ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

শতভাগ ফিট না হয়েও অন্যরকম চ্যালেঞ্জ মুশফিকের

প্রকাশিত: ০৩:৫৬ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০১৭

শুধু ক্রিকেট নয়, জীবনটাও কত বৈচিত্রময়! অধিনায়ক না হলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তিনি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের অন্যতম স্তম্ভ। গত তিন চার বছরের হিসেব করলে দেখা যাবে টিম বাংলাদেশের হয়ে সব ফরম্যাটে, বিশেষ করে টেস্ট এবং ওয়ানডেতে সবচেয়ে ভালো খেলা ব্যাটসম্যানের অন্যতম হচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ওয়ানডেতে হ্যামস্ট্রিং ইনজুুরির শিকার হবার পর থেকে সেই নির্ভরতার প্রতীক মাঠের বাইরে।
 
Babuশেষ দুই ওয়ানডেতে আর তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের পুরো সময় ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবেল’ মুশফিকুর রহিমের সার্ভিস পায়নি টিম বাংলাদেশ। গত প্রায় দুই সপ্তাহ পুরো দল সীমিত ওভারের সিরিজে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। সহযোগী সবাই ব্যস্ত ছিলেন নিবিড় ও কঠোর অনুশীলনে। আর সে সময়টা মুশফিকুর রহিম লড়াই করেছেন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি কাটিয়ে টেস্টে মাঠে ফেরার সংগ্রামে। এ কাজে তার সঙ্গী ছিলেন ট্রেনার মারিও ভিল্লাভারায়ন। প্রতিদিন টিম প্র্যাকটিসের আগে শুরু হয়েছে মুশফিকের মাঠে ফেরার লড়াই। কখনো রানিং। কখনো ফিজিক্যাল ট্রেনিং করেছেন একান্তে। তারপরও কারো কারো মনে সংশয় সন্দেহ ছিল, মুশফিক শেষ পর্যন্ত টেস্ট খেলতে পারবেন তো ? কীপিংটা না হয় নুরুল হাসান সোহান চালিয়ে দিবেন, কিন্তু  যদি মুশফিক খেলতে না পারেন , তাহলে অধিনায়কত্ব করবেন কে?  

এমন সংশয়-সন্দেহর বীজ কিন্তু অঙ্কুরিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সে শঙ্কা ও  সন্দেহের মেঘ কেটেছে। হ্যামিস্ট্রিং ইনজুরির সঙ্গে লড়ে দুসপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে নিজেকে ফিট প্রমাণ করেই মাঠে মুশফিক। সব কিছু ঠিক থাকলে তিনি খেলবেন, উইকেট কীপিং করবেন এবং নেতৃত্বও দেবেন।

mushfik

গত দু`দিন অনুশীলনেই পরিষ্কার হয়েছে মুশফিকুর রহিমই কীপিং করবেন। উইকেট কীপার ও তিন স্লিপ এক গ্যালি রেখে যে ক্যাচিং প্র্যাকটিস হয়েছে, সেখানে গ্লাভস হাতে ছিলেন মুশফিক। মুশফিকের কীপিং করার অর্থ, নুরুল হাসান সোহানের এগার জনের বাইরে চলে যাওয়া। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের পাঁচ খেলায় গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনে দাড়ানো নুরুল হাসান সোহানকে টেস্টে ড্রেসিং রুসে বসেই কাটাতে হবে।

তারপরও আনুষ্ঠানিক সংবাদ সন্মেলনে প্রশ্ন উঠলো টেস্ট ম্যাচ, ৫ দিনের খেলা। দীর্ঘ সময় কীপিং করতে হবে। আবার ব্যাটিংয়েও বেশি সময় উইকেটে থাকতে হতে পারে। বাড়তি ফিটনেস দরকার। আপনি আপনার ফিটনেস লেভেল কেমন ? কীপিং ও ব্যাটিং করার মত ফিটনেস কি আছে আপনার? নিজেকে কতটা ফিট মনে করেন আপনি?  

