ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

প্রথম প্র্যাকটিস সেশনেই গেইলের সরব উপস্থিতি

প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ২৬ নভেম্বর ২০১৬

চার দল খেলছে প্রতিদিন  দুপুর থেকে দুটি করে ম্যাচ। সঙ্গে সকাল ৯টা ও ১১টায় বাকি দলগুলোর প্র্যাকটিস সেশন। খবর সংগ্রহের যত তাগিদই থাকুক না কেন, সে অর্থে দলগুলোর প্র্যাকটিস কভার করা কমই হচ্ছে সংবাদকর্মীদের।

শুরুর আগে ও উইকেটে বল গড়ানোর ক’দিন পর পর্যন্ত শেরেবাংলার একাডেমি মাঠ দেশি বিদেশি ক্রিকেটারের কলতানে মুখর ছিল, তা সময়ের প্রবাহতায় অনেকটাই কমে গিয়েছিল; কিন্তু আজ আবার মিডিয়া কমীদের সরব উপস্থিতিতে মুখর বিসিবি একাডেমি মাঠ।

ঘড়ির কাঁটা সকাল সাড়ে ১০টা স্পর্শ করতেই শেরেবাংলার একাডেমি মাঠে প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক, ফটো সাংবাদিক ও ক্যামেরা ক্রু‘দের ভীড়। শেরেবাংলার মূল মাঠ ও বিসিবি অফিস ছাপিয়ে সবার দৃষ্টি একাডেমি মাঠের দিকে।

শেরেবাংলার মূল গেটের বাইরেও কয়েক শ’ ক্রিকেট অনুরাগির উন্মুখ অপেক্ষা। ব্যাপারটা কী? হঠাৎ কী এমন ঘটল যে সবার চোখ একাডেমির মাঠের দিকে? শেরেবাংলার প্রধান প্রবেশ দ্বারের বাইরেই বা কৌতুহলি দর্শনার্থীর ভীড় কেন? খুব জানতে ইচ্ছে করছে, তাই না?

তাহলে শুনুন, ওপরে যে সব পক্ষের কথা বলা হলো, তাদের অপেক্ষার উপলক্ষ্য হলেন বিশ্ব ক্রিকেটের এক জীবন্ত কিংবদন্তী ‘ক্রিস গেইল’। কথা বলা হলো, সেই সব ফরম্যাটে যার ব্যাট ‘খোলা তরবারি। যিনি নিজের দিনে বিশ্বের সেরা বোলিং শক্তির ত্রাস-আতঙ্ক ও মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ান, সেই ভীষণ ভয়ঙ্কর উইলোবাজ ক্রিস গেইলকে দেখার জন্যই অমন উৎসাহী-আগ্রহীদের সরব উপস্থিতি। একটা অন্যরকম প্রাণ চাঞ্চল্য।

আগেই জানা ওয়েস্ট ইন্ডিজ তথা বিশ্ব ক্রিকেটের এ ড্যাশিং ওপেনার বিপিএল খেলতে আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীতে পা রেখেছেন। শনিবার সকালে তার এবারের দল চিটাগাং ভাইকিংসের প্র্যাকটিসে আসার কথা। যে কথা সেই কাজ।  

আজ সকালে ঠিক চিটাগাং ভাইকিংসের প্র্যাকটিসে উপস্থিত ক্রিস গেইল। সকাল ১১টায় শেরেবাংলার একাডেমি মাঠে প্র্যাকটিসের ঠিক মিনিট বিশেষ আগে টিম বাস থেকে নামলেন ক্যারিবীয় ক্রিকেটের এ সময়ের সেরা তারকা।  

তারপর কোচ সালাউদ্দীনের অধীনে তামিম, এনামুল বিজয়, জহুরুল,  তার স্বদেশি ডোয়াইন স্মিথ এবং ভীনদেশি শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ নবীদের সঙ্গে বিপুল উৎসাহে অনুশীলনে নেমে পড়লেন জীবন্ত এই কিংবদন্তী।

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উত্তর পার্শে¦র একাডেমি ভবন ও মাঠ তার অনেক চেনা জায়গা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বাংলাদেশ সফরে এই মাঠে সকাল-বিকেল অনুশীলন করেছেন। আর আগের তিনবার বিপিএল খেলতে এসেও এ মাঠে অনুশীলনে কেটেছে অনেকটা সময়। এ যেন চেনা ভূমে আবার ফিরে আসা।

