ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

পাকিস্তানের চেয়ে অনেক সুন্দর ও সাবলীল সূচনা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ১২:৩২ এএম, ২০ জানুয়ারি ২০১৭

প্রথম টেস্টের আগে দুটি বিষয় নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। এক উইকেট। দুই বাংলাদেশের অনভিজ্ঞ ও নবীন পেস ডিপার্টমেন্ট। উইকেট নিয়ে কথা হবার মতো অবস্থাই ছিল। টেস্ট শুরুর আগের দিনও বেসিন রিজার্ভের পিচ যেন সবুজ গালিচা। বোঝাই যায়নি কোনটা আসল উইকেট।


Babu-Vaiশেষ পর্যন্ত অবশ্য ঘাসের বড় অংশ ছেটে ফেলা হয়। তাই ম্যাচ শুরুর পর থেকেই উইকেট নিয়ে কথাবার্তা কমে যায়। কিন্তু মাত্র দুই ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আর অভিষেক হওয়া তাসকিন আহমেদ ও শুভাশীষ রায়ের গড়া পেস আক্রমণ নিয়ে কথাবার্তা অব্যাহত ছিল আরও কদিন।

আর দ্বিতীয় টেস্টের আগে সবার দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত এক জায়ায়। নাহ এবার আর উইকেট নিয়ে অত কথা নয়। যত কথা ‘ইনজুুরি আক্রান্ত’ বাংলাদেশের একাদশ নিয়ে। ইনজুরি যেন পেয়ে বসেছে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো সফরে গিয়ে এমন ইনজুরি আক্রান্ত হবার নজির খুব কমই আছে।

আজ থেকে হ্যাগলে পার্কে যে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হলো, তাতে নেই বাংলাদেশের তিন অপরিহার্য সদস্য মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস ও মমিনুল হক। মুশফিক খেলতে পারছেন না হাতের আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে। আগের টেস্টের শেষ দিন সকালে টিম সাউদির বাউন্সারে মাথায় লেগে হাসপাতালে যাওয়া টেস্ট ক্যাপ্টেন মুশফিকের মাথার ইনজুরি ভালো হয়েছে। সেখানে কোনো সমস্যা নেই।

খেলার পথে বাঁধা ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুুলি সমস্যা। ব্যাটিংয়ের সময় এবং কিপিংয়ের ক্ষেত্রে ওই ব্যাখা ও ফোলা বড় অন্তরায়। তাই নেই নিয়মিত অধিনায়ক। তার বদলে দল পরিচালনায় তামিম ইকবাল। আরও নেই ওপেনার ইমরুল কায়েস এবং টপ অর্ডারের নির্ভলতার প্রতিক মুমিনুল হকও।

এমন তিন নির্ভরযোগ্য পারফরমার ছাড়া যে দলটি আজ খেলতে নেমেছে, সেটাকে অনয়াসে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম অনভিজ্ঞ দল বলা যায়। অভিষেকের তিন বছর বাদ দিলে এটাই হয়ত সবচেয়ে অনভিজ্ঞ দল।

যে দলে অধিনায়ক তামিম ( ৪৫ টেস্ট), সাকিব আল হাসান ( ৪৫ টেস্ট), মাহমুদউল্লাহ (৩০ টেস্ট) ও রুবেল হোসেন (২৩) ছাড়া আর কারও ১০ ম্যাচের অভিজ্ঞতাও নেই।

সৌম্য, সাব্বির, মেহেদী হাসান মিরাজ ও কামরুল ইসলাম রাব্বি এই চারজন খেলছেন  মাত্র তিনটি করে ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিয়ে। আর পেসার তাসকিনের অভিজ্ঞতার ঝুুলিতে একটি মাত্র টেস্ট। নুরুল হাসান সোহান ও নাজমুল হোসেন শান্ত দুজনার হলো টেস্ট অভিষেক।

এরকম এক অনভিজ্ঞ, অপরিণত দল শেষ পর্যন্ত কী করবে? ব্যাটিং শক্তির অর্ধেকটাই নেই। তামিম, সাকিব আর মাহমুদউল্লাহ ছাড়া সবাই টেস্টে নবাগত ও অনভিজ্ঞ। কী জানি হবে?