এ প্রশ্নর জবাবে মুশফিকের সহজ সরল স্বীকারোক্তি , ‘আল্লাহর রহমতে শারীরিক অবস্থা ভাল। হ্যামিস্ট্রিং ইনজুরির সমস্যা অনেকটাই কেটে গেছে।  তারপরও নিজেকে ১০০ ভাগ সুস্থ্য বা ফিট বলা ঠিক হবে না। হ্যামিস্ট্রং ইনজুরি কিন্তু আবারো ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে। তারপরও বলবো , খেলার জন্য ফিট।’
 
mushfik

তার মানে মুশফিক নিজেই শতভাগ ফিট মানছেন না। তবে যেটুকু আছে, তা দিয়ে কাজ চলবে। এমন আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই মাঠে নামার প্রস্তুতি। সেক্ষেত্রে স্রষ্টার অনুকূল্য দরকার। এমনিতেই হ্যামস্ট্রিং একটু খারাপ জাতের ইনজুরি যা সহজে যায় না, ভোগায় আবার মাথা চারা দেয়। এ সিরিজের মাঝে যদি দেয়, তাহলে শুধু মুশফিককেই হতাশার অতলে তলিয়ে নেবে না। টিম বাংলাদেশের জন্যও হবে অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ টেস্টে মুশফিকের ব্যাটিংটা যে খুব জরুরী।

তিন সহযোগী তামিম, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ প্রত্যেকের নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ভালো খেলার রেকর্ড আছে। সেঞ্চুরি না থাকলেও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সর্বাধিক টেস্ট হাফ সেঞ্চুরির মালিক তামিম ইকবাল। ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে একমাত্র টেস্টে শতরান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ ( প্রথম ইনিংসে ১১৫) ও সাকিব (১০০)। মুশফিকুর রহিমের নামের পাশে এখনো কিছুই নেই। বরং তার নিজের ট্র্যাক রেকর্ডের তুলনায় নিউজিল্যান্ডের মাটিতে পরিসংখ্যান খারাপ। খারপ মানে ভীষণ খারপ। আগের তিন টেস্টে তার কোন হাফ সেঞ্চুরিও নেই। সাকুল্যে রান করেছেন মোটে ২০১০ সালের ১৫ ও ১৯ । ফেব্রুয়ারীতে হ্যামিল্টনে হওয়া শেষ টেস্টে মাহমুদউল্লাহ-সাকিব যখন তিন অংকে পা রেখেছিলেন, মুশফিকের ব্যাটে রান খরা।  সংগ্রহ ছিল ৭ ও ২২।

braverdrink

তারও আগে ২০০৮ সালের জানুয়ারী দুই টেস্টের চার ইনিংসেও মুশফিকের ব্যাট কথা বলেনি। ডুনেডিনে প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ( ৭+৬)  দুই অংকেই পৌছানো সম্ভব হয়নি। আর সেই বছর এই ওয়েলিংটনের বেসিন রেজার্ভে দ্বিতীয় টেস্টেও মুশফিক রান পাননি। এই মাঠেও আট বছর আগে প্রথম টেস্ট খেলতে নেমে চরম ব্যর্থ মুশফিক। দুই ইনিংস মিলে করেছেন মোটে ( ৮+০)।

ভাগ্য নাকি পরিশ্রমী আর সাহসী বীরদের সঙ্গে থাকে। যদি তাই হয়, তাহলে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আগের সব ব্যর্থতা ঝেড়ে মুছে জ্বলে উঠতেও পারেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।  দেখা যাক অনেক পরিশ্রম করে নিজের শারীরিক অবস্থাকে টেস্টের উপযোগি করে তোলা মুশফিক এবার শতভাগ ফিট না হয়েও জ্বলে উঠতে পারেন কিনা?

এআরবি/এমআর/পিআর

আরও পড়ুন