ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

‘সাকিব একা খেললেই তো ম্যাচ জেতা যায়’

প্রকাশিত: ০৪:৩০ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০১৬

তারকায় ঠাসা। কে নেই? কুমারা সাঙ্গাকারা? মাহেলা জয়াবর্ধনে, ডোয়াইন ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেল- কত নাম। এর মধ্যে সাঙ্গাকারা আর মাহেলা তো রীতিমতো জীবন্ত কিংবদন্তি। সন্দেহাতীতভাবেই শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটের সব সময়ের অন্যতম সেরা ও সফল দুই ব্যাটসম্যান।

টেস্ট-ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই যারা শ্রীলঙ্কার সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী। দুই ফরম্যাটেই লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান সাঙ্গাকারার (টেস্টে ১২৪০০, ওয়ানডেতে ১৩৯৭৫)। আর দুই ফরম্যাটেই দ্বিতীয় সর্বাধিক রান মাহেলা জয়াবর্ধনের (টেস্টে ১১৮১৪ এবং ওয়ানডেতে ১৩৩৬৪)।

আর ব্রাভো ও আন্দ্রে রাসেল ক্যারিবিয় ক্রিকেট ছাপিয়ে সীমিত ওভারের ফরম্যাটে নিজেদের অন্যতম চৌকস ক্রিকেটার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ম্যাচ-উইনারদের তালিকায় বেশ ওপরের দিকেই আছে ওই দুই ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটারের নাম।

এমন একঝাঁক তারার মাঝেও আছেন আরেক বড় তারা; সাকিব আল হাসান। গত কয়েক বছর একটানা টেস্ট-ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি তিন ফারম্যাটেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের খেতাবটা ছিল তার একার অধীনে। শুধু সেরা অলরাউন্ডারের তকমা গায়ে মাখাই নয়, ম্যাচ-নির্ধারণী ভূমিকায় সাকিবকেই দেখা গেছে বেশি। এর পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অন্যতম কার্যকর ও সফল পারফরমারের নামও সাকিব।

বিশ্বের সবচেয়ে সাড়া জাগানো টি-টোয়েন্টি আসর আইপিএলে তার পারফরম্যান্স বরাবরই নজরকাড়া। সাকিবের কার্যকর পারফরম্যান্স কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুইবারের শিরোপা জয়ে সাকিব রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স দিয়ে টি-টোয়েন্টি পারফরমার হিসেবে সাকিব এখন অনেক বড় তারকা।

বাংলাদেশের একমাত্র পারফরমার যিনি ভারতের আইপিএল, অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল, শ্রীলঙ্কার এসএলপিএল এবং পাকিস্তানের পিসিএলসহ বিশ্বের সব বড় বড় টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। ওইসব আসরে তার চাহিদাও প্রচুর। অনেক চড়া মূল্যে সাকিবকে পেতে উৎসাহী হচ্ছে দলগুলো।

স্থানীয় পারফরমারদের মধ্যে বিপিএলেও সবচেয়ে দামি পারফরমার সাকিব। কিন্তু কেন যেন সেভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যে সাকিব একা ম্যাচ জেতাতে যারপরনাই পারঙ্গম, এবার তার ভিন্ন রূপ। এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচ হয়ে গেছে। অথচ সাকিব ম্যাচসেরা হননি একবারও।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বিপিএলের প্রথম দুই আসরের সেরা পারফরমারও সাকিব। শুধু বিপিএলের কথা বলা কেন, বিপিএলের চেয়ে অনেক বড় বড় তারকা যে দুই আসরে খেলেন, সেই আইপিএল ও বিগ ব্যাশেও সাত ম্যাচে সাকিবকে এতটা নিষ্প্রভ কখনো দেখা যায়নি।

ওই দুই আসরে টানা সাত ম্যাচে সাকিব ফিফটি হাঁকাতে পারেননি, এক ম্যাচে অন্তত চার উইকেট দখল করেননি আর একবারও ম্যাচসেরা হননি- এমন রেকর্ড নেই বললেই চলে। কিন্তু এবার সেই অনুজ্জ্বল সাকিবের দেখাই মিলছে। এখন পর্যন্ত একবার ৫০ দূরে থাক, ৩০-এর ঘরেও যাওয়া সম্ভব হয়নি। সর্বোচ্চ ২৪। মোট রান মোটে ৯৩। গড় ১৫.০৫!

