পুরো সফরেই ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ
ক্রিকেট হোক বা অন্য যে কোনো খেলা। কোনো টুর্নামেন্ট বা সিরিজের শুরু আর শেষে দুটি বিষয় আলোচনায় থাকবেই। এক. শুরুর আগে সম্ভাবনার অঙ্ক। দুই- শেষের প্রাপ্তি যোগ। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে ও পরে স্বাভাবিকভাবেই এই দুটি বিষয় থাকছে। সেখানে মাহমুদউল্লাহ নামটা কি একটু বেশিই উচ্চারিত হবে?
আসলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে মাহমুদউল্লাহর নামটা ঘুরেফিরে এসেছে। যার অন্যতম কারণ ছিল নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তার সাফল্য। ২০১৫ বিশ্বকাপে ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি এসেছিল এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যানের উইলো থেকে। যার একটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, তাসমান সাগরের পাড়ের দেশেই। এছাড়া বাংলাদেশের ২০১০ সালের নিউজিল্যান্ড সফরেও একটি টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মাহমুদউল্লাহর।
২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত রিয়াদ দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটিং কাণ্ডারি। সর্বশেষ বিপিএলেও টুর্নামেন্ট সেরা ছিলেন রিয়াদ। কিন্তু নিউজিল্যান্ড সফরে দলের ও সমর্থকদের প্রত্যাশা মেটাতে ব্যর্থ তিনি!
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩টি ওয়ানডে, ৩ টি-টোয়েন্টি আর ২ টেস্ট মিলিয়ে মোট ১০ ইনিংসে ব্যাট করেছেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু এই উইলোবাজের ব্যাট থেকে সব মিলিয়ে এসেছে মাত্র ১৮১ রান! ২৬ ডিসেম্বর ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ওয়ানডেতে ‘০’ দিয়ে সফর শুরু তার। পরের ম্যাচগুলোর ইনিংস ঠিক এরকম- ১, ৩, ৫২, ১৯, ১৮, ২৬, ৫, ১৯ ও ৩৮।
ওয়ানডে সিরিজে তিন ওয়ানডেতে মাত্র ৪ রান করে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়ার পর প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৫২ রান করে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন রিয়াদ। কিন্তু পরের ম্যাচগুলোতে আর তার ব্যাটে পুরোনো সেই রানের ধারা দেখা যায়নি। বিপিএলে বল হাতেও বেশ কিছু ম্যাচে নাটকীয়তার জন্ম দিয়েছিলেন রিয়াদ।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেই ৫ উইকেট পাওয়া (দ্বিতীয় ইনিংসে) রিয়াদ পারেননি নিজের অফ স্পিন দিয়ে তেমন কিছু করতে। অবশ্য ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে তাকে সেভাবে ব্যবহারও করেননি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তৃতীয় ওয়ানডেতে কেবল ১ ওভার বোলিং করিয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাকে এক ওভারও ব্যবহার করেননি মাশরাফি।
৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ২ ওভার বল করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু একটু বেশিই খরুচে ছিলেন তিনি। ২ ওভারে ৩২ রান দেন এই ডান হাতি অফ স্পিনার। দুই টেস্টের সিরিজের প্রথমটিতে স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংসে মাত্র ৩ ওভার বল করে ২ উইকেট পেলেও ক্রাইস্টচার্চে তাকে ব্যবহার করেননি অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
বাংলাদেশের ব্যর্থতার নিউজিল্যান্ড মিশন শেষে তাই শূন্য হাতে ফিরছেন একজন; মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দীর্ঘ দিন ধরেই যিনি ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।তবে কি খারাপ সময়ের মধ্যে চলে গেলেন তিনি?
ক্রিকেটারদের জীবনে ফর্ম আর ফর্মহীনতা একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তাই দ্রুতই রানে ফিরবেন, এটাই চাইবেন সবাই। সামনে দেশের বাইরের ব্যস্ত সূচিতে ‘আসল’ মাহমুদউল্লাহকে যে লাগবেই।
এনইউ/জেআইএম