ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

অভিষেক টেস্ট ছিল উৎসবের উপলক্ষ

প্রকাশিত: ০৫:৫৫ পিএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

সংখ্যা তত্ত্বে! ফারাক মাত্র দুটি টেস্টের। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে এটা বাংলাদেশের ৯৮ নম্বর টেস্ট। আর দুটি মাত্র টেস্ট হলেই শততম টেস্ট হতো। তাহলে প্রথম আর শততম টেস্ট দুই-ই হতো ভারতের সঙ্গে। কিন্তু তা আর হচ্ছে না। সব ঠিক থাকলে আগামী মার্চে কলম্বোর পি সারা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার সঙ্গেই ১০০ নম্বর টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।

তার আগে ৯৮ নম্বর টেস্ট ম্যাচটিও কিন্তু কম সাড়া ফেলেনি। তা ফেলারই কথা। রাত পোহালে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধী স্টেডিয়ামে এমন এক টেস্ট ম্যাচ শুরু হতে যাচ্ছে, যা দীর্ঘ প্রতীক্ষার প্রহর শেষ করা স্মরণতীতকালের অন্যতম আলোচিত-আলোড়িত ম্যাচ। কারণ, ভারতের মাটিতে টিম বাংলাদেশের এটাই প্রথম টেস্ট।

২০০০ সালের নভেম্বরে নিজ মাটিতে টেস্ট অভিষেকের পর কেটে গেছে ১৬ বছর। দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগের পথ পরিক্রমায় বাংলাদেশ সব টেস্ট খেলিয়ে দেশের মাটিতেই টেস্ট সিরিজ খেলেছে। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে- এই আট দেশে গিয়ে টেস্ট খেলে এসেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের মাটিতে আগে কখনোই টেস্ট খেলা হয়নি টাইগারদের। আগামীকাল হায়দরাবাদে ভারতের মাটিতে প্রথম মুখোমুখি মুশফিক বাহিনী ও বিরাট কোহলির দল।

বিরাট কোহলি, চেতশ্বর পুজারা, লোকেশ রাহুল, অজিঙ্কা রাহানে, রবিচন্দন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজার গড়া টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের এক নম্বর দলের বিরুদ্ধে কী করবেন তামিম, সৌম্য, মুমিনুল, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মিরাজরা? তা দেখতে উন্মুখ সারা দেশ। গোটা জাতি। এ টেস্টে টাইগারদের পারফরমেন্স কেমন হবে? তা বলে দেবে সময়।

তবে তার আগে টাইম মেশিনে ১৬ বছর আগে ফিরে গেলে কেমন হয়? কেমন ছিল ভারতের সঙ্গে টেস্ট অভিষেকে টাইগারদের পারফরমেন্স? টেস্ট শিশু বাংলাদেশের জন্ম কাহিনী শুনতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই। যিনি ছিলেন টেস্ট অভিষেকে বাংলার নৌকার মাঝি, যার নেতৃত্তে টেস্ট জগতে পা রেখেছিল বাংলাদেশ- সেই অভিষেক টেস্টের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের চেয়ে সে সুখ-স্মৃতিচারণ আর কেইবা ভালো করতে পারবেন?

জাগো নিউজের প্রায় অর্ধকোটি পাঠকের উৎসাহ-আগ্রহের কথা চিন্তা করে তাই অভিষেক টেস্ট নিয়ে কথপোকথনে বেছে নেয়া হয়েছে নাঈমুর রহমান দুর্জয়কে। আজ পড়ন্ত বিকেলে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে অভিষেক টেস্ট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন আজকের মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও বিসিবি পরিচালক নাঈমুর রহমান দুর্জয়। দীর্ঘ আলাপে তার অধিনায়কত্ব পাওয়া থেকে শুরু করে অভিষেক টেস্টের অনেক অজানা কাহিনী শুনিয়েছেন নাঈমুর।

তার সঙ্গে কথা বলে একটা বিষয় পরিস্কার, এখন যেমন পারফরম্যান্স ও ফল- মূল বিবেচ্য বিষয়। অভিষেকে তা ছিল না। বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে, আমিনুল-আকরামদের হাত ধরে টেস্ট যাত্রা শুরু হবে; সেটাই ছিল মূল। সেখানে উৎসব আমেজ ছিল টেস্ট খেলা নিয়ে।

আকরাম খান ও আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মতো সিনিয়র এবং তারকা ক্রিকেটার দলে থাকার পরও তার কাঁধে অধিনায়কত্বে গুরুদায়িত্ব পড়েছিল। কেমন ছিল সে অনুভূতি? কখনো পাঁচদিনের দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ না খেলে হঠাৎ টেস্ট খেলতে নামা, প্রথম একাদশ গঠন, সৌরভ গাঙ্গুলির সঙ্গে টেস্টে প্রথম টস করতে নামার অভিজ্ঞতা- নানা বিষয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে নাইমুর বলেন, অভিষেক টেস্টের খুব আগে দল পরিচালনার অভিজ্ঞতা না হলেও মাস দুয়েক নিজেকে তৈরির সময় পেয়েছিলাম।

braverdrink

২০০০ সালের নভেম্বরে প্রথম টেস্ট, তার মাস দুয়েক আগে নক আউট বিশ্বকাপ খেলতে আমার নেতৃত্বই কেনিয়া গিয়েছিল জাতীয় দল। সেখান থেকে কয়েকটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকাও সফর করি। সে সফরে আমরা কয়েকটি দীঘ পরিসরের ম্যাচ খেলি। বলতে পারেন সেটাই ছিল আমাদের টেস্ট খেলার পূর্বপ্রস্তুতি।

আমিও অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে তৈরির অল্প কিছু সময় পেলাম। সে অভিজ্ঞতা নিয়েই ১০ নভেম্বর ভারতের সঙ্গে অভিষেক টেস্টে দল পরিচালনা করা। মোদ্দাকথা, ওই দুই সফরেই দল পরিচালনার ড্রেস রিহার্সেল হয়েছিল।

অভিষেক টেস্টে কোনো উল্লেখযোগ্য স্মৃতি? নাইমুরের উত্তর ‘অভিষেক টেস্টের কথা ভুলি কী করে বলুন? ওটা শুধু আমার নয়, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের এমন এক বড় অধ্যায়, যা সবার মনেই দাগ কেটে আছে। থাকবে। ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে। সত্যি বলতে কি প্রথম টেস্টের প্রসঙ্গ উঠলেই, আমার সবার আগে মনে হয় পুরো আয়োজনটাই ছিল উৎসবে মোড়ানো। আমরা টেস্ট খেলবো। টেস্ট শিশু বাংলাদেশের জন্ম হবে- সেটাই ছিল অন্যরকম পুলক জাগানো বিষয়। যার পরতে পরতে ছিল আবেগ-উচ্ছ্বাস আর আনন্দ। চারিদিকে একটা উৎসব উৎসব ভাব।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা কী খেলবো, পারফরমেন্স কেমন হবে? তার চেয়ে বাংলাদেশ টেস্ট খেলবে। টেস্ট জাতি ও দল হিসেবে অভিষেক হবে- এটাই বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল। ওই উৎসবের ডামাডোলে খেলা ছাপিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা আর উৎসবে মেতে ওঠাই যেন বড় হয়ে দেখা দিয়েছিল।’

এআরবি/বিএ

আরও পড়ুন