বল হাতেও ম্যাচ-উইনার সাকিবের দেখা মেলেনি এখনো। সাত ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র ৫ উইকেট। সেরা ২/১৭। কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন সেই সাকিবের দেখা পেতে উন্মুখ। ঢাকা ডায়নামাইটস প্রশিক্ষকের স্থির বিশ্বাস ও বদ্ধমূল ধারণা, সাকিব ব্যাট ও বল হাতে জ্বলে উঠলে আর চিন্তা নেই। সাকিব একাই পারে দল জেতাতে।

আজ বুধবার বিকেলে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে খালেদ মাহমুদ সুজনের সোজা-সাপটা উচ্চারণ, ‘সাকিব একা খেললেই তো ম্যাচ জেতা যায়। আমি বিশ্বাস করি, সাকিব তার মানে পৌঁছতে পারলে এবং নিজের স্বাভাবিক ছন্দে পারফর্ম করতে পারলে আর কোনো চিন্তা থাকার কথা না। সে একাই যে কোনো দলকে হারাতে পারে।’

ঢাকা কোচের মূল্যায়ন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খুব বেশি পারফরমারের দরকার নেই। হাতেগোনা ক`জন ব্যাট ও বল হাতে জ্বলে উঠলেই হয়ে যায়। ব্যাটে দুই থেকে তিনজন রান করলেই চলে। আর বোলিংয়ে জন-দুয়েক কার্যকর স্পেল উপহার দিতে পারলেই ব্যাস। আর কিছু লাগে না।’

সাকিবের এখনো জ্বলে উঠতে না পারা নিয়ে অবশ্য হতাশ নন খালেদ মাহমুদ। কোনো অসন্তুষ্টিও নেই। তার ব্যাখ্যা, ‘এটা সত্যি যে সাকিবকে সাকিবের মতো করে পাইনি এখনো। কিন্তু আমি জানি এবং বিশ্বাসও করি, সাকিব ঠিক নিজেকে খুঁজে পাবে। সে চেষ্টাও করছে।’

জাতীয় দলের ম্যানেজার হিসেবে সাকিবকে সারা বছর খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা আছে। সে আলোকে খালেদ মামুদ সুজন বলেন, ‘সাকিব প্র্যাকটিসে খুব সিরিয়াস। প্রচুর কষ্ট করছে। ঘাম ঝরাচ্ছে। আমি তাকে জাতীয় দলের অনুশীলনেও এমন কঠোর পরিশ্রম করতে খুব কম দেখেছি। আমার বিশ্বাস, এ কঠোর পরিশ্রম ও নিবিড় অনুশীলনের ইতিবাচক ফল সে পাবে।’

ঢাকা কোচের শেষ কথা, ‘আমার স্থির বিশ্বাস, সাকিব ঠিক সময়মতো জ্বলে উঠবে। আর তার ব্যাট কথা বললে প্রতিপক্ষ বোলিং কমজোরি হবে। আমাদের রানের চাকা হবে সচল। আর সাকিব বল হাতে জ্বলে ওঠার অর্থ ম্যাচ উইনিং স্পেল।
আমি তারই অপেক্ষায়।’

শিশির তার বোলিং কার্যকারিতার পথে বাধা হয়ে দেখা দিচ্ছে। সন্ধ্যার পর প্রচুর শিশির পড়ছে। বল গ্রিপিংয়ে সমস্যা হচ্ছে। এতে করে বল ঘোরানোও যাচ্ছে না তেমন। সন্ধ্যার ম্যাচের দ্বিতীয় সেশনে বল হাতে তেমন কার্যকর হওয়া তাই সত্যিই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে দিনের ম্যাচে শিশিরের বাধা নেই। ঢাকা কোচ খানিক আশ্বস্ত হতেই পারেন। ঢাকায় আগামী পরশু ২৫ নভেম্বর থেকে যে শেষ পর্ব শুরু হবে, সেখানে ঢাকার শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিই দুপুরে।

এআরবি/এনইউ/এনএইচ/বিএ

আরও পড়ুন