তামিমের আউটে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছিলাম
দারুণ একটা জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। সত্যি বলতে কি, আমি এমন ব্যাটিংই আশা করেছিলাম। সেটাই ওরা করেছে। তবে তামিমের আউটটাতেই আমি আসলে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছি। কীভাবে কি হলো বুঝতেই পারলাম না। ও আউট না হলে দিনশেষে হয়তো আমাদের হাতে ১০টি উইকেটই থাকতো। আর মুমিনুল সোজা বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়লো। এ দুটো আফসোস ছাড়া সারাটা দিন আমাদের খুবই ভালো কেটেছে।
সকালে ওদের আমরা দ্রুত অলআউট করতে পেরেছি। কাল যেভাবে ব্যাটিং করেছিল, তাতে আমি একটু ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। আমাদের বোলাররা দারুণ বোলিং করেছে। বিশেষ করে পেসাররা। যদিও আজকে উইকেট মিরাজই বেশি পেয়েছে। ৪টা উইকেট নিয়েছে; কিন্তু পেসাররা দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে। এ কারণে মিরাজকে মারতে গিয়ে উইকেট দিয়েছে ওরা। আজকে সম্ভবত ১৭৩ রান করেছে ওরা। বাকি ৬টি উইকেট তুলে নিতে পেরেছি এর মধ্যে। বোলাররা তাদের কাজ করেছে। এখন ব্যাটসম্যানদের পালা।
তবে ফিল্ডিংটা আমার একটু এলোমেলো লেগেছে। এখানে আমাদের আরও অনেক কাজ করার বাকি আছে। ফিল্ডিং একটা দলকে পুরো ঘুরিয়ে দিতে পারে। যেমন আজকে চমৎকার দৃশ্য ছিল তামিম ইকবালের ক্যাচটা। সত্যিই দারুণ। এমন ফিল্ডিং সবসময়ই ওর কাছ থেকে আমরা আশা করি। অথচ ওই ক্যাচটা না ধরতে পারলে কিন্তু অন্যরকম দিন হতে পারতো। কারণ এর আগেই মোস্তাফিজও এমন একটি ক্যাচ ধরতে গিয়ে উল্টো ছয় বানিয়ে দিয়েছে। তাই ফিল্ডিংয়ে অনেক গুরুত্ব দিতে হবে। আরও আক্রমণাত্মক হতে হবে।
উইকেটে এখনও কোন টার্ন নেই। তার মানে আগামীকাল উইকেট ভাঙ্গার সুযোগ কম। আমাদের কালকের পুরো দিনটা ব্যাটিং করতে হবে। মূল কথা, ম্যাচ বাঁচাতে হলে কালকের পুরো দিনে ব্যাটিং করা ছাড়া কঠিন হয়ে যাবে। কারণ আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে সবসময় একটু নড়বড়ে থাকি। তবে তামিম যদি তখন ওই রানআউটটা না হতো তাহলে খুব সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতাম। তাহলে কাল পুরো দিন ব্যাট করে পরশু একটা দুইটা সেশন খেলার আশাটা বেশি থাকতো। এখনও সম্ভব। সে সামর্থ্য ওদের আছে। দায়িত্ব নিয়ে একটু ধীরে ব্যাটিং করলে খুবই সম্ভব।
সৌম্য আজকে ভাগ্যবান ছিল। শুরুতেই একটা জীবন পেয়েছে। এখন এ জীবনকে কাজে লাগাতে হবে। ইতোমধ্যে সে আস্থা দেখিয়েছে র। জীবন পেয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছে স্বাচ্ছন্দ্যেই। ওদের যেমন মেন্ডিস ১৯৪ রান করেছে একটা জীবন পেয়ে। ওকেও এমন কিছু করে দেখাতে হবে। আশা করি সে এটা করতে পারবে। সকালের সেশনটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম দিকে দেখে খেলতে পারলে পরের ব্যাটসম্যানদের আস্থা বাড়বে।
উইকেট এখনও ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ মনে হচ্ছে। এটা হয়তো কাল পর্যন্ত এমনই থাকতে পারে। তবে শেষ দুইদিন ভিন্ন হতে পারে। কারণ গলের উইকেট শেষ দুই দিন স্পিনারদের জন্যই থাকে। আমাদের এ ইনিংসেই যা করার করতে হবে। কারণ চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে হবে আমাদের। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করা সবসময়ই কঠিন। তার উপর আমাদের চতুর্থ ইনিংসের রেকর্ড খুব একটা ভালো নয়।
ওরা প্রথম ইনিংসে প্রায় পাঁচশ রান করেছে। তাই মূল দায়িত্বটা এখন আমাদের ব্যাটসম্যানদেরই। এ রান টপকে লিড নেয়া সম্ভব। আর তা করতে পারলে জয় অসম্ভব কিছু না। তবে আমি এতো দূর ভাবছি না। আপাতত ব্যাটিংটা ভালো করতে পারলে এ টেস্ট ড্র হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
আরটি/আইএইচএস/জেআইএম