২৮ মাস পর হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৪ সালের আগস্টে সর্বশেষ হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। মুশফিকের ক্যারবীয় দ্বীপপুঞ্জে অনুষ্ঠিত ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ হেরেছিল ৩-০ ব্যবধানে। এরপর মাশরাফির নেতৃত্বে ৭টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ, যার ৬টিতেই জয়ী লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারলেও (২-১) হোয়াইটওয়াশ চোখ রাঙ্গাতে পারেনি। তবে এবার নিউজিল্যান্ড সফরে এসে নিজের অধিনায়কত্বে প্রথম আর দীর্ঘ ২৮ মাস পর হোয়াইটওয়াশ হল মাশরাফি নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ।
আগের দুই ম্যাচ হেরে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি নিছক নিয়মরক্ষার হলেও মাশরাফিদের জন্য ছিল মুখরক্ষারও। আর তা করতে গিয়ে শুরুটাও পেয়েছিল দুর্দান্ত। ২১.২ ওভারে বিনা উইকেটে ১০২ রান। তবে এরপর হঠাৎই বদলে যায় দৃশ্যপট। আউট হওয়ার মিছিলে যোগ দেন ব্যাটসম্যানরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৩৬ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।
শনিবার নেলসনের সেক্সটন ওভাল স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে উড়ন্ত সূচনা পায় টাইগাররা। ১০২ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে আউট হন ইমরুল। মূলত নেইল ব্রুমের অতিমানবীয় ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন এ ওপেনার। শর্ট থার্ডম্যানে প্রায় ১০ গজ পিছনের দিকে দৌড়ে ঝাপিয়ে পড়ে এক হাতে ক্যাচ লুফে নেন ব্রুম।
ইমরুলের বিদায়ের পরই শুরু হয় ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিল। এক একে ফিরে যান সাব্বির, মাহমুদউল্লাহ, তামিম, সাকিব, মোসাদ্দেক ও তানবীর। মিডেল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিনা উইকেটে ১০২ রানে থাকা বাংলাদেশের রান হয় ৭ উইকেটে ১৭৯ রান।
তবে অষ্টম উইকেটে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নিয়ে ৩৩ রানের জুটি গড়ে দলের রান দুইশত পার করেন নুরুল হাসান সোহান। শেষদিকে ঝড়ো ব্যাটিং করে ৩৯ বলে ৪৪ রানের দারুণ কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন তিনি। ৩টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে এ রান করেন তিনি।
তবে ক্যারিয়ারের ৩৪তম হাফসেঞ্চুরি তুলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন তামিম। ৮৮ বল মোকাবেলা করে ৫টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৬২ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৪৪ রান করেন ইমরুল। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ৩৮ রানে ২টি উইকেট নেন সান্টনার। এছাড়া সাউদি, প্যাটেল, হেনরি, নিশাম ও উইলিয়ামসন ১টি করে উইকেট নেন।
বাংলাদেশের দেওয়া ২৩৭ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। শতভাগ ফিট না থাকায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলতে না পারা মোস্তাফিজ সিরিজের শেষ ম্যাচে মাঠে নেমেই নিজের ঝলক দেখান। নিজের প্রথম ওভারেই ল্যাথামকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে ফেরান এই বিস্ময় বালক। এরপর দলীয় ১৬ রানে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন গাপটিল।
প্রথম উইকেট হারানো ধাক্কা সামলে শূন্য রানে জীবন পাওয়া নিল ব্রুমের সঙ্গে ১৭৯ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে জয়ের পথে নিয়ে যান কিউই অধিনায়ক উইলিয়ামসন। মোস্তাফিজের বলে মাশরাফিকে ক্যাচ দিয়ে ৯৭ রানে ব্রুম ফিরে গেলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক। শতকের চেষ্টা না করে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ৯৫ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে ২ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন উইলিয়ামসন।
এমআর/এমএস