এখন চোখ রাঙাচ্ছে ৬-০!
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে মাশরাফি বিন মর্তুজারা ৩-০ ব্যবধানে হারায় দীর্ঘ ২৮ মাস পর বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফিরে আসে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা। এরপর তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টির প্রথম দুটিতেই হার টাইগারদের। ফলে পিঠাপিঠি আরও একটি হোয়াইটওয়াশের সামনে এখন বাংলাদেশ।
শুধু কি তাই? রোববার মাউন্ট মঙ্গানুইতে হারলে দীর্ঘ প্রায় ৫ বছরেরও বেশি সময় পর দ্বি-পাক্ষিক কোনো সিরিজে ৬-০ এর লজ্জা পেতে হবে টাইগারদের। সর্বশেষ ২০১১ সালে ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে যে লজ্জা পেতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। (২০১৪ সালে সব ফরম্যাট মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ ম্যাচের ফল ছিল ৬-০। তবে একটি টেস্ট ড্র হওয়ায় প্রাপ্তি কিছু ছিল।)
দীর্ঘ দিন ধরেই দেশের মাটিতে টাইগাররা পার করছেন স্বপ্নের সময়। বড় বড় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সাফল্যগুলো নিজেদের ইতিহাসে অন্য উচ্চতায়ই তুলে দিয়েছে বাংলাদেশকে। ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে দুই ম্যাচের টেস্ট আর ৫ ম্যাচের ওয়ানডের সব ক’টিতে হারিয়ে ৮-০ এর আনন্দে মেতেছিল বাংলাদেশ। এরপর আর কোনো সিরিজে বাংলাদেশের ফলে ‘০’ সংখ্যাটি লেখা হয়নি; লেখা হয়নি তার আগেও বেশ কয়েকটি সিরিজে।
২০১৪ সালটা বাংলাদেশের খুব খারাপ কাটলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের আগে আরও যে তিনটি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে অংশ নেয় বাংলাদেশ, সেখানেও পরাজয়ের ব্যবধান ছিল না ৬-০ এর মতো। সে বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট ও ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। একমাত্র টি-টোয়েন্টি বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় ৫-০ এর হার নিয়ে দেশে ফিরেছিল বাংলাদেশ।
এর আগে সুরেশ রায়নার নেতৃত্বে ভারত বাংলাদেশে এসে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ তে (একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত) জিতে দেশে ফিরে যায়। তার আগে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপের আগে শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলে দুটি টেস্ট, তিনটি টি-টোয়েন্টি ও দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। এই সিরিজে দুই টেস্টের একটিতে ছিল ড্র। তবে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ না হলে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। তিন ফরমেটের মোট ৭ ম্যাচের সংক্ষিপ্ত ফলটা ৬-০। তবে একটা টেস্ট ড্র তো ছিল! ওই শূন্যের পাশে তাই একটা অদৃশ্য সংখ্যা কল্পনা করাই যায়।
এরআগে ২০১৩ সালে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে তো বাংলাদেশই ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে নিউজিল্যান্ডকে। দুই টেস্টে সিরিজটি ছিল ড্র। একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজে অবশ্য জিতেছিল নিউজিল্যান্ড।
এভাবে ক্রমানুসারে পেছন ফিরে তাকালে দেখা যায়- ২০১১ সালে পকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৬ ম্যাচের সিরিজের ৬টিতেই পরাজয় বরণ করেছিল বাংলাদেশ। অর্থাৎ সেই ২০১১ সালের পর আবারও ৬-০ এর সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ।
২০০৯/১০ ও ২০০৭/০৮ এ নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বশেষ দুটি পূর্ণাঙ্গ সিরিজেও শূন্য হাতে ফিরেছিল বাংলাদেশ। তবে ম্যাচ সংখ্যায় সেই হার দুটি ছিল ৫-০’র। ২০০৯/১০ এ একমাত্র টেস্ট, ৩ ম্যাচের ওয়ানডে ও ১ ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে খালি হাতে ফিরেছিল সাকিব আল হাসানের দল। ২০০৭/০৮ এ আশরাফুলরা ফিরেছিলেন দুই ম্যাচের টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ হয়ে (৫-০)। ২০০২ সালে দুই টেস্টের সিরিজটি ২-০তে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ।
আগামীকাল রোববার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি জিতলে অবশ্য ৬-০ এর লজ্জা থেকে অন্তত রক্ষা পেতে পারে বাংলাদেশ। অন্যথায়, দীর্ঘ প্রায় ৫ বছরেরও বেশি সময় পর এই লজ্জায় ডুববে মাশরাফির দল। সেটা হয়তো হতে দিতে চাইবেন না টাইগাররা। দেখা যাক, কী হয়!
এনইউ/জেআইএম