রান আউট নিয়ে অনুতপ্ত ইমরুল-সাব্বির
ক্রিকেট শুধু অনিশ্চয়তায় ভরা আর সব সম্ভবের খেলাই নয়, অনেক ‘যদি ও তবের’ খেলা। কি হলে কি হতো? এই হলে সেই হতো। যদি অমন না হতো, তাহলে অন্য কিছু হতো। ইত্যাদি, ইত্যাদি।
গতকাল নেলসনে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের পর অনেক কথাই উঠছে। অনেকেই বলছেন, ‘ইস যদি সাব্বির রান আউট না হতেন। তাহলে ইমরুল-সাব্বির জুটি আরও বড় হতো। আর ওই জুটি বড় হলে হয়ত খেলার চালচিত্র অন্যরকমও হতে পারতো।’
তা তো অন্যরকম হতেই পারত। ২৫২ যখন টার্গেট, তখন ১ উইকেটে ১০৫- রীতিমত শক্ত ভীত। এরকম অবস্থায় রান আউট হয়ে যান সাব্বির। তাও অল্প রানে নয়, ৩৮ রানের এক জ্বলজ্বলে ইনিংস খেলে। ৪৯ বলে তিন ছক্কা ও দুই বাউন্ডারিতে ৩৮ রানের আত্মবিশ্বাসী ইনিংসটি ইতি ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ৭৫ রানের জুটিও ভাঙ্গল।
এ পার্টনারশিপ আর খানিকটা লম্বা হলে খেলার চিত্র অন্যরকম হতে পারতো বৈকি। তাই ওই জুটি ভাঙ্গার পর থেকে আর বিশেষ করে খেলা শেষে দর্শক, ভক্তদের বড় অংশ ওই ভুল বোঝাবুঝির ও দুজন এক প্রান্তে চলে আসার দৃষ্টিকটু রান আউট নিয়ে নিশ্চয়ই রাজ্যের কথাবার্তা। এতো গেল দর্শক-ভক্তদের চিন্তা।
যাদের ভুল বোঝাবুঝিতে একটি সম্ভাবনাময় জুটির অকাল মৃত্যু, সেই ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমান রুম্মন কি ভাবছেন? তাদেরও কি আফসোস-অনুশোচনা তাড়া করে বেড়াচ্ছে? জানতে খুব ইচ্ছে করছে তাই না?
মনে হয় তাদেরও ভিতরে সে রান আউটের দৃশ্য তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আর সে কারণেই হয়ত আজ দুপুরে পুরো দল যখন কাছেই মসজিদে জুমার নামাজ পড়ল, তখন ইমরুল ও সাব্বির কাটালেন হোটেল কক্ষে। পরে দেখা মিললো দুজনার।
সাব্বির একদম ফিটফাট। ফুলবাবুটি সেজে। আর ইমরুল ট্র্যাক স্যুট আর জ্যাকেট পরা। টিম হোটেল ট্র্রেইলওয়েজের সামনে দাঁড়িয়ে দুজন খানিক খুনসুুটিও করলেন। ইমরুলকে জড়িয়ে সাব্বিরের রসিকতা- ‘আপনি আমার শত্রু। যান। কথা নেই আপনার সাথে।’ সেটা যে নিছক রসিকতা। তার প্রমাণ মিললো কিছু সময় পর।
শুক্রবার নেলসনে বাংলাদেশের টিম হোটেলে এ সিরিজ কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় সাব্বির বলে উঠলেন, ‘আমাদের গলায় গলায় ভাব। দুজন বেশিরভাগ সময় এক সঙ্গেই থাকি। বোঝাপড়াও দারুণ। ইমরুল ভাই তো আর আমার শত্রু নন।’
এর আগে ইমরুল কায়েসও আসলেন স্বদেশি মিডিয়ার সামনে। তার কাছে রাখা হলো প্রশ্ন, ওই রান আউটের বিষয়টি। দুজনার এক কথা, রান আউটটি অবশ্যই ভুগিয়েছে। তবে সেটা খেলারই অংশ।
ইমরুলের কথা, ‘রান আউট খেলারই অংশ। রান আউট হওয়ার আগে পর্যন্ত সব ভালই চলছিল। দুজনার বোঝাপড়াও ছিল ভাল; কিন্তু একটা ভুল হয়ে গেছে। ওটা অবশ্যই টার্নিং পয়েন্ট ছিল। আমারও মনে হয় আমি সাব্বির আরও কিছুটা সময় খেলে আসতে পারলে কাজটা আরও সহজ হয়ে যেত।’
অন্যদিকে সাব্বিরের কথা, ব্যাট প্লেস করা নিয়ে কোনো চিন্তা ছিল না। আগে করব না পরে করব। ইমরুল ভাই আগে চলে গেছেন। সে জন্য উনি বেঁচে গেছেন। আমি আউট হয়ে গেছি। উনি সেট ব্যাটসম্যান ছিলেন। আমার উচিত ছিল ওনাকে ক্রিজ ছেড়ে দেওয়া। ভবিষ্যতে এটা হবে না। আমরা সবসময় এক সঙ্গে থাকি। এ রকম আলোচনা হয়নি এর আগে। এমন না যে, রান আউট করছে আমার শত্রু।’
এআরবি/আইএইচএস/এমএস