মুশফিকও চান বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ
গত বছর মাত্র দুটি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ খুব কম টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছে- বিষয়টা উপলব্ধি করেছে বাইরের অনেকেই। ইংল্যান্ড দল বাংলাদেশে সিরিজ খেলতে আসার পর তারাও বলেছে, বাংলাদেশকে কম সুযোগ দেয়া হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডে খেলতে যাওয়ার পরও অনেকে বলেছেন একই কথা। জোর দিয়ে কেউ কেউ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার উচিত, বাংলাদেশকে বেশি টেস্ট খেলার আমন্ত্রণ জানানো। এমন দাবি তুলেছেন নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি স্যার রিচার্ড হ্যাডলি পর্যন্ত।
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তো সব সময়ই বলে আসছিল, আমাদের বড় দলগুলো সুযোগ দিচ্ছে না। সুযোগ দিলে আমরাও প্রমাণ করতে পারতাম, টেস্টে কীভাবে উন্নতি করা যায়। মুখ ফুটে অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবালরা অনেকবারই বলেছেন, আমাদের বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ দেয়া হোক।
ভারতের বিপক্ষে হায়দরাবাদে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্টের প্রাক্কালে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলিও জোর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশকে আরও টেস্ট খেলার সুযোগ দেয়া উচিত। রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কোহলি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস তাদের সামর্থ্য আছে। শুধু টেস্ট ম্যাচ বেশি খেলতে পারছে না। যদি বেশি খেলতে পারতো, তাহলে নিশ্চিত তারা আরও অনেক বেশি উন্নতি করতে পারতো। এটা খুবই স্বাভাবিক।’
বাংলাদেশের ওয়ানডে উন্নতির কথা স্মরণ করে কোহলি বলেন, ‘তারা ওয়ানডেতে বেশ উন্নতি করেছে। কারণ, ওয়ানডেতে বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে। যে কারণে একটা কম্বিনেশনও দাঁড় করিয়ে ফেলতে পেরেছে। যদি আপনি অনেক বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলতে না পারেন, তাহলে কখনোই বুঝতে পারবেন না কীভাবে মাইন্ডসেট করতে হয় কিংবা একটা স্কোয়াড দাঁড় করাতে হয়। এই একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখুন, তারা কিন্তু ওয়ানডেতে বিশ্বের সব ক’টি দেশকেই হারিয়েছে। কারণ, তারা জানে এ ফরম্যাটে কীভাবে খেলতে হয়।’
আগের বছর হয়তো খুব বেশি ক্রিকেট খেলার সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ। তবে এ বছর সুযোগ পাচ্ছে। অন্তত ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলবে এই বছর। যার অধিকাংশই দেশের বাইরে। কোহলির মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুশফিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, এতগুলো টেস্ট ম্যাচ এই বছর। নিজেদের প্রমাণের কী এটা বড় একটা সুযোগ?
মুশফিকও স্বীকার করলেন, বড় একটি সুযোগ। নিজের ক্যারিয়ারে এত বড় সুযোগ আর পাননি জানিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমি ১১ বছর ধরে ক্রিকেট খেলছি। ক্যারিয়ারে এমন মৌসুম এর আগে আমি পাইনি।’
এরপরই মুশফিকের কণ্ঠে ক্ষোভ ঝরে পড়লো বেশি টেস্ট খেলতে না পারার বিষয়টি নিয়ে। একটি টেস্ট খেলুড়ে দল যখন প্রায় আড়াই বছর পর বিদেশে খেলতে যায়, তখন এমনিতেই ক্ষোভ চলে আসার কথা। ব্যতিক্রম হতে পারেননি মুশফিকও। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, দুই আড়াই বছর পর বিদেশের মাটিতে আমরা টেস্ট খেলেছি। এটা কখনোই একটা টেস্ট দলের জন্য কাম্য হতে পারে না। যে টিমকে সবাই বলছে টেস্ট খেলতে পারে না কিংবা জানে না; তাদের আপনারা খেলার সুযোগও দেবেন না। তাহলে কীভাবে বুঝতে পারবেন টিম উন্নতি করছে।’
এ বছরের প্রাপ্ত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুশফিক চান নিজেদের প্রমাণ করতে, ‘আমার মনে হয় এই বছরটা যদি আমরা ভালোভাবে খেলতে পারি, আমাদের যে সুযোগটা এসেছে, সেটা কাজে লাগাতে আমরা কঠিন চেষ্টা করবো। আমরা যেন আমাদের পক্ষে রেজাল্ট আনতে পারি। টেস্ট ক্রিকেট এমন একটি খেলা যেখানে আপনি খেলেন না কেন, এরচেয়ে বড় অভিজ্ঞতা আর কোথাও থেকে পাওয়া সম্ভব নয়। বাংলাদেশ দল আরও বেশি উন্নতি করবে যখন তারা আরও বেশি টেস্ট খেলতে পারবে।’
আইএইচএস/এনইউ/আরআইপি