সাকিব যতক্ষণ থাকবে ভারত ততক্ষণ আতঙ্কে থাকবে
একই টেস্টে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ ইনিংস দেখলাম। মুশফিকের দুর্দান্ত একটা সেঞ্চুরি দেখলাম। অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। সত্যি বলতে সব প্রশংসাই ওর জন্য কম হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী অধিনায়কোচিত এক ইনিংস। সত্যিই অসাধারণ। রান হয়তো দলে যোগ করেছে ৬৬। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা- প্রথম সেশনটা পার করে দিয়েছে।
গতকালই বলেছিলাম, লাঞ্চের পর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারলে ভালো কিছু হবে। তবে সেটা না হলেও ভালোই খেলেছে ওরা। তবে ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য হয়ে গেছে ফিল্ডিং এবং ক্যাচে। এটাই পরিষ্কার ব্যবধান তৈরি করে দিয়েছে। আমাদের কোনো ক্যাচই তারা ছাড়েনি; উল্টো রিভিউ থেকে আরও নিয়ে গেছে।
সৌম্য যেমন রাহানের অসাধারণ ক্যাচে আউট হয়ে গেল। মুমিনুলের ক্যাচটাও দারুণ ছিল। এ ধরনের ক্যাচ ধরা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। ওরা আগেই ব্যাটিংয়ে সেরা এখন ওদের ফিল্ডিং, বোলিং ও শারীরিক ভাষায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিশ্বের সেরা দল এখন এটা বোঝাই যায়।
ভারত কিন্তু এতো রান করতে পারে না। ক্যাচ মিসের খেসারত দিয়ে নিউজিল্যান্ডেও একই অবস্থা হয়েছে। এখন ভারতেও হলো। ক্যাচ মিস, রান আউট, স্ট্যাম্পিং মিস। ঋদ্ধিমানের এক মিসেই ১০০। বিজয়ও তা-ই করেছে।
আমি কিন্তু আশা হারাচ্ছি না। তিনটা সেশনই তো। আগের দিনের মুশফিক-মিরাজের মতো একটা ভালো জুটি আমাদের ম্যাচ বাঁচাতে পারে। তবে পাঁচ দিন পর্যন্ত ম্যাচ গড়িয়েছে, এটা মোটেও কম কথা না। তবে আমাদের যে আউটগুলো হয়েছে সব দুঃখজনক। সবাই কিন্তু ডিফেন্স করতে গিয়েই আউট হয়েছে।
যেটা বললাম ভারতের ফিল্ডিং অসাধারণ। দারুণ সব ক্যাচ নিয়েছে। ওরা যে ম্যাচটা জিততে মরিয়া তা ওদের শারীরিক ভাষায় বোঝা গেছে। খুবই আক্রমণাত্মক ছিল শুরু থেকেই। এটা ভালো, তবে আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য যে শেষ বিকেলে সৌম্য ও মুমিনুলের আউটে মনটা খারাপ হয়ে গেছে।
তবে সাকিবও উল্টো আক্রমণ করছে। আমার মনে হয়, ও চাপ কমিয়ে নেওয়ার জন্যই এটা করছে। তবে ওকে একটা জিনিস অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। লফটেড শটগুলো অবশ্যই এড়িয়ে যাওয়া উচিত। দেখে দেখে খেলাই আমার মনে হয় ভালো হবে।
যতক্ষণ সাকিব থাকবে ততক্ষণ ভারত আতঙ্কে থাকবে। সাকিবকে এ দায়িত্বটা নিতে হবে। আমাদের একটা বড় জুটি দরকার এ ম্যাচ বাঁচাতে। আমাদের জয়ের চিন্তা করি না; বাঁচার চিন্তা করছি। সাকিবের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ আছে। প্রথম সেশনটা ওদেরই খেলতে হবে। এরপর মুশফিক, সাব্বির ও মিরাজ আছে।
আর উইকেট যেমন টার্নিং হবে ভেবেছিলাম ওইরকম আহামরি কিছু এখনও দেখি নাই। সাধারণত ভারতীয় উইকেট যা হয় চতুর্থ দিনেই ভেঙ্গে যায় এমন কিছু হয়নি। কালকের প্রথম সেশনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলোঅনের চিন্তা থেকে ওরা সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। এটা আমাদের জন্য কম সম্মানের না। বড় কথা ওরা বাংলাদেশকে হালকা ভাবে নিচ্ছে না।
ভারত ফলোঅন করালো না। এটা অবশ্য আগেই বোঝা গেছে। তবে আমাদের শেষ মুহূর্তে দুইটা উইকেট পড়লো। আমি ভেবেছিলাম নাইটওয়াচম্যান নামাবে। নাইটওয়াচম্যান হিসেবে রাব্বি বা তাইজুলকে নামাতে পারতো। শেষ ২৫ মিনিটে আমরা দুটি উইকেট হারিয়েছি। তবে নতুন ব্যাটসম্যান আউট হয়নি। হয়েছে মুমিনুল। এ ধরনের পরিস্থিতিতে নাইটওয়াচম্যান নামিয়ে দিতে হয়।
আমাদের ব্যাটসম্যানরা দেখে খেলতে পারলে জয়ের চিন্তাটা একদম অমূলক না। তবে খুবই কঠিন। কারণ ওদের স্পিনারও চড়াও হয়ে গেছে, বলও অনেকটা পুরনো হয়ে গেছে। এই বলে আরও ৪৫ ওভার বল করবে। তবে সকালে যদি লাঞ্চ সেশনটা ভালোভাবে কাটিয়ে দিতে পারে তাহলে ম্যাচ বাঁচানো সম্ভব। তবে লাঞ্চের আগেই বোঝা যাবে ম্যাচ কোথায় যাচ্ছে?
আরটি/এনইউ/জেআইএম