শরীরি অভিব্যক্তি, আচার-আচরণ, এর-ওর সাথে কথা বলা, প্রাণ খুলে মেশা, যার তার ইচ্ছে উৎসাহে সাড়া দিয়ে অচেনা-অজানা ও অদেখা অনেকের সঙ্গে সেলফি, ছবি তোলা। এখানেই শেষ নয়। আরও দুটি কাজ করেছেন।

এক. চিটাগাং ভাইকিংসের নেটে এক নাগাড়ে প্রায় তিরিশ মিনিট ব্যাটিং এবং দুই. শেষ পর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা।  

সব মিলে  আজ একাডেমি মাঠে গেইলময় এক বেলা। প্রথম দিন প্র্যাকটিসেই সবার মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল (রোববার) সন্ধ্যায় রংপুর রাইডার্সের বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন সব ফরম্যাটের বিধ্বংসী এ ব্যাটসম্যান।

টি-টোয়েন্টির যে কোন আসরে তার চাহিদা সর্বাধিক। সব ফ্র্যাঞ্চাইজি, কোচ ও অধিনায়কের জানা, গেইল ব্যাট হাতে মাঠে নামা মানেই প্রতিপক্ষ শিবির তটস্থ হয়ে পড়া। বোলারদের মাঝে অজানা শঙ্কা-দুশ্চিন্তা বাসা বাধা। হৃদকম্পন বেড়ে যাওয়া। আর সেটা বিপিএলে হলে তো কথাই নেই।

ইতিহাস জানাচ্ছে বিপিএলের সঙ্গে তার অন্যরকম সখ্য। এক অর্থে ‘গেইল আর বিপিএল- দুজনে দুজনার।’ বাংলাদেশের এ টি-টোয়েন্টি আসরে তার রেকর্ডও দুর্দান্ত। এ আসরের যাত্রাই শুরু হয়েছিল গেইল ম্যাজিকে।

২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএলের প্রথম ম্যাচেই জ্বলে উঠেছিল তার ব্যাট। বরিশাল বার্নাসের হয়ে মাঠে নেমেই অনবদ্য সেঞ্চুরি; ৪৪ বলে ১০১। ৪৮ ঘন্টা পর ১৪ ফেব্রুয়ারি আবার ঝড়ো শতক (৬১ বলে ১১৬)। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় আসরে ঢাকা গ্ল্যডিয়েটর্সের পক্ষে খেলতে এসে সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে আবারও সেঞ্চুরি হাঁকালেন। ৫১ বলে এক ডজন ছক্কায় ১১৪ রানের হার না মানা সেঞ্চুরি।

এরপর গতবছর আবার বরিশাল বুলসের হয়ে খেলা; কিন্তু ২০১৫ সালে আগের গেইলের দেখা মেলেনি। চার ম্যাচ খেলেও সেঞ্চুরি পাননি। সর্বোচ্চ ছিল ৯২ নট আউট। চার ম্যাচে করেছিলেন ১৩৯ রান।

বিপিএলে মোট তিনবারে ১০ খেলায় তিন সেঞ্চুরি এবং প্রতিবার ছক্কার ফুলঝুরি ছুটিয়ে এখন পর্যন্ত ৫০ ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। পরিসংখ্যানের ওই ঔজ্জ্বল্যই বলে দিচ্ছে, তিনি বিপিএল উপভোগ করেন। পিকনিক ম্যুডে নয়, শতভাগ সিরিয়াস থাকেন এবং সামর্থ্যরে সেরাটা উপহার দেয়ার চেষ্টাও করেন।

তাই তো প্রস্তাব থাকা স্বত্তেও এবার শুরু থেকে খেলতে না পারার আক্ষেপ- ‘টুর্নামেন্ট শুরু হয়ে গেছে বেশ অনেক দিন। প্রথম থেকে খেলতে পারলে ভালো লাগত। তবে ব্যক্তিগত ঝামেলায় আসতে পারিনি। লক্ষ্য সবসময়ই ছিল এখানে আসার। আবার আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে। চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে খেলতে মুখিয়ে আছি।’

এআরবি/আইএইচএস/আরআইপি

আরও পড়ুন