অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বিড়ম্বনা!
দীনেশ রত্নাসিঙ্গম, শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া ম্যানেজার। বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট সিরিজ কাভার করতে যে সব বাংলাদেশি সাংবাদিক এখন শ্রীলঙ্কায়, কিংবা আরও যারা আসবেন, তাদের সবার মনে গেঁথে যাওয়া এক নাম। এতটুকু শুনে ভাববেন না, এ লঙ্কান ভদ্রলোক খুব ভদ্র-বিনয়ী এবং কর্মপটু। ভদ্রতাবোধে ঘাটতি না থাকলেও কর্ম তৎপরতায় রাজ্যের ঘাটতি। তা টের পাওয়া গেছে ঢাকা থেকেই।
অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের জন্য আবেদন করার প্রায় ১০/১২ দিন পর জবাব এসেছে সবার কাছে। যা রীতিমত অস্বাভাবিক দেরি। বলার অপেক্ষা রাখে না, ঐ অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নিশ্চিতের ওপর নির্ভর করছিল সব বাংলাদেশি সাংবাদিকের ভিসার আবেদন। কারণ লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ডের সুপারিশ পত্রই ভিসা আবেদনের অন্যতম বড় দলিল।
অথচ লঙ্কান মিডিয়া ম্যানেজার দীনেশ তা পাঠিয়েছেন সিরিজ শুরুর তিন-চারদিন আগে। যে কারণে ঢাকায় লঙ্কান হাইকমিশনে ভিসার আবেদন না করে বাংলাদেশি সাংবাদিক বহরে বড় অংশ সোজা কলম্বো বন্দনায়েকে বিমান বন্দরে এসে আগমনী ভিসা ( অন আরাইভাল ভিসা বা পোর্ট এন্ট্রি) করেছেন।
এদিকে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড যাদের অ্যাক্রিডিটেশন দিয়েছে, তাদের অনেকেই আজ সকাল পর্যন্ত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পাননি। কাল (সোমবার) পর্যন্ত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড না পাওয়া বাংলাদেশি সাংবাদিকরা আজ সকালে খেলা শুরুর এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে গল স্টেডিয়ামে পৌঁছেও ঠিকমত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পাননি। অনেকেরই অ্যাক্রিডিটেশন ফরম হারিয়ে ফেলেছে শ্রীলংকান ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তা।
পাবেন কি করে? লঙ্কান মিডিয়া ম্যানেজার দীনেশের দেখা মেলাই যে দায়! তিনি নাকি ব্যস্ত। কি নিয়ে? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, খেলা শুরুর আগে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজবে, তার তত্ত্বাবধানে থাকবেন দীনেশ।
এদিকে টসের সময় ঘনিয়ে এলো। সাংবাদিকরা অধীর অপেক্ষায়। কিন্তু হায়! দীনেশ আর আসেন না। অবেশেষে একজন কিছু কার্ড হাতে ঢুকলেন অফিস কক্ষে। তাও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড নয়। অস্থায়ী কার্ড। সেটাও এমন সময় এলো, তার আগেই টস শেষ। তাই বেশ ক`জন বাংলাদেশি সাংবাদিকের আর প্রেস বক্সে বসে টস দেখা হলো না।
নির্ধারিত সময়ের ৪৮ ঘন্টা আগে অ্যাক্রিডিটেশনের আবেদন করে টেস্ট শুরুর দিন সকালে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড না পাওয়া! রীতিমত বিস্ময়কর ঘটনা! রীতিমত নিয়ম ও রীতির ব্যতিক্রমের রেকর্ড।
টেস্ট শুরুর ঘণ্টা দেড়েক আগে এসে অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড পেতে এমন ঝক্কি পোহানোয় কার মন ভালো থাকে? মেজাজটা বিগড়ে গেল। তবে মেজাজ ভালো হয়ে গেল গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সে ঢুকে। বলে রাখা ভালো, প্রেস বক্সের আকার, স্থাপনা ও নকশা সবই বাংলাদেশের মতই। তবে একটা মৌলিক পার্থক্য আছে। এখানে প্রেস বক্স দুটি। একটি স্থানীয় সাংবাদিকদের জন্য। অন্যটি বিদেশি বা বহিরাগত সাংবাদিকদের জন্য। অর্থাৎ সিরিজ চলাকালীন বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য একটি প্রেস বক্স বরাদ্দ।
তার মানে গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আজ (মঙ্গলবার) সকালে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে চলতি সিরিজের যে প্রথম টেস্ট শুরু হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ থেকে প্রিন্ট, ইলেক্টনিক্স ও অনলাইনের যে ২২ জন মিডিয়া কর্মী আছেন তারা সবাই এক প্রেস বক্সে। এ যেন বিদেশের মাটিতে এসেও নিজ ঘরের মত। চমৎকার সাজানো গোছানো প্রেস বক্স আকারে বাংলাদেশের টেস্ট ভেন্যু শেরেবাংলা, জহুর আহমেদ চৌধুরী, খান সাহেব ওসমান আলী, শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের চেয়ে বেশ ছোট তবে সুন্দর। আনুসাঙ্গিক সুযোগ সুবিধাও বেশ ভালো। হায়দরাবাদে ইন্টারনেট ব্যবস্থায় ছিল রাজ্যের ত্রুটি। এখানে অবশ্য সে ঝামেলা নেই। ওয়েফাই সিস্টেম শুরু থেকেই কাজ করছে।
এআরবি/এমআর/আরআইপি