মাত্র দুই মাস আগে এই মাঠে পাকিস্তান প্রথম ব্যাট করতে নেমে অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৩৩ রানে। আর পরের ইনিংস গুড়িয়ে গিয়েছিল ১৭১ রানে। বাংলাদেশের কি অমন করুণ পরিণতি হবে? কী জানি যে ভাঙ্গাচোরা দল, অমন হতেও পারে।

এমন চিন্তা কারও কারও মাথায় বাসা বেঁধেছিল। কাল প্রেস কনফারেন্সে তামিম ইকবালকেও অমন প্রশ্ন মুখে পড়তে হয়েছিল। এই পিচে পাকিস্তান তিনদিনে হেরে বাড়ি চলে গেছে। আপনাদের চিন্তা ভাবনা কী?

তামিম অবশ্য সাহসী জবাব দিয়ে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান কী করেছে, তা নিয়ে আমরা ভাবছি না। কে কয়দিনে হারবে না জিতবে? তা খেলা শুরুর আগে না ভাবাই ভালো। আমরা জিততে চাই। নিজেদের সামর্থেল সেরাটা উপহার দেয়াই লক্ষ্য।

সে আলোকে বলা যায়, তামিমের সৈন্যরা অধিনায়কের কথা রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। তার জবাব দিবে সময়। তবে প্রথম দিনের প্রথম সেশন শেষে অতিবড় সমালোচকও মানছেন শুরু ভালো হয়েছে। বাংলাদেশ দুর্দান্ত শুরু করেছে।
braverdrink
ভালো না বলে উপায় আছে? প্রথম দুই ঘণ্টায় রান ১০০ অতিক্রম করে; ১২৮ (২৭ ওভারে)। উইকেট খোয়া গেছে দুটি। ক্যারিয়ারে চতুর্থ টেস্ট হলেও ওপেনারের ভূমিকায় প্রথম ব্যাটিংয়ে নেমেই ফিফটি হাঁকিয়েছেন সৌম্য সরকার। ১০৪ মিনিটে ৫৪ বলে ৫০ পূর্ণ করা সৌম্য লাঞ্চে অপরাজিত অবস্থায় ফিরেছেন ৬৪ রানে।

৫২ রানে স্লিপে ক্যাচ তুলে দেয়া ছাড়া দারুণ খেলেছেন সৌম্য। বলের পেছনে গিয়ে খেলা চেষ্টা ছিল। বল তুলে না মেরে মাটি কামড়ে শট খেলেছেন পা বাড়িয়ে। স্ট্রেইট ড্রাইভ, কভার ড্রাইভ ও পুল করেছেন অবলীলায়। সাকিবও ছবির মতো ব্যাটিং করছেন। শুরুতে একবার স্লিপের মাথার ওপর দিয়ে চালালেও বাকি সময় দেখে ড্রাইভ খেলেছেন। বেশ কিছু নয়ন জুড়ানো কভার ড্রাইভ এসেছে তার ব্যাট থেকে। আগের ম্যাচের ডাবল সেঞ্চুুরিয়ান সাকিবের ব্যাট ও চলছে দুলন্ত গতিতে। ৪৬ বলে ৩৯ রানে নট আউট সাকিব।

আউট হওয়া প্রথম ব্যাটসম্যান অনিায়ক তামিম ইকবাল ৫ রানে। ওয়ান ডাউনে প্রমোশন পাওয়া মাহমুদউল্লাহ আউট হয়েছেন ১৯ রানে।

পাকিস্তান ৫৫.৫ ওভারে যে রানে অলঅাউট হয়েছিল, বাংলাদেশ তার অর্ধেক ওভার খেলে প্রায় ওই রানের খুব কাছে। এটাই কি কম? এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারলেই চলে।

এআরবি/আরটি/বিএ