ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

অবশেষে বাস্তবতায় ফিরলেন সালাউদ্দিন

প্রকাশিত: ০১:৪৩ পিএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৬

বিশ্বকাপে খেলার অলীক স্বপ্ন, কথায় কথায় ইউরোপের উদাহরণ টানা থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত বাস্তবতায় ফিরলেন বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার বিশ্বকাপের মূলপর্ব থেকে চোখ নামিয়ে এনেছেন দক্ষিণ এশিয়ায়। সভাপতি হিসেবে তৃতীয় মেয়াদ শেষে তিনি বাংলাদেশকে দেখতে চান সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আর এশিয়ায় একটি সম্মানজনক অবস্থানে। শনিবার বাফুফে ভবনে আগামী চার বছরের পরিকল্পনা ও ক্যালেন্ডার ঘোষণা করে এমনই লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি।

দুই মাস আগে থিম্পুতে ভুটানের কাছে জাতীয় দলের হারের পর দেশের ফুটবলের ভিতটাই কেঁপে ওঠে। চতুর্মুখী সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হচ্ছিলেন কাজী মো. সালাউদ্দিন। চায়ের টেবিল, পত্রিকার পাতা আর টিভি পর্দায় বইতে থাকে সমালোচনার ঝড়। সাবেক খেলোয়াড়-কর্মকর্তা আর সমর্থকরা বাফুফের বর্তমান কমিটিকে ব্যর্থ হিসেবে উল্লেখ করে দেশের ফুটবলকে ধ্বংসের জন্য দায়ী করেন। দাবি ওঠে, বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের পদত্যাগও।

ভুটান-লজ্জার পর বাফুফে সভাপতি বলেছিলেন, কিছুদিন পর আগামী চার বছরের পরিকল্পনা ও ক্যালেন্ডার ঘোষণা করবেন। প্রায় দুই মাস পর ঘটা করেই চার বছরের সে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন তিনি। তবে এই ঘোষণায় নেই উচ্চাভিলাসী কোনো কর্মসূচি। গোটা পরিকল্পনাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবভিত্তিক। এখন বাস্তবায়ন হলেই স্বার্থক হয়। কারণ, এমন ক্যালেন্ডার এর আগেও দেখেছে দেশের মানুষ। হয়তো এমন ঘটা করে আগে ঘোষণাটি আসেনি।

চার বছরের পরিকল্পনা ও ক্যালেন্ডার ঘোষণা করতে গিয়ে বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘নির্বাচনের পর আমি ওয়াদা করেছিলাম ২০২০ সাল পর্যন্ত ক্যালেন্ডার দিয়ে দেব। আমি সেটাই ঘোষণা করছি। এটা আমার একার নয়, নির্বাহী কমিটির অনুমোদিত পরিকল্পনা ও ক্যালেন্ডার। বিষয়টি নিয়ে ৩ বার সভা করেছি। সবার মতামত ও সমর্থন নিয়েছি। আগামীতে যদি কেউ বলেন কিছু জানেন না, তাহলে তিনি মিথ্যাবাদী। ’

কি আছে বাফুফের এ মহা পরিকল্পনার মধ্যে? জানা যাক বাফুফে সভাপতির কাছ থেকেই, ‘আমরা একটু ভিন্নভাবে পরিকল্পনা করেছি। কার্যক্রমকে আমরা ভাগ করেছি দুই ভাগে। একটা হলো বিভিন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন। আরেকটি ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি। আমাদের দেশের ক্লাবগুলোর অবস্থা বিদেশের ক্লাবগুলোর মতো নয়। হয়তো আগামীতে হবে। যে সব খেলা আমাদের নিয়মিত হয় সেগুলো ক্যালেন্ডারে রেখেছি। কিছু অতিরিক্ত আছে নতুন ক্যালেন্ডারে। যেমন- ক্লাবগুলোর অনুর্ধ্ব-১৮ লিগ। ইয়ুথ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ থাকছে। থাকছে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপও। আমার কাছে প্রস্তাব ছিল এক বছর যুব ন্যাশনাল, আরেক বছর ন্যাশনাল করার। আমি বলেছি, প্রতি বছরই দুটি জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ হবে। কারণ, দেশব্যাপি এ দুটি টুর্নামেন্টের পাশপাশি জেলার লিগগুলো নিয়মিত হলেই ঢাকার বাইরের সবকিছু কাভার করবে।’

যুব ও জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এক সময় তো হতোই। হয়তো বন্ধ ছিল। তাহলে নতুন কি আছে? ‘২০১৭ সাল থেকে নতুন যে বিষয়টি হবে তাহলো আবাসিক ক্যাম্প। আগামী চার বছর ধারাবাহিকভাবে আবাসিক ক্যাম্প হবে ছেলেদের অনূর্ধ্ব-১৪, ১৬ ও ১৯ এং মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৪ ও অনূর্ধ্ব-১৬। এ ৫ গ্রুপে ধারাবাহিকভাবে ক্যাম্প হবে চার বছর। খেলোয়াড় বাছাই প্রক্রিয়াও হবে অন্য রকম। ৫টি বিভাগে ৭দিন করে ট্রায়াল হবে। যাতে কোনো প্রতিভা বাদ না যায়। ট্রায়ালের প্রথম দিন আমি নিজে উপস্থিত থাকবো’- বলেছেন বাফুফে সভাপতি।

চার বছর ৫টি দলকে টানা ক্যাম্পে রেখে অনুশীলন করাতে বিশাল অর্থ প্রয়োজন। কোথা থেকে আসবে এ টাকা? সে আভাসও দিয়েছেন কাজী সালাউদ্দিন, ‘আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে আমাদের অর্থের উৎস জানাতে পারবো। ফান্ড কোত্থেকে কি পরিমান আসছে, সবই জানিয়ে দেব।’

ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আগামী মৌসুমের দলবদল হবে এপ্রিলে। মে মাসে ফেডারেশন কাপ দিয়ে মাঠে গড়াবে ফুটবল। জুন থেকে অক্টোবর- এই ৫ মাস হবে লিগ। এখন থেকে প্রিমিয়ার ও চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ হবে এক সাথে। নভেম্বর মাসে স্বাধীনতা কাপ দিয়ে শেষ হবে ক্লাবগুলোর ঘরোয়া মৌসুম। এর পর হবে আন্তর্জাতিক সব টুর্নামেন্ট। এখন থেকে সোহরাওয়ার্দি কাপ হবে অনূর্ধ্ব-১৮ ন্যাশনাল ডিস্ট্রিক চ্যাম্পিয়নশিপ নামে। আর শেরে বাংলা কাপ হবে জাতীয় ডিস্ট্রিক চ্যাম্পিয়নশিপ নামে। এ দুটি টুর্নামেন্টের মাঝে হবে জেলার লিগগুলো।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে বাফুফে সভাপতি বলেছেন, ‘৮ বছর আগে আমি যখন প্রথম দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন বলেছিলাম ফুটবল মাঠে রাখবো। আমি রাখতে পেরেছি। তৃতীয় বছরে এসে আমরা ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যদিও এটা বাফুফের কাজ নয়। আমি এ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছি অনেক হোমওয়ার্ক করে। যে কর্মসূচি দিয়েছিল তা অর্থের নিশ্চয়তা নিয়েই।’

আরআই/আইএইচএস/আরআইপি

আরও পড়ুন