একটা জয় খুবই দরকার
শেষ ম্যাচটা দিয়ে শুরু করবো। এই ম্যাচে আমরা ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিলাম। ২৫১ রান তাড়া করতে গিয়ে আমাদের ওপেনিংটা মোটামুটি একটা ভালো ছিল। দলকেও ভালো অবস্থানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। তামিমের ছিল দুর্ভাগ্য যে, একটা ভালো শট খেলতে গিয়ে আউট হয়ে গেছে। ইমরুল ভালো খেলেছে, সাব্বির ভালো খেলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে গেছে।
এই ম্যাচে আমাদের জন্য জন্য যা করতে হবে, সিনিয়র ব্যাটসম্যান যারা আছে, তাদেরকে রানে থাকতে হবে। যেমন রিয়াদ আছে, তামিম, সাকিব- এই তিনজন গত ম্যাচে রান করতে পারেনি বিদায় আমরা নিউজিল্যান্ডের দেয়ার সহজ লক্ষ্য ২৫১ রান ক্রস করতে পারিনি।
যখন আমরা ফিল্ডিং করছিলাম, তখন মনে হচ্ছিল তাদেরকে ২০০ কিংবা সর্বোচ্চ ২২০ রানের মধ্যে অলআউট করে দিতে পারবো। তবে, শেষ পর্যন্ত ২৫১ রান এই উইকেটে, স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটু বেশিই হয়ে গেছে। আাবার দুটো ম্যাচেই কিন্তু আমরা পরে ব্যাটিং করছি। যদি আমরা আগে ব্যাটিং করি, তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে একটা ভালো স্কোর গড়ে তুলতে হবে।
নেলসনে এর আগের ম্যাচে আমরা টস জিতেছিলাম। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয়াটা ছিল খুবই সঠিক সিদ্ধান্ত। কারণ উইকেটে যেভাবে বোলাররা অ্যাডভান্টেজ পাচ্ছিল, তা দেখে আমার মনে হয়, যদি আমরা আগে ব্যাটিং করতাম, তাহলে আমাদেরকেই ভুগতে হতো বেশি।
নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সুবিধা, তাদের টেলএন্ড পর্যন্ত ভালো ব্যাটসম্যান রয়েছে। এ কারণে ওরা এতগুলো রান করে ফেলতে পারছে। এ কারণে দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার সিদ্ধান্তটা আমার কাছে সঠিক মনে হয়েছে।
শেষ ম্যাচেও যদি আমরা টস জিতি, তাহলে আমার মতামত হলো, পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া। কারণ এই ম্যাচে উইকেট কেমন হয়, সেটা তো এখানে বসে বলতে পারছি না। তবে যদি, ফ্ল্যাট উইকেট হয়, তাহলে চোখ বন্ধ করে ব্যাটিং নেয়া উচিৎ। উইকেট ভিন্ন হলে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিলেই ভালো হবে।
আগে ব্যাটিং করলে প্রেসারটা থাকে না যে রান তাড়া করতে হবে। পরে ব্যাটিং করলে প্রেসারটা থাকে, কারণ তখন রান তাড়া করতে হয়। এ কারণে প্রথমে ব্যাটিং করলে চাটমুক্ত হয়ে ব্যাটিং করতে পারবে এবং ভালো একটা স্কোর গড়লে ওদেরকে ভালো চাপে ফেলা যাবে।
আমাদের মূল ব্যাটসম্যান যারা রয়েছে, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব- তাদের রান করতে হবে। সাকিব প্রথম ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে পারেনি। মাহমুদউল্লাহর ব্যাপারে বলবো, সে অফ ফর্মে নয়, দুটো ভালো বলে আউট হয়ে গিয়েছে। এটা দুর্ভাগ্য। আমার বিশ্বাস সে রানে ফিরতে পারবে। তামিমও ফিরে আসবে। এদের একজন, দু`জন রান করলেই আমাদের জন্য ভালো হবে।
যত যাই বলি, একটা জয় আমাদের খুবই দরকার। কারণ, নিউজিল্যান্ডে গিয়ে এখনও আমরা কোনো জয় পাইনি। দ্বিতীয়ত হলো, এই সিরিজটার জন্য জয় আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সামনে টি-টোয়েন্টি আছে, টেস্ট আছে। এ কারণে, আমার প্রত্যাশা বলুন কিংবা বিশ্বাস, যাই বলুন- বাংলাদেশ এই জায়গা থেকে কামব্যাক করতে পারবে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এই সিরিজের সূচি নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছে দেখি। তবে আমার বক্তব্য হলো, এখন যে ফরম্যাটে খেলা হয়, সে কারণে টিমও তো সেভাবে করা হয়। যারা প্রতিষ্ঠিত খেলোয়াড় এবং যারা নিয়মিত খেলে থাকে, ওদেরকে এটা মেনেই নিতে হয়। সূচির কারণে যদি সমস্যা হয়, তাহলে সেটা তো ওদের (নিউজিল্যান্ড) জন্যও সমস্যা হওয়ার কথা।
ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাটের হওয়ার কারণে এডজাস্টমেন্টের যে বিষয়টা থাকে, সে কারণে আমরা আগেই সেখানে চলে গিয়েছি। অস্ট্রেলিয়ায় দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। অনুশীলন করেছি। কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে নিউজিল্যান্ডেও আগে গিয়েছি।
মোস্তাফিজ ফিরছে শেষ ম্যাচে। এটা খুুবই আশাব্যঞ্জক খবর। দলের বোলিং শক্তি অনেক বেড়ে যাবে। তবে আমার বক্তব্য হলো, ওর ছন্দে ফেরাটা হবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, একটা ফাস্ট বোলার লম্বা ইনজুরি থেকে ফিরলে তাদের ফর্মে ফিরে আসতে, ছন্দে ফিরতে বেশ সময় লাগে।
যেটা রুবেলের ক্ষেত্রে দেখেছি আমরা। বিপিএলের শুরুতে কিন্তু ওর পারফরম্যান্স চোখে পড়েনি। তবে যতগুলো ম্যাচ খেলতে শুরু করেছে, ধীরে ধীরে ফর্মে ফিরতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। মোস্তাফিজের ব্যাপারে আশা করছি, সে যত তাড়াতাড়ি ছন্দে ফিরবে, তত তাড়াতাড়ি ভালো হবে আমাদের দলের জন্য।
নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে দলে রয়েছে রুবেল। অনেকেই বলছে, তাকে একাদশে রাখা ঠিক ছিল না! এ বিষয়ে আমি মনে করি, সেখানে টিম ম্যানেজমেন্ট রয়েছে। তারাই যেটা ভালো মনে করবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে। সেখানকার কী পরিস্থিতি, কী কন্ডিশন, সে অনুযায়ী কাকে খেলানো উচিৎ, সে সিদ্ধান্ত তারা নেবে। সেখানে নির্বাচকরাও আছে। কোচ-স্টাফরা আছে। তারাই ভালো বুঝবে, কী সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।
আইএইচএস/এনইউ/এমএস