ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

মুশফিক-মোস্তাফিজ থাকলে হয়তো ম্যাচটা আমরাই জিততাম

প্রকাশিত: ০৩:৪৫ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬

টস জিতে প্রথমে ওদেরকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর পর ২৫১ রান করেছে তারা। তবে আমার মনে হয়, ওদেরকে আরও কম রানে বেধে রাখা যেতো। যেখানে ১০৭ রানে ৫ উইকেট চলে গিয়েছিল, সেখান থেকে ২৫০ প্লাস রান করে ফেলেছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী এটা অনেক বেশি রান হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, আমরা আরও ২০/৩০ রান কমে ওদেরকে বুক করে ফেলতে পারতাম- এটা একটা দিক।

দ্বিতীয় দিক হলো, তারা যদি ২২০ রানও করতো, আমরা যে ব্যাটিং করেছি, তাতে কোনোভাবেই জিততে পারতাম না। এটাই সত্যি। আমার মনে হয় যে, ব্যাটিংয়ে আমাদেরকে আরও মনযোগী হতে হবে। এই ম্যাচ শেষেই বোঝা গেলো, আমাদের যে সিনিয়র ক্রিকেটার রয়েছে তারা যদি রান না করে তাহলে দলের এমন অবস্থা হবে।

যেমন প্রথম ম্যাচে তামিম হয়তো ভালো রান করেছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো স্টার্ট করেও রান করতে পারেনি। সাব্বির ভালো খেলতে শুরু করেও দুর্ভাগ্যক্রমে রানআউট হয়ে গেলো। রিয়াদ দুই ম্যাচেই রান করতে পারেনি। তাদের সামর্থ্য নিয়ে আমার কোন সংশয় নেই। কিন্তু এ ধরনের ম্যাচগুলোতে রানগুলো যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
braverdrink
আমাদের দু’জন মূল খেলোয়াড় (মুশফিক, মোস্তাফিজ) ছিল না আজ। তারা দু’জন থাকলে হয়তো আমরাই জিতে যেতাম। খুব ভালোভাবেই সিরিজে কামব্যাক করতে পারতাম। আর তানবিরের কথা বলবো, সে এই লেভেলে জীবনে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছে। আসল কথা হলো, আমাদের দলে একটা লেগি (লেগ স্পিনার) খুবই দরকার। তাকে কিন্তু সময় দিতে হবে।

একই সঙ্গে অবশ্যই তাকে ডে বাই ডে উন্নতি করতে হবে। কারণ, উন্নতি করলে সে ম্যাচ জেতাতে পারবেই। যদি সে নিজের উন্নতি করতে না পারে, তাহলে কোনোদিন ম্যাচ জেতাতে পারবে না। বরং, সে দলের জন্য আরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। এটা কিন্তু একটা ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ও।

তারপরও আমি মনে করি, ব্যাটিংয়ে ২৫২ রান তাড়া করতে পারতাম। আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনিংটা পরপর দুই ম্যাচে ভালো করতে পারেনি। যেটা আগে ভালো ছিল। একই সঙ্গে ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। তারওপর মুশফিক ছিল না। সে আমাদের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। সে থাকলে মিডল অর্ডার যেভাবে স্ট্রং হয়, সে না থাকলে সে জায়গাটা দুর্বল হয়ে যায়। তার অভাবটা আমরা অনুভব করেছি।

আমাদের ব্যাটিংয়ের স্তম্ভই তো হলো তামিম, ইমরুল, সাব্বির, রিয়াদ, মুশফিক আর সাকিব। এদের একজন না থাকলে তখন তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। সৈকত নতুন আসছে, খেলতেছে। ধীরে ধীরে সে নিজেকে প্রমাণ করছে। আশা করছি ভবিষ্যতের জন্য সে নিজেকে গড়ে তুলছে এবং প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যাটসম্যান হয়ে যাবে সে।

একই সঙ্গে মোস্তাফিজ খেলতে পারেনি। সে আমাদের মেইন বোলার। তার থাকাটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সে থাকলে হয়তো আমরা তাদেরকে আরও কম রানে বেধে ফেলতে পারতাম। যদি তা নাও হতো, তবুও সে খুবই ভালো মানের একজন বোলার। সে দলে থাকলে তা প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাস হয়ে যায়। মোস্তাফিজ-মুশফিক না থাকার অর্থ হলো, আমরা আসলে দলের ৮০ ভাগ শক্তি নিয়ে খেলেছি।

বোলিংয়ে একটা ঘাটতি ছিল মোস্তাফিজ আর ব্যাটিংয়ে একটা ঘাটতি ছিল মুশফিকের অনুপস্থিতি। প্রথম ম্যাচের তুলনায় যদিও আজকের বোলিংটা অনেক ভালো হয়েছিল। তবে আমার মনে হয়, আরও ভালো হতে পারতো। শুভাশিস শুরুতে খুব ভালো খেলেছে। তবে এই পর্যায়ের ক্রিকেটে এসে পরিস্থিতি অনুযায়ী বোলিং করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই ম্যাচে তিনজনকে অভিষিক্ত করানো হলো। শুভাশিস, তানবির আর সোহান। তিনজনই দীর্ঘদিন থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো ক্রিকেট খেলে আসছে। তবে আমার বিশ্বাস, তারা নিজেদের অ্যাডজাস্ট করে নিতে পারবে খুব দ্রুত। আবার এই পর্যায়ে এসে অ্যডজাস্ট হতে একটু সময় লাগে। আমার বিশ্বাস, নিজেদের মানিয়ে নিতে পারলে এরা ভালো করবে। একই সঙ্গে তাদের ওপর আমাদেরও আস্থা রাখতে হবে।

ইতিমধ্যেই দেখছি নাসিরকে নিয়ে অনেক আলোচনা শুরু হয়েছে। তাকে রাখলে নাকি অনেক ভালো হতো। বাংলাদেশ জিতে যেতে পারতো। জাতীয় লিগে ডাবল সেঞ্চুরি করে নাসির আবার সে দাবির যথার্থতা দেখিয়েছে। তবে আমি বলবো, অবশ্যই সে একজন ভালোমানের ক্রিকেটার। ভালো খেলে। তবে, ভালো খেলোয়াড় আর ভালো খেললেই জাতীয় দলে খেলার যোগ্য হয়ে যায় না। তার সঙ্গে আরও অনেক কিছুর প্রয়োজন হয়। সে রান করছে, সেঞ্চুরি-ডাবল সেঞ্চুরি করছে। এটা অনেক ভালো। প্রতিযোগিতায় সে নিজেকে নিয়ে আসতে পেরেছে। এটা দলের জন্যও একটা শুভ লক্ষ্মণ।

তবে একটা জিনিস সবার মাথায় রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে খেলা আর নিউজিল্যান্ড গিয়ে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের সামনে খেলার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে। তবে, নিঃসন্দেহে নাসির খুব ভালো ক্রিকেটার। আশা করছি, সে যেভাবে পারফর্ম করছে, সে ফিরে আসবে। যে কোনো সময় বাংলাদেশ দলে সে জায়গা পেতে পারে।

আইএইচএস/

আরও পড়ুন