লঙ্কানদের ৫০০‘র নিচে বেঁধে রেখে সন্তুষ্ট বাংলাদেশ!
আগের দিন তো মেহেদী হাসান মিরাজ কথা বলেছিলেন। আজ দ্বিতীয় দিন খেলা শেষে বাংলাদেশ দলের হয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে আসবেন কে?
শেষ সেশনেই গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের জন্য নির্ধারিত কক্ষে প্রশ্ন, গুঞ্জন। এ গুঞ্জন এত প্রবল হতো না, যদি মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম থাকতেন। অজানা কারনে শ্রীলঙ্কা সফরে দলের সঙ্গে নেই রাবিদ ইমাম।
তার না থাকায় বাংলাদেশ মিডিয়াকে প্রতিনিয়তই কোন না কোন ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে সরণাপন্ন হতে হচ্ছে লঙ্কান মিডিয়া ম্যানেজার দিনেশ রতসিঙ্গমের। যার কর্মতৎপরতা নিয়ে রীতিমত একটা বড় ধরনের সংশয়-সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
সেই লঙ্কান মিডিয়া ম্যানেজার দিনেশ এসে জানতে চাইলেন, আজ খেলা শেষে আপনারা কার সঙ্গে কথা বলতে চান। ততক্ষণে তামিম ও মুমিনুল আউট হয়ে গেছেন। মোস্তাফিজের কথাও বলেছিলেন কেউ কেউ। তবে বড় অংশর পক্ষ থেকে বলা হলো, কোচ হাথুরুসিংহে হলেই ভাল হয়। ম্যাচে বাংলাদেশ কোথায় দাঁড়িয়ে হেড কোচ তার জবাব ভাল দিতে পারবেন। লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথাও শোনাতে পারবেন।
শেষ পর্যন্ত খেলা শেষে অবশ্য বাংলাদেশের লঙ্কান বংশোদ্ভূত কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেই আসলেন। সদেশি সাংবাদিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্যতা ও কুশল বিনিময়ের পর বসলেন নির্দিষ্ট চেয়ারে।
এটুকু জেনে নিশ্চয়ই মনে নানা প্রশ্ন জাগছে। কেমন দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ কোচকে? চিন্তিত? হতাশ, নাকি আশাবাদী? এসবের একটাই জবাব, কোচ হাথুরুসিংহে মোটেই হতাশ নন। চোখে মুখে চিন্তার রেখাও নেই।
পরিষ্কার বোঝা গেল ভিতরে ভিতরে সামনের দিনগুলোর লক্ষ্য-পরিকল্পনা আঁটছেন। কথা বার্তার ধরন ও শরীরি অভিব্যক্তি দেখে মনেই হয়নি ভিতরে হারের চিন্তা বা শঙ্কা বলে কিছু আছে। বরং তাকে বেশ ফুরফুরে লাগল।
প্রেস কনফারেন্সে লঙ্কান ও বাংলাদেশি সাংবাদিকের সাথে কথোপকোথনের এক পর্যায়ে বলেই দিলেন আমি একটু আধটু বাংলাও শিখেছি। তার প্রমাণ হিসেবে মিডিয়া সেশন শেষে উঠে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ থেকে এ সিরিজ কভার করতে আসা সাংবাদিকদের পরিষ্কার বাংলায় জানালেন ‘ধন্যবাদ’।
অনেক কথার ভীড়ে হাথুরুর মুল সুরটা এমন, দারুন জবাব দিচ্ছিলাম আমরা। তামিম ও সৌম্য কী দারুণ খেলছিল। পড়ন্ত বিকেলে তামিমের আউটটাই সব মাটি করে দিল। না হয় আমরাও খুব ভাল অবস্থায় শেষ করতে পারতাম।’
বাংলাদেশ কোচের অনুভব, তার দল এখনো সমান সমান অবস্থায়ই আছে। দ্বিতীয় দিন সম্পর্কে তার মূল্যায়ন, ‘আমার মনে হয় আজকের দিনটিতে দু দল সমান সমান। যদিও এখনো আমাদের অনেকটা পথ যেতে হবে। এখনই কোনো চরম মন্তব্য না করাই ভাল। সেটা একটু শিগগিরই হয়ে যাবে। আমাদের রান এখন মাত্র ১৩৩। আরও ৩৬০-এর বেশি রানে পিছিয়ে আছি। আমার মনে হয় উইকেট এখনো ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভাল আছে।’
প্রথম ইনিংসে লঙ্কানদের প্রায় ৫০০ রান করে ফেলা, জবাবে তামিম ও সৌম্যর প্রথম উইকেটে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ১১৮ রানের রেকর্ড জুটি গড়েও দিন শেষে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলিং, ফিল্ডিং ও ব্যাটিং পারফরমেন্সে কোচের অনুভুতি কী?
তিনি কি সন্তুষ্ট, না অসন্তোষের আগুনে জ্বলছেন? প্রেস কনফারেন্সে উঠল এমন প্রশ্নও। হাথুরুর সোজা-সাপটা জবাব, ‘এমন ফ্ল্যাট ও নির্ভেজাল ব্যাটিং ট্র্যাকে টস হারার পর স্বাগতিক দলকে ৫০০র নীচে বেঁধে রাখাকে আমি ভাল বলেই মনে করি।’
এআরবি/আইএইচএস/পিআর