২০০৯ সালের পরই টেস্টে পরিবর্তন শুরু বাংলাদেশের!
২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির পর বাংলাদেশ ১৬ বছর চার মাস ৬ দিনের ব্যবধানে খেলতে নামছে শততম টেস্ট ম্যাচ। এর মধ্যে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৮টিতে, পরাজয় ৭৬ এবং ড্র করেছে মাত্র ১৫ টেস্টে। জয়ের দিক থেকে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে এগিয়ে থাকলেও পরাজয়ের দিক থেকে সবাইকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ। ৭৬টি ম্যাচে পরাজিত বাংলাদেশ।
মূলতঃ ২০০০ সালে স্ট্যাটাস পেলেও টেস্ট খেলার মানসিকতাই যেন তৈরি হয়েছে ২০০৯ সালের পর। তার আগে বাংলাদেশ খেলতো যেন শুধু পরাজয়ের জন্যই। ২০০৯ সালের আগে মোট ৫৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে জয় পেয়েছিল মাত্র ১টি ম্যাচে। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে জয়ের পর ওই সিরিজটাও জিতেছিল বাংলাদেশ।
২০০৫ সালে ওই টেস্টের আগে এবং ২০০৯ সাল পর্যন্ত পরের সময়টাতে বাংলাদেশ জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুয়েছিল ২০০৩ সালে মুলতান টেস্টে, স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে। পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক রশিদ লতিফের অনৈতিকতা আর ইনজামাম-উল হকের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের কারণে নিশ্চিত জয়ের ম্যাচটি জিততে পারেনি টাইগাররা।
এছাড়া ২০০৬ সালে ফতুল্লায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুণ একটি ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডকেও বলতে গেলে হারিয়েই দিয়েছিল; কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।
তবে ২০০৯ সালের পর বাংলাদেশ টেস্টে সাফল্য পেতে শুরু করে। ব্যাক্তিগত এবং দলীয়ভাবে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের একটা অবস্থানে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। এ সময়ের পর বাংলাদেশ খেলেছে ৪১টি টেস্ট। তাতে জয় পেয়েছে ৭টিতে। ড্র করেছে ১৫টিতে। ২০০৯ সালের জুলাইতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গিয়ে তাদেরকে ২ ম্যাচের পরাজিত করে বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ।
২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশের জয়-পরাজয়ের অনুপাত ছিল ০.০১৯। সেখান থেকে সেই অনুপাত ২০০৯ সালের পর ২০১৭ সাল পর্যন্ত এসে দাঁড়াল ০.২৮ -এ। ২০০৯ সালের আগে এবং পরে ব্যাটিং ও বোলিংয়েও বেশ পার্থক্য বিদ্যমান। ২০০৯ সালের আগে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং গড় ছিল ২০.৫৪ করে। ২০০৯ সালের পর ব্যাটিং গড় বেড়েছে ৪৯ ভাগ। পরের হিসেবসহ সব মিলিয়ে এখন বাংলাদেশের ব্যাটিং গড় দাঁড়াল ৩০.৬৩।
বোলিং গড়েও মোটামুটি উন্নতি হয়েছে। ২০০০ সাল থেকে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৮ টেস্টে বোলিং গড় ছিল ৫১.৩৫ ভাগ করে। ২০০৯ সালের পর ৪১ টেস্টে বোলিং গড় বেড়েছে ৬৭.৫ ভাগ। সব মিলিয়ে এখন বোলিং গড় ৪৫.৮৮।
এরপর মধ্যে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিল মাত্র ১৪টি। ২০০৯ সালের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত সেঞ্চুরি হয়েছে মোট ৩২টি।
দল |
ব্যাটিং গড় |
বোলিং গড় |
গড়ের অনুপাত |
সেঞ্চুরি |
৫ উইকেট |
খেলোয়াড় |
ইংল্যান্ড |
২৪.৬০ |
২২.০১ |
১.১২ |
৫১ |
১০৮ |
১৬০ |
ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
৩৩.২০ |
৩১.৩৩ |
১.০৬ |
১০৮ |
৬৮ |
১২১ |
অস্ট্রেলিয়া |
২৪.৬০ |
২৫.৫৯ |
০.৯৬ |
৫১ |
৯৭ |
১০০ |
পাকিস্তান |
৩০.৭৪ |
৩৪.৩১ |
০.৯০ |
৮০ |
৫২ |
৮০ |
শ্রীলংকা |
২৯.১২ |
৩৬.১৭ |
০.৮১ |
৭০ |
৫৪ |
৮১ |
ভারত |
২৮.৭০ |
৩৭.৪৪ |
০.৭৭ |
৭৪ |
৫৬ |
১১৫ |
দক্ষিণ আফ্রিকা |
২৫.০৭ |
৩৩.৭৯ |
০.৭৪ |
৫৫ |
৬৪ |
১৭০ |
জিম্বাবুয়ে |
২৬.২২ |
৩৮.৯৯ |
০.৬৭ |
৫৩ |
৩৫ |
৯৯ |
নিউজিল্যান্ড |
২৩.৬৪ |
৩৬.১২ |
০.৬৫ |
৩৯ |
২৭ |
১২২ |
বাংলাদেশ |
২৪.৫৩ |
৪৮.৬৪ |
০.৫০ |
৪৬ |
৪৫ |
৮৫ |
আইএইচএস/জেআইএম