দ্বিতীয় ম্যাচেও হারলো বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ম্যাচেও হারলো বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল। আগের ম্যাচে এগিয়ে থেকেও হেরেছিল স্বাগতিকরা। গতকালের ম্যাচেও সেই একই দৃশ্যপট। প্রথমে এগিয়ে থেকেও বিকেএসপিতে ভারতীয় সফরকারী দলের কাছে ১-৫ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ হকি দল।
১৯৯৬ সালে একবারই ভারতকে হারাতে পেরেছিলো বাংলাদেশ। সেবার সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-২১ টুর্নামেন্টে রফিকুল ইসলাম কামালের জোড়াগোলে জিতেছিলো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে বুধবার স্বাগতিকরা হারে ১-২ গোলে। প্রথম ম্যাচের তুলনায় দ্বিতীয় ম্যাচে অনেকটাই নিরুত্তাপ ছিলেন নাভিদ শিষ্যরা। ভুলটা যেন ধরতেই পারছিলো না তারা। মাঝ মাঠ বলতে বারবার চোখে পড়ছিলো বিশাল গ্যাপ। ডিফেন্সের চয়ন, খোরশেদুররা বারবার ভারতের আক্রমণে দিশাহারা হয়ে উঠছিল। তারপরও তিন ফরোয়ার্ড হাসান যুবায়ের নিলয়, মইনুল ইসলাম কৌশিক ও পুস্কর ক্ষিসা মিমো যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ভারতের ডিফেন্ডার গুরজিন্দর, গুরমালকে পরাস্ত করা যেন ছিল চয়নদের জন্য পাহাড়সম কাজ। প্রথম ম্যাচে সবক’টি গোলই হয়েছে পেনাল্টি কর্নার থেকে।
আর দ্বিতীয় ম্যাচে ছয়টি গোলই হয়েছে ফিল্ড থেকে। যা বাংলাদেশের জন্য মোটেও সুখবর নয়। তাই ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের আহত মিডফিল্ডার সাব্বির রানার কথাই বার বার প্রতিফলিত হলো কোচ নাভিদ আলমের কণ্ঠে। তার কথায়, ‘সাব্বিরের অভাব পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বাকিরা। প্রথম ম্যাচে যে অ্যাফোর্ট দিয়ে খেলেছে, দ্বিতীয় ম্যাচে তা দিতে পারেনি। ভারতের ট্যাকটিস, টেকনিক্যাল অভিজ্ঞতায় আমরা পিছিয়ে রয়েছি একথা সত্যি। তবে আমরা যে একেবারে নিম্নমুখী একথা বলা যাবে না। আমাদের খেলোয়াড়দের যথেষ্ট ফিটনেস ছিল কিন্তু দিনটি আমাদের হয়নি। তারা সিরিজ জিতেছে সত্যি। তবে অতটা সহজ হয়নি। দু’ ম্যাচেই আমরাই তাদের জালে প্রথম বল পাঠিয়েছি। গোল দেয়ার পর তা ধরে রাখতে আমাদের আরো কাজ করতে হবে। ভারতের প্রতিটি খেলোয়াড়েরই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে। আরো একটি ম্যাচ বাকি রয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করবো। বাংলাদেশের অতীত লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ অনেক অনেক গোল হজম করেছে। সে হিসেবে নতুন প্রজন্ম আশা অনুযায়ী ভালো করছে।’
দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রথম গোলে এগিয়েছিলো বাংলাদেশই। তবে আগের ম্যাচের মতোই গোল করেই বিদ্যুৎ গতিতে গোল হজম করতে থাকে লাল সবুজ জার্সিধারীরা। তবে গোলকিপার অসীম গোপের দক্ষতার ফলে পিসি থেকে একটি গোলও করতে পারেনি ভারতীয়রা। মইনুল ইসলাম কৌশিকের পাস থেকে হাসান যুবায়ের নিলয় বাংলাদেশ শিবিরে উল্লাস বয়ে আনেন (১-০)। দু’মিনিট পরেই হারজিত সিংয়ের কোনাকুনি হিটে পরাস্ত হন অসীম গোপ (১-১)। এরপর ভারতের যুবরাজ প্লেসিং পুশে, সহ অধিনায়ক উথাপ্পা কানেক্টে, জটলা থেকে দেবেন্দ্রর সুনীল এবং সর্বশেষ ইউসুফ আফ্ফান গোল করে ৫-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন হকির নতুন নিয়মটি ঘোষণা করেছে গত মার্চে। ৭০ মিনিটের পরিবর্তে খেলা হবে ৬০ মিনিট। তন্মধ্যে প্রতি ১৫ মিনিট পরপর হবে বিরতি। এশিয়ান গেমসের আগে নতুন নিয়মের এই খেলায় কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা নিতে পারছে বাংলাদেশ।