব্বির চারে নামায় করায় হয়তো সাত নম্বরেই ব্যাটিং করতে হবে মোসাদ্দেককে। অথচ বড় দৈর্ঘের ম্যাচে এতো নিচে এর আগে কখনোই ব্যাট করেননি তিনি। তবে প্রিমিয়ার লিগে কিংবা ওয়ানডে সংস্করণে দলের হয়ে সাত নম্বরে ব্যাট করার অভিজ্ঞতা আছে সৈকতের।
অথচ ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করা সাব্বির যখন টেস্ট দলে জায়গা পান তখন কোচ-নির্বাচকরা জানিয়েছিলেন দ্বিতীয় নতুন বল ফেস করার জন্য তাকে দলে নেওয়া হয। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামলে সাধারণত দ্বিতীয় নতুন বলের মুখোমুখি হতে হয়। তবে এদিন দ্বিতীয় নতুন বল আসার প্রায় ৩০ ওভার আগেই ব্যাট হাতে উইকেটে নামেন তিনি।
অপর দিকে ঘরোয়া লিগে পেস বলের চেয়ে স্পিন বল ভালো সামলান মোসাদ্দেক। সেখানে লঙ্কানরা যখন স্পিন আক্রমণ চালাচ্ছেন তখন মাঠে নামলেন সাব্বির; যিনি কিনা পেস বল খেলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে উইকেটে নেমে স্বভাবসূলভ ব্যাটিংই করে যাচ্ছেন সাব্বির।
মাহমুদউল্লাহর অফ ফর্মের সুযোগ দলে জায়গা পেয়ে তারই পাজিশনে ব্যাট করতে নামলেন সাব্বির। এখন দেখার বিষয়, তিনি কি মাহমুদউল্লাহর জায়গা পূরণ করতে পারবেন?
আরটি/আইএইচএস/জেআইএম