দেশে ফিরেই অবহেলার শিকার সাবিনারা
দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখানো নারী ফুটবলাররা ঘরে ফিরলেন বাফুফের অবহেলায়। নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের রানার্সআপ ট্রফি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পা রাখেন সাবিনা-স্বপ্নারা।
বাফুফে থেকে আগে জানানো হয়েছিল শীর্ষ কর্তারা মিষ্টি আর ফুল নিয়ে বিমান বন্দরে নারী ফুটবল দলকে অভ্যর্থনা জানাবেন। মিষ্টি আর ফুল ঠিকই গেছে বিমান বন্দরে, যাননি বাফুফের নির্বাহী কমিটির কোনো কর্মকর্তা। বাফুফের হেড অব মার্কেটিং সাঈদ আল ফাতাহ্, কয়েকজন এক্সিকিউটিভ বিমান বন্দরে গিয়েছিলেন নারী ফুটবলারদের অভ্যর্থনা জানাতে।
রাত ৯ টা ৫ মিনিটে কলকাতা থেকে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা কথা ছিল নারী ফুটবল দলের। তবে ফ্লাইট বিলম্ব হয়েছে এক ঘন্টারও বেশি সময়। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ জানিয়েছিলেন, বিমান বন্দরে নারী ফুটবল দলকে অভ্যর্থনা জানাতে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন উপস্থিত থাকবেন। নির্বাহী কমিটির সব কর্মকর্তাকে বিমান বন্দরে উপস্থিত থাকতেও অনুরোধ জনানো হয়েছে। মজার বিষয় হলো সাধারণ সম্পাদক নিজেও জাননি মেয়েদের অভ্যর্থনা জানাতে।
সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের একজনও কেন মেয়ের অভ্যর্থনা জানাতে জাননি? বিষয়টি জানতে সাধারণ সম্পাদকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের শরীর খারাপ, তাই আসতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সাঈদ আল ফাতাহ।
নারী ফুটবল দল এই প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করে হেরেছে। বাংলাদেশ ফাইনালে ওঠার পরও বাফুফের কোনো কর্মকর্তা শিলিগুড়ি যাননি। এমন কি বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন, যিনি সাফেরও সভাপতি তিনিও যাননি মেয়েদের ঐতিহাসিক ম্যাচটি দেখতে। নির্বাহী কমিটির দুই সদস্য সেখানে আগে থেকেই ছিলেন দলের সঙ্গে।
এই নারী দল নিয়ে যখন কোনো সংবাদ সম্মেলন হয় তখন বাফুফের প্রচারপ্রিয় কিছু কর্মকর্তার আড়ালে পড়ে যান ফুটবলাররাই। ফুটবলারদের পাশে ঠেলে দিয়ে মধ্যমনি হয়ে যান এক শ্রেনীর কর্মকর্তা। সেই কর্মকর্তাদের একজনও পা বাড়াননি বিমান বন্দরের দিকে।
দেশের ফুটবলে যখন ক্রান্তিকাল চলছে। পুরুষ ফুটবল দল যখন ম্যাচের পর ম্যাচ হেরে দেশের মুখে চুনকালি মাখছেন তখন মেয়েরাই জাগিয়ে রাখছেন কিঞ্চিত আশা। অনূর্ধ্ব-১৬ মেয়েদের সাফল্যের পর জাতীয় দলও দুর্দান্ত খেলেছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। অথচ বাফুফে কর্মকর্তাদের সেই মেয়েদের অভ্যর্থনা জানানোর সময়ও যে নেই।
নারী ফুটবল দল রাত ১২ টার দিকে বাফুফে ভবনে এসে উঠেছেন।
আরআই/আইএইচএস