ঢাকার কাছে হেরে দুর্দশা আরো বাড়লো রংপুরের
চট্টগ্রাম পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষেই ছিল রংপুর রাইডার্স। হঠাৎ তাদের ছন্দ পতন। ঢাকায় তৃতীয় পর্বে হারের বৃত্তেই রইলো রংপুর রাইডার্স। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বুধবার ঢাকা ডায়নামাইটের কাছে ৪২ রানের পরাস্ত হয়েছে তারা। ঢাকার কাছে হেরে দুর্দশা আরো বাড়লো রংপুরের। সেরা চারের লড়াইয়ে ওঠার অনেকটা কঠিন হয়ে গেলো নাঈম ইসলামের দলের।
এই হারে লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে রংপুর। ১০ ম্যাচ শেষে তাদের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট। সমান পয়েন্ট নিয়ে রাজশাহী কিংস উঠে এসেছে তালিকার চতুর্থ স্থানে। রাজশাহী অবশ্য এক ম্যাচ কম খেলেছে। ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ঢাকা ডায়নামাইটস। ঢাকার চেয়ে ২ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকা চিটাগাং ভাইকিংসের (১২ পয়েন্ট) অবস্থান দ্বিতীয়। ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে রানরেটে পিছিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা টাইটান্স।
এদিকে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে রংপুর। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। বড় লক্ষ্য দেখেই হয়তো শহিদ আফ্রিদিকে ওপেনিংয়ে নামায় তারা। কাজের কাজটা করতে পারেননি। উল্টো রংপুরের কষ্ট বাড়ালেন তিনি। রানের খাতা না খুলতেই সাজঘরে পাড়ি জমান পাকিস্তানি এই হার্টহিটার।
এছাড়া নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মোহাম্মদ মিথুনও। মাত্র ১ রান করতেই আবু জায়েদের শিকার তিনি। ৮ রান করা সিহান রুপাসিঙ্গে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন সাকিব আল হাসানের বলে। নাসির জামশেদকেও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে দিলেন না সাকিব। ২১ রান করে সাজঘরে ফেরেন জামশেদ। লিয়াম ডাউসন ১১ রান করেন। রানআউটে কাটা পড়া সৌম্য সরকার থামেন ১ রানে।
৪৬ রানে ছয় উইকেট হারানো রংপুরকে টানতে থাকেন সোহাগ গাজী ও জিয়াউর রহমান। সপ্তম উইকেটে ৮৭ রানের জুটি গড়েন তারা। এই জুটি ভাঙেন ডোয়াইন ব্রাভো। সোহাগ গাজীকে নাসির হোসেনের তালুবন্দী করান এই ক্যারিবিয়। ২৬ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ৩৬ রান করেন সোহাগ।
তবে জিয়া তুলে নেন ফিফটি। তিনি আবু জায়েদের শিকার। ৪৩ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ৬০ রান আসে জিয়ার ব্যাট থেকে। মুক্তার আলী অপরাজিত থাকেন ৪ রানে। আর রংপুর করতে সক্ষম হয় ৮ উইকেটে ১৪৬ রান।
ঢাকার হয়ে তিনটি উইকেট নেন আবু জায়েদ। সাকিব আল হাসান নেন দুটি উইকেট। আর একটি করে উইকেট পকেটে পুরেছেন সেকুগে প্রসন্ন ও ডোয়াইন ব্রাভো।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন ঢাকার অধিনায়ক সাকিব। মেহেদী মারুফের নিয়মিত সঙ্গী কুমার সাঙ্গাকারার জায়গায় ওপেনিং করতে নামেন লুইস। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন লুইস। প্রথম দুই ওভারে মাত্র এক বল মোকাবিলা করার সুযোগ পান তিনি। পরের ওভারেই সোহাগ গাজীকে পয়েন্টের উপর দিয়ে চার মেরে ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সূচনা করেন এ ক্যারিবিয়ান।
এরপর সপ্তম ওভারে মাত্র ২১ বলে তুলে নেন নিজের হাফ সেঞ্চুরি। আফ্রিদির করা সে ওভারে তিনটি ছক্কা মারেন তিনি। তৃতীয় ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ক্রিস গেইলের স্বদেশী। সেঞ্চুরির দিকে আগাতে থাকা লুইসকে আটকান অনিয়মিত বোলার সৌম্য সরকার। আরও একটি ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েন তিনি। অতিরিক্ত ফিল্ডার ইলিয়াস সানির দারুণ ক্যাচ আউট হওয়ার আগে ৭৫ রান করেন লুইস। এ রান করতে বল খেলেন ৩৪টি। ৩টি চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কার সাহায্যে নিজের ইনিংস সাজান এ ক্যারিবিয়ান।
৩৪ বলে ৪০ রান করে সাজঘরে ফেরেন ঢাকার হয়ে চলতি মৌসুমে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মেহেদী মারুফ। শেষ দিকে সাকিবের ২৯ রানের সঙ্গে ব্রাভোর ১৬ আর মোসাদ্দেকের ১৪ রানের উপর ভর করে ১৮৮ রানের সংগ্রহ পায় ঢাকা। রংপুরের পক্ষে রুবেল নেন ৩ উইকেট।
এনইউ/এমএস