হতাশ কোচ হাথুরুসিংহেও!
অধিনায়ক মাশরাফির হতাশার কথা জানা হয়েছে আগেই। কিউইদের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে ৩-০তে নাকাল হওয়ার সম্ভাব্য কারণ ও ব্যাখ্যা নিয়ে টাইগার অধিনায়ক তার অনুভব, ভাবনা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ সবই প্রকাশ করেছেন।
কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহের প্রতিক্রিয়া জানাই বাকি ছিল। শ্রীলংকায় জন্ম নেয়া এই অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক বাংলাদেশ দলের কোচের দায়িত্ব নেয়ার পর এবার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ওয়ানডে সিরিজের সব ম্যাচ হারল।
এমন পর্যুদস্ত হওয়া ক্রিকেটারদের অ্যাপ্রোচ-অ্যাপ্লিকেশন ও পারফরম্যান্স সম্পর্কে কোচের ভাবনা ও উপলব্ধি জানতে উৎসুক কোটি কোটি বাংলাদেশ ভক্ত তথা পুরো দেশবাসী। গতকাল শুক্রবার খেলা শেষে তার অনুভব-উপলব্ধি, তাৎক্ষণিক অনুভূতি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ জানতে আগ্রহী ছিল বাংলাদেশের প্রচার মাধ্যম। এমনকি পুরো বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ।
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টাইগার ও ব্ল্যাক ক্যাপ্সদের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ কাভার করতে যাওয়া প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা তার সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও শুক্রবার মিডিয়া থেকে দূরেই ছিলেন বাংলাদেশ কোচ।
তবে ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই মানসিকতায় বড় ধরনের পরিবর্তন। আজ অনেকটা যেচেই মিডিয়ার সঙ্গে কথা বললেন হাথুরুসিংহে। প্রথম কথা বললেন নেলসন বিমানবন্দরে।
একই ফ্লাইটে নেপিয়ারের যাত্রী না হলেও বাংলাদেশের সাংবাদিক বহরের সাথে দেখা হয়ে গেলো তার নেলসন বিমানবন্দরে। সেখানে অনানুষ্ঠানিক কথা-বার্তা না বললেও বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সাথে শুধু সৌজন্য বিনিময়েই থেমে থাকেনি আলাপচারিতা।
অনেক বিষয় নিয়েই না লেখার শর্তে কথা বলেন হাথুরু। তখনই জানিয়ে দেয়া হয় আজ সন্ধ্যায় টিম হোটেলে কথা বলবেন টাইগার হেড কোচ। কয়েক ঘণ্টা পর আজ সন্ধ্যায় (নেপিয়ারে তখন সন্ধ্যা ৭টা) বাংলাদেশের প্রচার মাধ্যমের সামনে ঠিক এসে হাজির হন হাথুরুসিংহে।
এবার আর সৌজন্যতামূলক আলাপ কিংবা অব দ্য রেকর্ড কথাবার্তা নয়। পুরোদস্তুর আনুষ্ঠানিক কথোপকথন। টিম হোটেল ‘তে পানিয়া সিনিকের’ পাশে একটি বড় ভবনে লম্বা টিম মিটিং শেষ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হাথুরু।
নাহ কোনো রকম ভ্রূ কোচকানো নয়। একদম প্রাণ খুলে কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের কোচ। দীর্ঘ আলাপচারিতায় উঠে এসেছে নানা প্রসঙ্গ। অনেক কথার ভিড়ে প্রথমেই জানাতে ভুল হয়নি, ওয়ানডে সিরিজের সব ম্যাচ হারে তিনিও হতাশ।
হাথুরুর সোজা সাপ্টা উচ্চারণ, ‘যার কাছে আর যেখানেই হোক না কেন, ৩-০তে হারা সবসময়ই হতাশার।’ তবে সবচেয়ে বড় হতাশা কোনটি? তা নিয়ে খানিকটা দ্বিধাগ্রস্ত হাথুরু। তবে অধিনায়কের সুরে সুর মিলিয়ে তিনিও বলেছেন, সবচেয়ে হতাশার কোনটি, সেটি সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। খেলার অনেকটা সময়ের নিয়ন্ত্রণ ফলিয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় আছে রাজ্যের হতাশা। একটি কারণ উল্লেখ করতে বলা হলে আমি সেটাই বলবো।’
এই যে মাঝে মধ্যে বা একটা সময় ভালো খেলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা, সুযোগ তৈরি এবং শেষ পর্যন্ত সাফল্য নাগাল না পাওয়া? এটা কি শুধুই হতাশার? নাকি এর অন্তর্নিহিত কারণও আছে? এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ কোচের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তিনি আরও অভিজ্ঞতা বাড়ানোর তাগিদ দিচ্ছেন।
তাইতো মুখে একথা ‘কেন একটা সময় বা অংশে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করেও শেষ পর্যন্ত জিততে না পারার মধ্য দিয়ে একটা সত্য ফুটে উঠেছে। বোঝা গেল আরও বেশি অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।’
এছাড়া তার মনে হয় আরও একটা ঘাটতির ক্ষেত্র আছে। তাহলো দরকারের সময় আরও উপযোগী এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়া। সেই জায়গায়ও ঘাটতি ছিল। পুরো সিরিজে নিজ দলের পারফরম্যান্সে অসন্তুষ্ট হাথুুরু সিংহে। ব্যর্থতা ও না পারার সম্ভাব্য ক্ষেত্র হিসেবে ঠিক কী চিহ্নিত করে ফেলেছেন।
তার ব্যাখ্যা, পারফরম্যান্স হতাশাজনক অবশ্যই। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, দীর্ঘদিন পর আমরা বিদেশের মাটিতে খেলতে এসেছি। অস্ট্রেলিয়া-নিউজল্যান্ডে দীর্ঘদিন পর খেলতে গিয়ে নিজেদের শক্তি, মেধা ও সামর্থে্যর প্রমাণ দেয়া কঠিন। এটাও মাথায় রাখতে হবে। আমরা পাঁচ বছরের বেশি সময় পর নিউজিল্যান্ডে খেলতে এসেছি।
এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম