আত্মহত্যার মিছিলে নেমেছিল বাংলাদেশ
আমি খুবই হতাশ। এমন বাজে ব্যাটিং হবে; কল্পনাও করিনি। কাল এমন একটা দিন পার করার পর আজকের দিনটা কোনোভাবেই মানা যায় না। আমি বুঝতেই পারলাম না- কিভাবে কি হলো। আর কেনই বা হলো। উইকেটে এমন কিছুই আমি দেখলাম না। মনে হলো, আত্মহত্যার মিছিলে নেমেছিল বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা বরাবরই খারাপ খেলি। তবে ভালো যে খেলিনি কখনো তা কিন্তু না। আর এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই তো চতুর্থ ইনিংসে আমাদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। আর এ গলের মাঠে এর আগের ম্যাচে ড্র করেছিলাম দাপট দেখিয়েই। তাই আমি ভাবেছিলাম এবারও ভালো করবে বাংলাদেশ। ড্রই হবে এর ফলাফল।
হারও মানা যায়। তাই বলে এভাবে! কমপক্ষে শেষ সেশনের শেষ পর্যন্ত খেলতে পারলে একটা কথা ছিল। সেখানে দেড় সেশনও ঠিকভাবে খেলতে পারল না। প্রথম সেশনেই নেই পাঁচজন। আমার তো মনে হয়, যারা রাতে একটু বেশি জাগে তারা সকালে উঠেই দেখেছে তিন/চার উইকেট নেই।
আগের দিনই বলেছিলাম উইকেট কিন্তু ভাঙেনি। তার মানে, ওদের স্পিনাররা উইকেট থেকে কোনো ফায়দা তুলতে পারবে না। আর আজকে তেমনটাই হয়েছে। এখনও এ উইকেট ব্যাটিং করার জন্য উপযোগী। ধারাভাষ্যেও দেখলাম সবাই একই কথাই বারবার বলছে। তারপরও দেখলাম না কেউ ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করতে।
আজকে জয়ের জন্য আমাদের মনে হয় ৩৯০ দরকার ছিল। এটা তো অসম্ভবই ছিল। ড্রই তো স্বাভাবিক ফলাফল হওয়ার কথা। তাহলে কেন ওরা মেরে খেলতে গেলো। ওরা কি জয়ের চিন্তা করেছিল? সৌম্য, মুমিনুল আর মাহমুদউল্লাহর আউট দেখে তো আমার তা-ই মনে হয়েছে।
প্রতিদিনের মতো আজকেও সেই মুশফিককেই দেখলাম একটু ধৈর্য ধরে ব্যাটিং করতে। কিন্তু ও যে বলে আউট হলো সেটাও এক রকম আত্মহত্যার মতোই। কারণ বল স্ট্যাম্প থেকে প্রায় ফুটখানেক লেগেই ছিল। তারপর কেন ওই বল খেলতে গেল। ওই বলটা সহজেই ছেড়ে দিতে পারতো। তারপরও ও একা আর কী করবে!
আগের দিনই বলেছিলাম এ টেস্ট ড্র করতে হলে সম্মিলিত চেষ্টার দরকার। সবারই অবদান রাখতে হবে। যে সুযোগ পাবে তাকে বড় ইনিংস খেলতে হবে। সৌম্য বারবারই হাফ সেঞ্চুরির পর আউট হয়ে যাচ্ছে। লিটনও ভালো খেলছিল। হঠাৎ অযথাই একটা শট করে ধরা খেল। এ আগ্রাসী মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তবে মারবে না; তা কিন্তু না। মারার বল পেলেই মারতে হবে। এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
তবে ধৈর্যের অনুশীলন কিন্তু ওই ঘরোয়া লিগ থেকেই করতে হয়। আমাদের দল কিন্তু তত বেশি ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে না। বিশেষ করে বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ। জাতীয় লিগ, বিসিএলের পাশাপাশি ‘এ’ দলের কার্যক্রম বাড়ালেই খেলোয়াড়রা এ সংস্করণ কিভাবে খেলতে হয় তা শিখবে। তা না হলে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির ছোঁয়া টেস্ট ক্রিকেটে থেকেই যাবে। আর বারবার আমাদের এভাবে আশাহত হতে হবে।
আরটি/এনইউ/আরআইপি