এশিয়া কাপ আয়োজকের দৌড়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
অনেক দিন ধরেই এশিয়া কাপের আয়োজক হতে তোড়জোড় চালিয়ে আসছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। এবার সম্ভবত সে চেষ্টা সফল হতে যাচ্ছে। আগামী বছর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর দশম এশিয়া কাপের যে তারিখ নির্ধারণ আছে সেটা হতে পারে বাংলাদেশে।
শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ আয়োজক হলে দীর্ঘ ৩২ বছর পর আবার ঢাকায় বসবে এশিয়া হকির সবচেয়ে বড় এ আসর। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় হয়েছিল এশিয়া কাপ হকি। সেবার ফাইনালে ভারতকে ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান।
রোববার হংকংয়ে এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পাশাপাশি অর্জন করেছে এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতাও। ঢাকায় আয়োজন হলে এশিয়ার সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠেই লড়ার সুযোগ পাবেন জিমি-চয়নরা। এশিয়া কাপের অন্য ৭ দেশ হচ্ছে- দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, জাপান, চীন ও ওমান।
ভারত, চীন এবং জাপানও এশিয়া কাপ আয়োজনে আগ্রহী। এ তিন শক্তিশালী দেশের সঙ্গে আয়োজক হওয়ার দৌড়ে বাংলাদেশ কী টিকে থাকতে পারবে? আশার বাণী শুনিয়েছেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খাজা রহমত উল্লাহ, ‘শুক্রবার এশিয়ান হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে ফোন করে জানতে চেয়েছিলেন আমরা আয়োজন করবো কি না। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ চাইলেই আয়োজক হতে পারবে। আমি বলেছি, ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এখন দেশের বাইরে। তিনি ফিরলেই সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে জানিয়ে দেব। আশা করছি, আমরা এশিয়া কাপের আয়োজক হতে পারবো।’
এশিয়ান হকি ফেডারেশন কেন বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে? ‘আমি যখন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম তখন থেকেই এশিয়ান হকি ফেডারেশনকে বলে আসছিলাম, আমরা এশিয়া কাপ আয়োজন করতে চাই। তারা শুধু বলেছে, তোমরা ফ্লাডলাইট স্থাপন করো, তাহলেই আয়োজক হতে পারবা’- বলেছেন খাজা রহমত উল্লাহ।
তাহলে ফ্লাডলাইট স্থাপনের কি অবস্থা? খাজা রহমত উল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আশা করছি জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ফ্লাডলাইট স্থাপন সম্পন্ন হয়ে যাবে।’
ফ্লাডলাইট স্থাপন ছাড়া আর কোনো শর্ত আছে? ‘হ্যাঁ, আছে। শুক্রবার এশিয়ান হকি ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলেছিলাম আয়োজক হতে হলে আমাদের কী কী করতে হবে তা লিখিত দেয়ার জন্য। তারা ইতিমধ্যেই কিছু টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন পাঠিয়েছে। সেগুলোর মধ্যে ফ্লাড লাইট তো অবশ্যই প্রথম। কিছু সিকিউরিটি মানিও দিতে হবে। সেটা হাজার বিশেক ডলারের মতো। তাছাড়া এশিয়া কাপের সব খেলা সরাসরি সম্প্রচার হবে স্টার স্পোর্টসে। সে সুযোগ-সুবিধাও তৈরি করতে হবে। এমন আরও কিছু কন্ডিশন ওরা পাঠিয়েছে। সাধারণ সম্পাদক দেশে ফিরলে এ বিষয়টি নিয়ে সভাপতির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবো। এশিয়ান হকি ফেডারেশন চায় আমরাই আয়োজন করি এশিয়া কাপ। এখন আমাদের উপরই সব নির্ভর করছে সব কিছু’- বলেছেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি।
এশিয়া কাপ হকির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮২ সালে পাকিস্তানের করাচি থেকে। দ্বিতীয় আসর বসেছিল ঢাকায় ১৯৮৫ সালে। সর্বশেষ ৭ বারের ৪ বারই হয়েছে মালয়েশিয়ায়। দু’বার হয়েছে ভারতে (নয়াদিল্লী ও চেন্নাই) এবং একবার জাপানের হিরোশিমায়।
আরআই/আইএইচএস/পিআর