অল্প সময়ে দ্রুত শিখছে মিরাজ-রাব্বি
গত বছরের শুরুর দিকেই যুব বিশ্বকাপ খেলেছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপরই অনুর্ধ্ব-১৯ ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানেন। নিজেকে তৈরি করতে শুরু করেন জাতীয় দলের জন্য। ওই সময়ই সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মিরাজ বলেছিলেন, আরও দুই-তিন বছর পর তিনি নিজেকে জাতীয় দলে দেখতে চান।
তবে তার সৌভাগ্যই বলতে হবে, দু’তিন বছর অপেক্ষা করতে হয়নি। গত বছরই জাতীয় দলের জার্সি উঠে গেছে ১৯ বছরের যুবা মেহেদী হাসান মিরাজের গায়ে। ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি নয়, একেবারে অভিজাত শ্রেণির, টেস্ট ক্রিকেটে। চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে অভিষেক হলো মিরাজের। একই সঙ্গে টেস্ট অভিষেক হয়ে গেলো পেসার কামরুল ইসলাম রাব্বিরও।
এরপর বাকি ইতিহাস সবারই জানা। মিরাজের হাতে নাস্তানাবুধ হয়েছে ইংল্যান্ড। চট্টগ্রাম এবং ঢাকা, দুই টেস্ট মিলিয়ে ১৯ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। ঢাকায় তো তার ঘূর্ণির সামনেই খেই হারিয়েছে ইংলিশরা। বাংলাদেশ পেয়েছে ঐতিহাসিক এক জয়। রাব্বি ২ টেস্ট মিলিয়ে মাত্র ১টি উইকেট পেলেও কোচ এবং টিম ম্যানেজমেন্টের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন।
যে কারণে নিউজিল্যান্ড সফরে স্বাভাবিকভাবেই দলভুক্ত হয়ে গেলেন এই দুই তরুণ। কিউইদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে এ দু’জন ছিলেন অপরিহার্য খেলোয়াড়। বল হাতেও দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন তারা দু’জন। ক্রাইস্টচার্চে তো কামরুল ইসলাম রাব্বি ব্যাট হাতে পরিণত হন জেনুইন টেস্ট ব্যাটসম্যানে। প্রথম ইনিংসে ৬৩ বল মোকাবেলা করেন। রান যদিও করেছিলেন মাত্র ২টি; কিন্তু ব্যাট হাতে তার দৃঢ়তা দেখে অবাক সবাই।
দ্বিতীয় ইনিংসেও ছিলেন দুর্বার। ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে খেলেছিলেন ২৯ বল। কিউই পেসারদের শট বল, বাউন্সার কিংবা ইয়র্কার লেন্থের বলগুলোতে যেখানে নাকানি-চুবানি খেয়েছে বাংলাদেশের টপ এবং মিডল অর্ডার। সেখানে রাব্বি তাদের বাউন্সার কিংবা শটবলগুলোকে পাঠিয়েছেন বাউন্ডারির বাইরে। ২৫ রান করে লজ্জা দিয়েছেন জেনুইন ব্যাটসম্যানদের।
বল হাতেও বেশ ভালো বোলিং করেছেন তিনি। দুই ইনিংসে নিয়েছেন ৩ উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজও বল হাতে বেশ চাপে রাখতে পেরেছিলেন কিউই ব্যাটসম্যানদের।
সিরিজ শেষ হওয়ার পরদিন, অথ্যাৎ আজ (মঙ্গলবার) ক্রাইস্টচার্চে টিম হোটেলে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই দুই তরুণের উচ্চসিত প্রশংসাই করেছেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কোচের মতে, অল্প সময়ের মধ্যে খুব দ্রুত শিখতে পারছে রাব্বি এবং মিরাজ।
এই দুই তরুণকে নিয়ে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘প্রথম যখন তারা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে মাঠে নেমেছিল, তখন তারা অনেক কিছুই জানত না কিংবা বুঝতো না; কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে তারা অনেক কিছু দ্রুত শিখে নিয়েছে। ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই সিরিজে তারা দ্রুত শিখেছে।’
রাব্বির ব্যাটিংয়েরও প্রশংসা ঝরেছে কোচের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘ব্যাট হাতে সে তো দারুণ কাজ করেছে। একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানের মতো খেলেছে। হয়তো একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান ৬০ বল খেললে রান আরও বেশি করতে পারতো। সে সেটা না পারলেও, অনেক সাহস দেখাতে পেরেছে।’
আইএইচএস/এমএস