মাশরাফির অবসরের খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন পাপন
নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে দুই ফরম্যাটে ছয়টি ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ। আর এ হারের পরই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে টি-টোয়েন্টি থেকে নাকি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। বিসিবি প্রেসিডেন্টই সেই পথ থেকে সরিয়ে আনেন মাশরাফিকে।
আগের দিনই (রোববার) একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিজেই এ সংবাদ জানিয়েছিলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, মাশরাফির এ সিদ্ধান্তের খবর তিনি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজনের মাধ্যমে শোনেন এবং তিনি নিজেই আবার তার মাধ্যমে মাশরাফিকে অবসর ঘোষণা না দিতে বার্তা পাঠান। মাশরাফি বিসিবি প্রেসিডেন্টের অনুরোধ রক্ষা করে অবসরের ঘোষণা দেননি।
আগের দিন টিভিতে দেয়া সাক্ষাৎকারের সঙ্গে পরদিন মিডিয়ায় বলা নাজমুল হাসান পাপনের কথার সঙ্গে কোনো মিল নেই। আজ (সোমবার) আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে মাশরাফির অবসরের খবরকে গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট।
সোমবার নিজের অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে পাপন বলেন, ‘আসলে আমাকে একটা চ্যানেল থেকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল মাশরাফি অবসর নিচ্ছে এ ব্যাপারে আপনি কিছু জানেন কি না? আমি বলেছি আমার সাথে মাশরাফির কালকেও কথা হয়েছে। আমার সাথে এমন কোনো কথা হয়নি। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে ওখানে বসে কেন করবে। আমি বলেছি, বাংলাদেশে এসে সিদ্ধান্ত নিতে। সে অনুযায়ী আমি আজকেও মাশরাফিকে ফোন দিয়েছি। ও বলেছে, আমি যদি এমন কিছু করি তাহলে আপনার কাছে না বলে করবো? এটাই হলো সত্যি কথা। মাশরাফি আমাকে অবসরের ব্যাপারে কখনোই কিছু বলেনি।’
আগের দিন যমুনা টেলিভিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পাপন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দেশে এসে মাশরাফি হয়তো অবসর নিতে পারে। এরপরই দেশব্যাপী এ তথ্য প্রচার হয়ে যায়। মূলত বিসিবির সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন এ বিষয়টি তাকে অবহিত করেছিলেন। আর সে কথার ভিত্তিতেই এমনটা বলেছিলেন বলে জানান তিনি, ‘গতকাল সিইও আমাকে বলেছে, আপনি কি কিছু শুনেছেন। আমি বললাম, না তো কি শুনবো? সে বলল, এখানে সবাই কানাঘুষা করছে মাশরাফি নাকি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়ে নিবে। তখন তাকে বলেছি, যদি সে অবসর নেয় ওখানে কেন, এখানে এখানে এসে নেবে। আর মাশরাফি যদি অবসর নেয় এটা তার সিদ্ধান্ত। আমাদের এমন কিছু জানায়নি।’
২০১৪ সালে বাংলাদেশ যখন টানা হারের বৃত্তে বন্দী, সে সময় জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় মাশরাফিকে। আর তখন থেকেই দারুণ বদলে যায় টিম বাংলাদেশ। এরপর বিশ্বকাপে দারুণ খেলার পর ঘরের মাঠে টানা ছয়টি সিরিজ জয় করে মাশরাফিবাহিনী। তাই বাংলাদেশকে সাফল্যে ভরিয়ে তোলা এ অধিনায়ক আর কত দিন দলের অধিনায়কত্ব করবেন? প্রশ্ন তোলা হয় পাপনের কাছে।
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল ও যতদিন ফিট থাকবে ততদিন ওকে আমরা রাখবো। এটা হচ্ছে প্রথম কথা। তবে ফিটনেসের সঙ্গে আরও অনেক কিছুই আছে, যেটাও গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হয়। আপনারা দেখেন ও দলে আছে দুটো মূল দায়িত্বে। প্রথমত অধিনায়কত্বের জন্য। অধিনায়ক হিসেবে সবসময়ই দলে থাকতে পারে। আর দ্বিতীয়ত ও একজন বোলার। আমার জানা মতে, শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছাড়া প্রত্যেকটা সিরিজে ভালো বল করেছে। তাই ওর বোলিং খারাপ এ জন্য ওকে বাদ দিতে হবে এমন কোন চিন্তাই আমাদের মাথায় আসেনি।’
আরটি/আইএইচএস/জেআইএম