‘ব্যাটসম্যানরা প্ল্যান অনুযায়ী ব্যাট করেনি’
পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজদ্দৌলার ফরাসি সেনাপতি সিন ফ্রে আফসোস করে বলেছিলেন, ‘ইওর এক্সিলেন্সি, কথা হইলো এক রকম আর যুদ্ধ হইতাসে অন্যরকম।’ আজ নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে বাংলাদেশের ব্যাটিং সে ফরাসি সেনাপতির আক্ষেপের কথাই মনে করিয়ে দেয়।
বারবার ভেসে উঠলো সাকিব আল হাসানের মুখ। ২৪ ঘণ্টা আগে টাইগার সহ-অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কী বললেন আর আজ ম্যাচে ব্যাটসম্যানরা কী করলেন? সাকিবের কথার সাথে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচের ব্যাটিংয়ের কোনো-ই মিল নেই।
নিজ দলের ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সচেতনতা বাড়াতে সাকিব আগের দিন পরিষ্কার সাবধানী বাণী শুনিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘খবরদার সেট হয়ে আউট হওয়া চলবে না।’ কিন্তু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ছাড়া কেউ সহ-অধিনায়কের কথা রাখেননি। সবাই একটু বেশি হাত খুলে খেলতে চেষ্টা করলেন। এবং সেটা সেট হওয়ার আগেই।
আবার কেউ কেউ পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে পুরোপুরি মানিয়ে নেওয়ার আগে চার-ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সর্বনাশ ডেকে আনলেন। প্রথম ভুল পথে হাটা শুরু করলেন ইমরুল কায়েস। তার পিছু নিলেন তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেনও।
সবার মাঝে একটু অদ্ভুত তাড়াহুড়ো। দেখে মনে হলো- খেলাটি বুঝি ২০ ওভারের নয়, ২০ বলের। বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং দেখে মনে হলো- খেলাটা নিউজিল্যান্ডে নয়, ভারতের ব্যাটিং সহায় পিচে। নিউজিল্যান্ডে খেলা । বাতাস আর বাউন্স একটু বেশি থাকবেই। এখানে ইচ্ছে করলেই সব বল মারা যায় না। যাবে না। বাউন্সের কারণে সঠিক টাইমিং করা একটু কঠিন।
তাই প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিৎ; পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে থিতু হওয়া। তারপর খোলস বদলে হাত খুলে খেলা। ঠিক এই পথে হেঁটে পঞ্চাশের নাগাল পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বাকিরা সম্পূর্ণ ভুল পথে হাঁটলেন। ব্যাটসম্যানদের এই ভুলের মাশুল প্রথম ম্যাচের পরাজয়।
মানছেন অধিনায়ক মাশরাফিও। তার কথা, ‘ব্যাটসম্যানরা লক্ষ্য ও পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারেনি। বলা ছিল, উইকেটে গিয়ে তেড়েফুড়ে মারার চেষ্টা না করে আগে সেট হতে হবে। সেট হয়ে তারপর হাত খুলে খেলতে হবে।
কিন্তু মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কেউ সে টিম রুলস ফলো করেনি।’
আজকের ম্যাচে এটাই বড় হতাশা টাইগার ক্যাপ্টেনের। তার ব্যাখ্যা, ‘এ উইকেটে একটু দেখে সেট হয়ে খেলতে পারলে যে পরে ফ্রি-স্ট্রোক খেলা যায়, মাহমুদউল্লাহর ইনিংসটাই তার প্রমাণ।’ মাশরাফির অনুভব, টপ ও মিডল অর্ডারে অন্তত দু’জন এই রকম সেট হয়ে তারপর শটস খেলার চেষ্টা করলে অনায়াসে স্কোর লাইন বড় হতো। আর পুঁজি বড় হলে খেলায় লড়াই বেশি হতো।
এআরবি/এনইউ/আরআইপি